সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যাওয়া কতটুকু সঠিক?
লিখেছেন লিখেছেন তৌহিদুল ইসলাম তানিন ০৬ অক্টোবর, ২০১৩, ০২:০২:৫১ দুপুর
আজকে আমাদের এই সমাজে, আমরা দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোকে আদবের অংশ হিসেবে বিবেচনা করি। আর, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-আদালত সহ প্রায় সব যায়গায়ই এর প্রচলন অহরহ দেখতে পাই এবং এমন না করাটাকে বেয়াদবি হিসেবে গন্য করি। অথচ, আমাদের অনেকের কাছেই একটি ব্যাপার স্পষ্ট নয় ! তা হলো আমরা অনেকেই জানিনা যে, কোন বিশিষ্ট ব্যাক্তি বা ব্যাক্তিবর্গের সম্মানার্থে দাঁড়ানো কত বড় গুনাহ ! আর, যে ব্যাক্তি অন্যদের কাছ থেকে সম্মান প্রদর্শনের/গ্রহনের প্রতীক হিসেবে এমনটা আশা করবেন তিনি আরো বড় গুনাহ করবেন। অন্যদিকে, হক্কানী ওলামায়ে কিরামের নিকট এই দাঁড়ানো বা ক্বিয়াম করাটা বিদ’আত ও নাজায়িয। এমনটা না করার ব্যাপারে, সহীহ হাদীস দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণ ও রয়েছে।
عن انس رض قال لم يكن شخص احب اليهم من رسول لله صلي الله عليه وسلم وكانوا اذا رأوه لم يقوموا لما يعلمون من كراهيته لذالك অর্থ: হযরত আনাস রাযিঃ হতে বর্ণিত সাহাবায়ে কিরামের নিকট রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে প্রিয় আর কেউ ছিল না। এতদসত্বেও তারা যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখতেন, দাঁড়িয়ে যেতেন না। কেননা তারা জানতেন যে তিনি দাঁড়িয়ে সম্মান করাকে অপছন্দ করেন। (তিরমীযী, মেশকাত শরীফ : পৃষ্ঠা-৪০৩)
অন্য হাদীসে আছে, হযরত আবু উমামা রাযিঃ হতে বর্ণিত, একবার রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাঠিতে ভর দিয়ে বের হন, আমরা দাঁড়িয়ে গেলাম। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিষেধ করে বললেন, لاتقوموا كما يقوم الاعاجم يعظم بعضها بعضا অর্থ: “অনারবরা একে অপরকে দাঁড়িয়ে সম্মান করে, তোমরা তাদের মত দাঁড়াবে না।” (আবু দাউদ, মেশকাত শরীফ : পৃষ্ঠা-৪০৩)
আরেকটি হাদীসে বর্ণিত আছে, রসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন: من سره ان يتمثل له الرجل قياما فليتبوأ مقعده من النار অর্থ: যে ব্যক্তি তার সম্মানার্থে লোকদের দাঁড়িয়ে যাওয়াকে পছন্দ করে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল। (আবু দাউদ, মেশকাত শরীফ : পৃষ্ঠা-৪০৩)
উল্লেখিত হাদীস দ্বারা বুঝা গেল, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে সম্মান করাকে নিষেধ করতেন, কেউ দাঁড়ালে অপছন্দ করতেন এবং এভাবে যে ব্যক্তি নিজেকে দাঁড়িয়ে সম্মান করাতে আনন্দ বোধ করে তার জন্য জাহান্নামের ধমকি শুনিয়েছেন। এ সমস্ত হাদীসের মুকাবেলায় বিদ’আতীদের খোড়া যুক্তি ও প্রমাণ বাতিল হওয়া সকলের নিকট স্পষ্ট।
আল্লাহ্ সুব'হালাল্লাহু তা'আল্লা আমাদেরকে সকল প্রকার গোমরাহী থেকে হেফাযত করুন। আমীন[ ফেসবুকের বড় স্ট্যাটাসগুলো ও নোটসমূহ (ইসলামিক কবিতা ও অন্যান্য) আমার ব্যাক্তিগত ব্লগ http://www.tanin87.blog.com এ ইনশাআল্লাহ্ যেকোন সময় পাবেন ]
বিষয়: বিবিধ
১৩১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন