ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনস নামের একটি ফ্ল্যাট ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। বিলাসবহুল ওই ফ্ল্যাটেই খুন হন এমপি আনার। ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশের পরই আনারের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ১৩ মে সঞ্জীবা গার্ডেনসে উঠেছিলেন এমপি আনার। তার সঙ্গে একজন নারীসহ ৪ জন ছিলেন। এরপর থেকে আনোয়ারুল আজিম আনার ভবনের বাইরে না বেরোলেও বাকিরা বেশ কয়েকবার বের হন। সিসি ক্যামেরার এ সংক্রান্ত ফুটেজ জব্দ করে বাংলাদেশ পুলিশকে দিয়েছে ভারতের পুলিশ। একাধিক সূত্রের খবর, ওই ফ্ল্যাট ছিল দু-দেশের স্বর্ণ চোরাকারবারিদের আখড়া। জানা গেছে, সঞ্জীবা গার্ডেনসের আশপাশে নিম্নবিত্তদের বসবাস। তার মাঝেই অবস্থিত অভিজাত আবাসিক ভবনটি। তবে এলাকাটির উন্নয়নকাজ চলছে এবং সেখানকার আবাসন প্রকল্পসমূহে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
কলকাতার একটি সূত্রে জানা গেছে, নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটটি সন্দীপ রায় নামে এক ব্যক্তির। তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরে কাজ করেন। বি ইউ ৫৬ ঠিকানার ওই ফ্ল্যাটটি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি নাগরিক ভাড়া নিয়েছিলেন। তার নাম আক্তারুজ্জামান শাহীন ওরফে আখতারুদ্দিন। সূত্র জানায়, ফ্ল্যাটটি তৈরিতে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। এক বছর আগে এই ফ্ল্যাটটি আক্তারুজ্জামান শাহীন ভাড়া নিয়েছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল বুধবার ভোরে নিউটাউন থানার পুলিশ সঞ্জীবা গার্ডেনসে হাজির হয়। জানা গেছে, ওই ফ্ল্যাটের দেয়ালে মিলেছে রক্তের দাগ; উদ্ধার করা হয়েছে এমপি আজিমের রক্তমাখা কাপড়। এরপর ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার বিশেষজ্ঞরা সেখানে যান ফিঙ্গার প্রিন্ট ও রক্তের দাগ সংগ্রহে। এ সময় ফ্ল্যাটটি ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়।
এদিকে ওই ফ্ল্যাটেরই একটি ঘর নিয়েও তৈরি হয়েছে রহস্য। ঘরটির দরজায় রয়েছে সেন্সর লক, যা আঙুলের ছাপের সাহায্যে খুলতে হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে লক করা ফ্ল্যাটের ওই ঘরটি খুলেছেন কলকাতার তদন্তকারী সংস্থার সদস্যরা। তবে ওই ঘর থেকে কী পাওয়া গেছে, তা জানা যায়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন