বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগই ভবিষ্যতের পথ দেখাবে বলে আশাবাদ জানিয়েছিলেন দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভিকে দেওয়া সরাসরি সাক্ষাৎকারে তিনি এ মত প্রকাশ করেছিলেন। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করলেও নির্বাচনে তার প্রতিফলন ঘটেনি বলে বরাবরই অভিযোগ বিএনপির। ফলে মির্জা ফখরুলের আশাবাদ পরবর্তী বছরগুলোতে রূপ নেয় অভিযোগে।
কখনও ‘আওয়ামী লীগকে দেশ ও জাতির জন্য বড় সমস্যা’; ‘বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে’, আবারও কখনও ‘প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী একটি অপশক্তি’ হিসেবেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। বিএনপি কেবল নয়, প্রায় বেশিরভাগ দল ও দলের সিনিয়র থেকে মধ্যম সারির নেতারা তাদের বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উদ্দেশে এমন অভিযোগ করছেন।
তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন, তার পূর্ববর্তী বাঙালির ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানসহ গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনে নেতৃত্বাদাকারী ভূমিকায় থাকলেও ভোটাধিকার প্রশ্নে দলটি তাদের পুরনো ঐতিহ্যকে পাশ কাটিয়ে গেছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুক্তিসংগ্রামের আগে শত বাধা-বিপত্তির মুখেও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করেছে আওয়ামী লীগ (তৎকালীন পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ)।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনকে ‘রাতের ভোট এবং চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ডামি ভোট’ হিসেবে আখ্যা দেয় বিএনপি। একাদশে অংশগ্রহণ করলেও দ্বাদশ সংসদের নির্বাচন বয়কট করে আন্দোলনের মাঠে থাকে দলটি। বয়কটের পালা চলতে থাকে সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনেও যায়নি বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল।
বিএনপির এসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অনুকূলে থাকে দেশের বেশিরভাগ বিরোধী দল। ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং নতুন কিছু নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে দলীয়ভাবে সরে আসে আওয়ামী লীগও। ১৪ দলীয় জোটের মাত্র কয়েকটি দল দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা মোটা দাগে আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের সময়কালকে দুটি নজরে দেখতে চেয়েছেন। একটি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত, অপরটি তারপরের সময়টি।
তবে আওয়ামী লীগের শুভানুধ্যায়ী দলগুলোর নেতারা ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ তৃতীয় দফায় ক্ষমতারোহণের পর দেশের উন্নতি, ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধীদের বিচারসহ নানামাত্রিক সাফল্য অর্জনের বিষয়টিকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন।
‘দেশের পুরনো দল হলেও আওয়ামী লীগের কাছে কোনও প্রত্যাশা নেই’ বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় এই সভাপতি মনে করেন, ‘স্বাধীনতার আগের আর পরের আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য। স্বাধীনতার আগের জায়গায় আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে স্বাধীনতা আন্দোলন। তারা এই আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জনকে বিসজর্ন দিয়েছে।’
মনিরুল হক চৌধুরীর মতো ছাত্রলীগ থেকে বেশ কয়েকজন শীর্ষনেতা বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, সাবেক প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান (ছাত্রলীগ সভাপতি), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (ছাত্রলীগ সভাপতি), স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মহসীন হল ছাত্রলীগ সভাপতি), উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান (ছাত্রলীগ সভাপতি), সাবেক প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল (ছাত্রলীগ শীর্ষ নেতা), উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব (ছাত্রলীগ সভাপতি)।
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করা মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা, যিনি দেশের মানুষের অধিকারের সংগ্রাম করে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন— সেই শেখ মুজিবুর রহমানও যা অনুসরণ করতেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ তা করে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আওয়ামী লীগ মানুষের আশা পূরণ করতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে কিন্তু মানুষের মুক্তির যে প্রশ্নটি ছিল— সেই অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক মুক্তি আসেনি।’
বিএনপির সিনিয়র নেতা মনিরুল হক চৌধুরীর পর্যবেক্ষণ, ‘আওয়ামী লীগ এখন সেই অবস্থানে নেই। আওয়ামী লীগ তো দেশ চালায় বলে মনে করি না। তাদের কাছে প্রত্যাশার কোনও কারণ নাই।’
আওয়ামী লীগের মতো দেশের পুরনো রাজনৈতিক দল সিপিবি। ৭৬ বর্ষী এই দলটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স মনে করেন, আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরপূর্তি হচ্ছে, নিশ্চিতভাবেই সেটি বড় একটি ঘটনা। এটাকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরে এসে আমরা দেখতে চাই, যে দলটি দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে, নেতৃত্ব দিয়েছে— সে দলটির বিরুদ্ধেই এখন স্বৈরতন্ত্র, কর্তৃত্ববাদের অভিযোগ এবং প্রকৃত রাজনীতি না করে যারা কলকাঠি নাড়ে, তাদের হাতে রাজনীতিকে তুলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নিজে কীভাবে মূল্যায়ন করছে, কী রাজনীতি করবে— তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে দেশের মানুষ।’
প্রসঙ্গক্রমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা তুলে ধরেন সিপিবির অন্যতম শীর্ষনেতা রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন জাতীয়তাবাদী নেতা হয়েও তিনি মানুষের স্বপক্ষে ভূমিকা রেখেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করে তিনি সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদের কথা বলেছেন। তিনি শাসক ও শোষিতের কথাও বলেছেন। সেই দল কি এখন রাজনীতিতে বাস্তবে তা পরিণত করেছে? তারা (আওয়ামী লীগ) যদিও দাবি করে থাকে, তাহলেও তার বাস্তব ভিত্তি নেই। বঙ্গবন্ধু এও বারবার তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন— আওয়ামী লীগ যদি তাদের মূল রাজনীতি থেকে সরে যায়, তাহলে দেশের মানুষের জন্য তা কল্যাণকর হবে না।’
‘আমরা দেখতে চাই, আওয়ামী লীগ এর রি-ভিজিট করুক।’ বলে উল্লেখ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিকে রাজনীতির কাছে ফিরিয়ে আনা, ক্ষমতাসীন দল হিসেবেই কেবল নয়, ঐতিহ্যবাহী দল হিসেবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা, তা দেখতে চাই। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা মুখে বললেও আমরা দেখছি— হেফাজতের সঙ্গে আপসকামিতা দৃশ্যমান, সে বিষয়ে কী করবে। ব্যালেন্স করতে গিয়ে দেশের স্বার্থে ক্ষতিকর ভূমিকা রাখছে। গণতান্ত্রিক দল হিসেবে পরিচালনা করবে কিনা, নিজেদের কীভাবে মূল্যায়ন করছে— দেশবাসী এসব দেখার অপেক্ষায় থাকবে।’
দেশের রাজনীতিতে প্রকৃত রাজনীতিকদের অংশগ্রহণের বদলে অন্যান্য পেশাজীবীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি গত কয়েক বছর ধরে আলোচিত। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির একটি তথ্য বলছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ প্রার্থীর মূল পেশা ব্যবসায়ী। আইন ও কৃষিকাজকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন যথাক্রমে ৯ দশমিক ১৭ এবং ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ প্রার্থী। চাকরিজীবী ৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, শিক্ষক ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং রাজনীতিকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রার্থী।
যদিও এই আলোচনার বিপরীতে রাজনৈতিক মহলে আলাপ রয়েছে, মূলত রাজনীতিকরা ব্যবসার দিকে ঝুঁকে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদেরকেও বিষয়টি উদ্বুদ্ধ করেছে। পাশাপাশি নির্বাচনি রাজনীতিতে অঢেল অর্থব্যয়ের বিষয়টিও ব্যবসায়ীদেরকে রাজনীতির কাছাকাছি এনেছে।
‘শেষকথা বলতে চাই দেশকে স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি থেকে নিজেকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক ধারার সূচনা করবে আওয়ামী লীগ’ বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে, তার নেতৃত্বে প্রণীত ৪০ সদস্য বিশিষ্ট সাংগঠনিক কমিটির সর্বসম্মত গ্রহণযোগ্যতার মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যাত্রা শুরু হয়।
দিল্লির জওয়াহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামলী ঘোষ রচিত ‘আওয়ামী লীগ ১৯৪৯-১৯৭১’ শীর্ষক গ্রন্থের এই তথ্য উল্লেখ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি বলেন, ‘মওলানা ভাসানী যে প্রত্যাশা নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ষষ্ঠবারের মতো ক্ষমতাসীন হয়েও কি আওয়ামী লীগ সেই প্রত্যাশার মর্যাদা রক্ষায় সক্ষম হয়েছে? এই প্রশ্নটা আমি তাদের কাছে রাখতে চাই।’
‘মওলানা ভাসানী যে প্রত্যাশা নিয়ে তদানীন্তন পাকিস্তান ও পূর্ববঙ্গের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন, সেই দল টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় এসেও কি সেই গণতান্ত্রিক মর্যাদাকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে? বলে প্রশ্ন রাখে গানি। তিনি বলেন, ‘৭৫ বছর একটি রাজনৈতিক দলের জন্য বিরল ঘটনা। এই রকম ঐতিহ্য খুব বেশি নেই। এত দীর্ঘ পথচলা তাদের। বহু রকম প্রতিকূলতা পার করে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পেরেছে। তাদের কাছে দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল— গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করবে, স্বাধীনতার মূল চেতনাকে সমুন্নত রাখতে মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি নিশ্চিত করবে। তাদের কাছে মানুষের বেশি প্রত্যাশা ছিল।’
বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি বলেন, ‘আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সেই প্রত্যাশা (ভাসানীর রাজনৈতিক এজেন্ডা) আওয়ামী লীগের এজেন্ডাতেই নেই, সেটাই মনে করছি। তাদের সঙ্গে জনগণ আর নেই এবং এখানেই আগের আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখনকার আওয়ামী লীগের তফাত।’
আওয়ামী লীগ কি ভবিষ্যতের পথ দেখাবে?
‘আওয়ামী লীগ বড়, ঐতিহ্যবাহী ও পুরনো একটি রাজনৈতিক দল। পুরনো গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যকে সামনে রেখে ‘দে আর কামব্যাক টু দ্য দেয়ার সেন্সেস’। ২০১৮ সালে বেসরকারি টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই আশাবাদ রেখেছিলেন বিএনপির মহাসচিব।
২০২৪ সালে ৭৫ বছরপূর্তিতে এসে আওয়ামী লীগের কাছে কী সেই প্রত্যাশা এখনও আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উত্তর পাওয়া যায়নি। একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে, ৭৫ বছরে এসে আওয়ামী লীগের পৃথিবী ছোট হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তার ভাষ্য, ‘প্রশাসনের শক্তিতে দেশ চালাতে গিয়ে মানুষের ভেতর আওয়ামী লীগের ক্ষমতার শেকড় আলগা হয়ে গেছে।’
বাংলা ট্রিবিউনকে সাইফুল হক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ৭৫ বছর বয়সে এসে উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক চেহারা পুরোপুরি বিসর্জন দিয়েছে। যে আওয়ামী লীগ উঠতি ধনিক শ্রেণি, সাধারণ মানুষের দল হয়ে উঠেছিল, বাস্তবে সেই দল এখন মাফিয়া, ব্যবসায়ীকবলিত দলে পরিণত হয়েছে। এই অর্থে একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে এক ধরনের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে।’
আওয়ামী লীগকে বাদ রেখে ভোটাধিকার প্রশ্নটি কতখানি বাস্তব, এমন প্রশ্নের জবাবে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম এই নেতা বলেন, ‘ভোটাধিকার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ দল। সুতরাং, দল হিসেবে গভীর রাজনৈতিক ও নির্বাচনকেন্দ্রিক সংকটে রয়েছে তারা। কিন্তু তারাও গুরুত্বপূর্ণ পার্ট।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন