হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেছেন, ইসলামের বিরুদ্ধে বহুমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের প্রসার ঘটানো হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম যেন ঈমান হারা হয়ে যায় তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কোনো জাতিকে পরাজিত করতে হলে প্রথমে সেই জাতির শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়। আজ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে নৈতিক অবক্ষয়ের সয়লাব চলছে।
বুধবার (২২ মে) বাদ জোহর জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলুমে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের এক জরুরি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, প্রশাসনের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা একটি অশুভ চক্র হেফাজতের নেতৃবৃন্দকে হয়রানি করার জন্য ২০১৩ ও ২০২১ সালে দায়ের করা নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, বি বাড়ীয়া ও চট্টগ্রামের অসংখ্য মামলার চার্জশিট জমা দিয়ে মিথ্যা বিচারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আর যারা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, তাদের প্রত্যেককেই মাসের বেশিরভাগ সময় এক আদালত থেকে আরেক আদালতে হাজিরা দিয়ে যেতে হচ্ছে। এটা অমানবিক হয়রানি। যার কারণে আমরা উদ্বিগ্ন। নায়েবে রাসুল আলেম ওলামাদের হয়রানির পরিণাম কারো জন্য শুভ হবেনা। অবিলম্বে এসব বন্ধ করুন।
হেফাজত মহাসচিব আরো বলেন, ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসনের কারণে ফিলিস্তিনের গাজ্জা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নারী-শিশুসহ প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটছে। মানবিক সংকট ও অনাহার-দুর্ভিক্ষ চলছেই। আমরা আশা করি, ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসানের লক্ষ্যে ওআইসিসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ’র নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন।
আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি পঞ্চগড়ে মিথ্যা মামলায় কোর্টে হাজিরা দিতে আসা কয়েকজন নিরীহ মুসলমানকে গ্রেফতার করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গতবছর ২০২৩ পঞ্চগড়ে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধ করার দাবিতে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নবী প্রেমিক জনতার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট একাধিক মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলার চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। আদালতে হাজির হলেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। আরো অনেকের নামে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে। এসব ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি ফরিদপুরের মধুখালীতে শহীদ দুই হাফেজের হত্যাকাণ্ডে জড়িত চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে এখনো গ্রেপ্তার না করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভায় পাঠ্যবইয়ে বিতর্কিত বিষয় সংশোধন করার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করা, আগামী ২ জুলাই নারায়ণগঞ্জ শহরে শিক্ষা সেমিনার এবং বিবাড়িয়া, ময়মনসিংহ ও গাজীপুরে আলোচনা সভা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা আবদুল কাইয়ুম সোবহানী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, অর্থ সম্পাদক মুফতী মুনির হুসাইন কাসেমী, সহ অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, মুফতি কামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা রাশেদ বিন নুর, মাওলানা এনামুল হক মুসা, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, মাওলানা মোহাম্মদ হারুন প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন