জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে কালো টাকা সাদা করার বিতর্কিত সুযোগের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের এমপি সোহরাব উদ্দিন। প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকলেও সোহরাব উদ্দিন মনে করেন, এটা অনেক বেশি। মাত্র ৫ শতাংশ কর দিয়েই এই সুযোগ রাখা উচিত।
১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার অবারিত সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে রোববার সংসদের বৈঠকে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র এমপি সোহরাব বলেন, অর্থ পাচারের কারণে ডলার সংকট হচ্ছে। অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া না হলে অর্থ পাচার বন্ধ হবে না। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। আসলে এটা ভুল তথ্য। কালো টাকা সাদা করা নয়, বৈধ অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কর ৫ শতাংশ করলেও অসুবিধা নেই। কর যত কমানো হবে, তত বেশি টাকা প্রদর্শিত হবে।
তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ কর অনেক বেশি। এই হারে অনেকে অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করবে না। ১৫ শতাংশ কর দিতে হলে অপ্রদর্শিত আয় কমাতে হবে। তাহলে অপ্রদর্শিত আয়ের প্রদর্শন বেশি হবে। রাষ্ট্রের ট্যাক্স আসবে। দেশে বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে। এ ক্ষেত্রে আরও সুযোগ দেওয়া যায়; যেমন শিল্পকারখানা করতে জমি, মেশিনারিজ কেনার ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না।
আরেক স্বতন্ত্র সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ব্যাংকিং উৎস থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে। সরকার বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে যায়। এতে শিল্প বাণিজ্যের অগ্রগতি বিঘ্নিত হয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না। তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ সালে ব্যাংকিং উৎস থেকে সরকার নিয়েছিল ১১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। চলতি অর্থবছরে ঋণ নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। এদিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া দরকার। সরকারের উচিত ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ কম নিয়ে বেসরকারি খাতে বাড়তে দেওয়া।
আওয়ামী লীগদলীয় সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, কোনো প্রকল্প নেওয়া হলেই আগে গাড়ি কেনা হয়। এ প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। জুন মাস এলে তড়িঘড়ি করে টাকা তোলা হয়।
আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নাজমা আক্তার বলেন, এখন মধ্যবিত্তের অনেকের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। ন্যায্যমূল্যে টিসিবির ট্রাকে বিভিন্ন দ্রব্য বিক্রি করা হয়। মধ্যবিত্তদের অনেকে এখানে দাঁড়াতেও লজ্জাবোধ করেন। মধ্যবিত্তের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হতো।
আওয়ামী লীগদলীয় সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, কিছু বুদ্ধিজীবী আর তথাকথিত বিরোধী দল টকশোতে যা খুশি তাই বলে বেড়ায়। বুদ্ধিজীবীরা বিএনপির ভাষায় কথা বলেন। লন্ডনের অপরিপক্ব অশিক্ষিত একজনের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত আসে। এ কারণে তা বাস্তবায়ন হয় না।
প্রবাসীদের বিশেষ মর্যাদার দাবি হুইপ স্বপনের
এদিকে বিমানবন্দরে প্রবাস ফেরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলেছেন আওয়ামী লীগদলীয় হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেন, প্রবাসীদের সম্মানের সঙ্গে দেশে আনতে হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন