পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানের গ্রেপ্তার এবং কারান্তরীণ হওয়া আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এক বিশেষ তদন্তে ইমরান খানের গ্রেপ্তার বিধিবহির্ভূত এবং তাকে নির্বিচারে কারারুদ্ধ করা হয়েছে বলে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ইমরান খানকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার সংস্থার ওয়ার্কিং গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে— ইমরান খানের এই গ্রেপ্তার আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
এতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার সংস্থার ওয়ার্কিং গ্রুপ তদন্ত করে জানতে পেরেছে যে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নির্বিচারে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।
সোমবার প্রকাশ্যে আসা এক মতামতে জেনেভাভিত্তিক ইউএন ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিট্রারি ডিটেনশন বলেছে, ‘(এই অবিচারের) উপযুক্ত প্রতিকার হবে ইমরান খানকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাকে ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য বিষয়াদির পাশাপাশি একটি কার্যকর অধিকার প্রদান করা।’
জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপটি চলতি বছরের ২৫ মার্চ এই মতামত প্রকাশ করে। তবে এটি জনসমক্ষে আসে সোমবার। জাতিসংঘের এই ওয়ার্কিং গ্রুপ তাদের মতামতে বলেছে, ‘ইমরান খানকে আটকের কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না এবং মনে হচ্ছে রাজনৈতিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করার উদ্দেশ্যে আটক করা হয়েছিল। (ওয়ার্কিং গ্রুপ) এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, শুরু থেকেই সেই প্রসিকিউশনটি আইনের ভিত্তিতে ছিল না এবং কথিত একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে।’
ওয়ার্কিং গ্রুপ বলেছে, ইমরান খানকে যে আইনি সমস্যার মধ্যে ফেলা হয়েছে সেটি মূলত তার এবং তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির বিরুদ্ধে ‘অনেক বৃহত্তর দমন অভিযানের’ অংশ।
এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ইমরান খানের দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়েছিল এবং তাদের নির্বাচনি সমাবেশগুলোকেও বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল। এছাড়া ‘নির্বাচনের দিনে ব্যাপক জালিয়াতি ও (কারচুপির মাধ্যমে) কয়েক ডজন সংসদীয় আসন চুরি’ করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের এই ওয়ার্কিং গ্রুপ।
পাঁচজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত জাতিসংঘের এই ওয়ার্কিং গ্রুপের মতামত শোনা বাধ্যতামূলক নয়। তবে তাদের এই মতামত বেশ গুরুত্ব বহন করে।
তবে পাকিস্তান সরকার এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন