হিন্দুদের ছিল সতীদাহ প্রথা আর আমাদের আছে হৃদয়দাহ প্রথা।

লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০১:০৬:২৫ রাত

হিন্দুদের ছিল সতীদাহ প্রথা আর আমাদের মাঝে আছে হৃদয়দাহ প্রথা।



আমার মনের আকাশে আজ সারা বেলা শরতের আকাশে মত খন্ড খন্ড মেঘ আর সুর্যের এই বৃষ্টি এই রোদ্রের কি চমৎকার খেলা চলছিল। য়াবার কখনো দেখি অতীত স্মৃতিরা প্রবল ধমকা হাওয়ার বেগে এসে লোনা পানিতে প্লাবিত করছে আমার দুই গাল।

তারই মাঝে এক প্রতিবেশি ভাবী এসে জানালেন, "পারভীন আপা,মিনা ভাবী স্বামীর ৩ দিনের মেজবানী খাওয়ায়ে বাচ্ছাদের নিয়ে বাসায় এসেছেন এখন।চলেন গিয়ে একটু শান্তনা দেন।"

হায় আল্লাহ ! আমি তো আজকে অনেকের কাছে শান্তনার বানী আসা করেছিলাম।কিন্তু আমাকেই আরেক বোনকে শান্তনার বানী শুনাতে হবে তা তো ভাবিনি।এটাই কি ঈমানের পরীক্ষা। প্রভু তোমার কি সুন্দর লীলাখেলা , বুঝা বড় দায় । তোমার এই দুনিয়ার রঙ্গমঞ্চে কেউ হাসে আর কেউ কান্দে ।কোথায় রাত আবার কারো দিন। কোথায় শীত আবার কোথায় গরম।তুমি সর্বশক্তিমান।

বাবা হারা মেয়েদের কেমন কষ্ট হয় সেই অভিজ্ঞতার অভাবে ছিল আমার।কারন আমি দুই বছর বয়স থেকে বাবাই দেখিনি। প্রাবাসে স্বামী প্রায় ৫ বছর ছিল তাই স্বামীর ভালবাসার বিরহ পেইন কি কঠিন তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি।আবার মা ও বড় বোন অল্প বয়সে বিধবা হয়ে কিভাবে কাতরায়ে কাতরায়ে স্বামীর স্মৃতির ভেলায় ভেসে ভেসে মৃত্যুর সাগরে গিয়ে পৌছল ।ভালবাসার বিরহ পেইন মৃত্যু যন্ত্রনা থেকেও কঠিন।

আমাকে দেখেই মিনা আপা বললেন , পারভীন আপা , আপনার ভাইকে রেখে আসলাম গ্রামে।আর আমি একা চলে আসলাম।"

স্বামীর জন্য সুসজ্জিত মিনা আপার কথা ও গয়না ছাড়া বিধবার সাজে পোষাক দেখে দুই নয়ন বর্ষার বর্ষন অবিরাম ঝরছে।শান্তনার বানী খুজে পাচ্ছিলাম না।তাও সবরের আয়াত গুলো ও হাদিস গুলো শুনালাম।তাতে কি খুশি। বিধবার মর্যাদার কথা শুনালাম।আলহামদুলিল্লাহ।

মেয়েরা ামাকে প্রশ্ন করল , তারা তাঁদের মাকে কত দিন এই বিধবার সাজে সজ্জিত দেখতে হবে? কতদিন পরে তাঁদের মা এই প্রথা থেকে মুক্তি পাবে?

তখন বললাম, মামনিরা আগে ছিল হিন্দুদের সতীদাহ প্রথা আর আমাদের মাঝে আছে হৃদয়দাহ প্রথা। ।আর আমরা কোরান সুন্নাহ না জানা কিছু মুসলমান নামধারীরা তাদের থেকে ক্রয় করে নিয়েছি হৃদয়দাহ প্রথা। তোমাদের একই ফ্লোরে হিন্দু সেক্রেটারী মারা গেলো আর সেই বৌদি অলংকার খুলে সাদা কাপড় পরে নিরামিষ ভুজী হয়ে জীর্ন্ সিন্ন ভাবে জীবন যাপন করে শোকের মাতাম করে যাচ্ছে।মারা যাওয়া বছর বিয়ে,ব্যবসা বা কোন শুভ কাজ করলে অকল্যান হবে।

আমরা মুসলমানরাও কি সেই একই কাজ করে যাচ্ছি না। আমরা কি তাদের থেকে আলাদা হতে পেরেছি।কেন আমাদের মাঝে এই বিদাআত এর প্রচার আমরা করে যাচ্ছি। আমরা মুসলিম জাতি আমাদের সব কিছু হয় আল্লাহর হুকুমে।সব কল্যান অকল্যান আমাদের প্রভূর ক্ষমতাধীন। সুখে শুকরিয়ায় আমাদের কল্যান আর বিপদে সবরের মাধ্যমেও আমাদের কল্যান।আমরা কেন বিদাআতের মাধ্যমে আমাদের প্রাকাশ্য দুশমনকে আমাদের মাঝে ডুকার রাস্তা করে দেব।

কেন বার বার আমাকে হতাশা নিরাশার দুদোল্যমানে আমার আমল আমি বরবাদ করে ফেলব।আমার আহত হৃদয়ে সবরের মলম না দিয়ে বার বার আয়নায় নিজেকে বিধবার সাজে দেখে আমাকে আমি আস্তে আস্তে নিশেষ করে দিব।কেন বার বার ভাবনার জাল বুনব যে ,সবার সাথে চলার উপযুক্ত নয় আমি ,কাকে দেখাব সুন্দর, আমার এই জীবনের আর কি দাম আছে? আমি ইসলামের গন্ডির ভিতরে থেকে আমি সব কিছু করতে পারব।আমার আল্লাহ সুন্দর তাই আমি সুন্দর ভাবেই থাকব। হালাল হারাম নিয়মের মাঝেই থাকব ।

কোরানের আদেশ পালন করাটা অনেকটা হার্ডের অপারেসানের মত।পালন করতে প্রথমে কষ্ট হলেও পরে দেখা যায় হার্ডের মুনাফেকী ফাসেকী রোগ দূর হয়।আর বিদাআত হল পেইন কিলারের মত সাময়িক শান্তি মনে হলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়াবহ। এর ফলে শুধু দুনিয়া নয় আখিরাতেও এর পরিনাম স্বরূপ জাহান্নামের শস্তি ভোগ করতে হয়।

ইসলাম শান্তির ধর্ম।আমরা যারা এই ধর্মকে ভ্রান্তির বেড়াজালে জড়িয়ে কুলোষীত করছি।তাদের জন্য ইসলামের কোন সু সংবাদ নেই।আমাদের জন্য আল্লাহ সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ সহজ করে দিন।আল্লাহ আমাদের মা বাবা , আত্নীয়স্বজন ও মিনারা আপার স্বামী কে সহ সকল বিদেহি আত্নার মাগফেরাতের মাধ্যমে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন ও মিনারা আপার পরিবার কে সবরের মাধ্যমে ধৈর্য্য ধারন করার তাওফিক দান করুন।আমিন।

বিষয়: বিবিধ

২৫৭১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

345948
১৭ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০১:২৪
অবাক মুসাফীর লিখেছেন : কম জানা মানুষকে বোঝানো যায়, কিন্তু যারা এসব কুসংস্কারকেই শরীয়া ভেবে পালন করে তাদের কে বোঝাতে গেলে বেয়াদব, মৌলবী (ব্‌যাঙ্গার্থে) ট্‌যাগ পেতে হয়... Sad
১৭ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০১:৩৪
287085
সত্যলিখন লিখেছেন :
১৭ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০১:৪১
287086
অবাক মুসাফীর লিখেছেন : একমত...! তবে শেয়ার করতে পারবো না...
১৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৪:০১
287152
সত্যলিখন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ || স্বাগতম ||
345951
১৭ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০২:০৫
শেখের পোলা লিখেছেন : কোরানের আদেশ পালন করাটা অনেকটা হার্ডের অপারেসানের মত।পালন করতে প্রথমে কষ্ট হলেও পরে দেখা যায় হার্ডের মুনাফেকী ফাসেকী রোগ দূর হয়।আর বিদাআত হল পেইন কিলারের মত সাময়িক শান্তি মনে হলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়াবহ।
দারুন উক্তি৷ ধন্যবাদ আপা৷
১৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৪:০২
287153
সত্যলিখন লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ || স্বাগতম ||
345952
১৭ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০২:০৮
১৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৪:০২
287154
সত্যলিখন লিখেছেন : ইনশাল্লাহ দেখব।
345961
১৭ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৪:২০
কাহাফ লিখেছেন :
স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রী কে একটু অন্য ভাবে থাকতে হয় ইসলামের বিধান হিসেবেই! তবে তা হিন্দুদের মত নয় কখনই!
শোক তথা ইদ্দত পালন হিসেবে সামান্য পরিবর্তিত রুপে চলা কে বেদাতের মোড়কে অনেক কঠিন করে নিয়েছে না জানা কিছু মানুষ,এর জন্যে ইসলাম কেই হিন্দুয়ানীর সাথে তুলনা করা আপনার লেখার সাথে মানানসই মনে হয়নি শ্রদ্ধেয়াজ্বী!
আমাদের মত সাধারণরা ভূল অর্থ গ্রহন করতে পারে এতে!
الله يحفظنا من كل بدعة و وفقنا ان نمشى على الطريقة الاسلامية كاملا...أمين ثم أمين।
১৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৫
287155
সত্যলিখন লিখেছেন : আমি ভুল সেই টা ভেবে বলিনি ।আমি তাদের কিছু অপসংস্কৃতি আমাদের মাঝে আছে সেটাই বুঝিয়েছি ।তাও সাবধানতার ইঙ্গিতের জন্য অনেক ধন্যবাদ || স্বাগতম ||
345990
১৭ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ১১:৩৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমরা শোক কে যে প্রদর্শনি করতে পছন্দ করি এখন। বিধবার বিবাহ ও আমাদের সমাজে হিন্দুদের মতই অসন্মান এর বিষয় হয়ে গেছে!
১৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৭
287156
সত্যলিখন লিখেছেন : সহমত ।অনেক ধন্যবাদ |

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File