শিশু সন্তানের জন্য সালাত
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৯:৩৫:৪০ সকাল
আসসালামু’আলাইকুম।
তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম
মু‘আয বিন আব্দুল্লাহ বিন হাবীব আল-জুহানী সূত্রে হিশাম বিন সা‘দ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
‘আমরা হিশামের কাছে গেলাম। তিনি তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, শিশু কখন সালাত আদায় করবে? তিনি বললেন, আমাদের এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলতেন তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘যখন সে তার ডানকে বাম থেকে আলাদা করতে পারবে, তখন তাকে সালাতের নির্দেশ দাও’।’ (আবূ দাউদ : ৪৯৭; বাইহাকী, সুনান আল-কুবরা : ৫২৯৬)
‘অর্থাৎ শিশু যখন ডান ও বামের মাঝে পার্থক্য করতে পারবে। আর সাধারণত এ যোগ্যতা সপ্তম বছরে পৌঁছার পরই হয়।’ (আউনুল মা‘বুদ : ২/১৬৫)
ইবন আবিদ্দুনইয়া রহ. আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, তিনি শিশুদের সালাত শেখাতেন যখন তারা ডান থেকে বাম শিখত। জুনদুব বিন আবী ছাবেত থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (সাহাবীদের) শিশুরা যখন বিশ পর্যন্ত গুনতে শিখতো তখনই তাঁরা তাকে সালাত শিক্ষা দিতেন। (আল-ইয়াল : ১/৪৭৩।)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন
‘তোমাদের সন্তানদের সাত বছর হলে তাদের সালাতের নির্দেশ দাও, তাদের বয়স দশ বছর হলে এ জন্য তাদের প্রহার করো এবং তাদের পরস্পরে বিছানা পৃথক করে দাও।’ (আবূ দাউদ : ৪৯৫; মুসনাদ আহমদ : ৬৬৮৯)
বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে আরো বেশী সচেতনভাবে সন্তানদের সালাতের মর্ম বুঝানোর চেষ্টা করা দরকার। প্রযুক্তির ছোয়া দিয়ে সন্তানের মস্তিষ্ক আগেই যেভাবে হ্যাজি করে ফেলছেন পিতা মাতারা, তাহলে এই সন্তান বড় হয়ে কিভাবে কুর’আনের সুমধুর সুর আর আজানের ডাক শুনে পুলকিত হবে?
এর জন্যে প্রয়োজন পিতা, ছেলে সন্তানকে নিয়ে মসজিদে গমন এবং সেই সময় মা, মেয়ে সন্তানকে নিয়ে সালাতে দাঁড়িয়ে যাওয়া, এতে নিয়মানুবর্তিতাও শেখানো হয়ে যায় সন্তানকে। মূলত একটি পরিবারের পিতা মাতা যদি প্র্যাকটিসিং মুসলিম হয় তাহলে সেই পরিবারের সন্তানকে আলাদা করে শেখাতে হয় না। আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুন।
কথা ও লেখায় আমরা যত ইসলামের ভাব প্রকাশ করি বাস্তবে আমল করার ক্ষেত্রে আসলে আমরা কতটুকু যত্নশীল তা প্রশ্ন রয়ে যায়? আর এটা একটি বড় কারন বর্তমান অবস্থা্র। মুসলিম যখন ভোগবিলাসে মত্ত হয়ে আল্লাহর আনুগত্য থেকে দূরে গিয়েছে তখনি জালিম দিয়ে আপমানিত ও অত্যাচারিত হয়েছে। আল্লাহ আমাদের সন্তানদের এই অবস্থা থেকে বের করে শক্তিশালী ঈমানদার হওয়ার সুযোগ করে দিন।
বিষয়: বিবিধ
৯৪১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইমাম ইবনুল কাইয়েম আরো বলেন, ‘ যে ব্যক্তি তার সন্তানকে উপকারী ইলম শেখানোর ব্যাপারে উদাসীনতা দেখাল, তাকে সে এমনিতেই ছেড়ে দিল, তার প্রতি সে অবিচার করল। আর অধিকাংশ ছেলে-মেয়ের নষ্ট হওয়ার কারণ পিতার অবহেলা, উদাসীনতা, মাতা-পিতা কর্তৃক তাদেরকে দীনের আবশ্যক বিষয়সমূহ, সুন্নতকর্মসমূহ সম্পর্কে মূর্খ রাখা। আর এভাবেই তারা ছোট কালেই বাচ্চাদেরকে হারিয়ে ফেলে, অতঃপর বড় হয়ে , না পারে তারা নিজেদেরও কোনো উপকার করতে, আর না আসে, মাতা-পিতার কোনো কল্যাণে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন