প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহুল আলোচিত চীন সফর শেষ হয়েছে। কিন্তু সফরটিকে ঘিরে সৃষ্ট আলোচনা এবং পর্যবেক্ষণ থামেনি। বরং সেটি আরও বিস্তৃত হয়েছে। দেশি-বিদেশি বোদ্ধারা এখন সফরটির আউটকাম বিশ্লেষণ করছেন। রিজার্ভ সংকটসহ বাংলাদেশের নানামুখি চ্যালেঞ্জের এই কঠিন সময়ে উন্নয়নবন্ধু চীনের ব্যাপক অর্থনৈতিক সাপোর্ট প্রত্যাশা করেছিল ঢাকা। অবশ্য সেই প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে তুলেছিল চীনই। বেইজিং প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সম্পর্কের ‘গেমচেঞ্জার’ বলে আগাম মন্তব্য করেছিল। তাছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের সাইড লাইনে আচমকা চীনা প্রতিনিধি বাণিজ্য সহায়তা হিসাবে বাংলাদেশকে ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ চীনা মুদ্রা প্রদানের প্রস্তাব করেন। যা নিয়ে গত চার মাস ধরে নেগোসিয়েশনে কাটায় দুই দেশ। পররাষ্ট্র সচিবের বেইজিং সফরে এবং ইআরডি’র সঙ্গে সিরিজ বৈঠকে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়।
সেই আলোচনার সূত্র ধরেই বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে ৫০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান সহায়তা পাচ্ছে বলে গত ৩রা জুলাই ব্লুমবার্গকে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। সেইসঙ্গে বাজেট সাপোর্ট হিসাবে বাংলাদেশ চীন থেকে আরও ২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান আশা করছে বলে জানায় সেগুনবাগিচা। ধারণা দেয়া হয়, সরকার প্রধানের সফরে এসবের বিষয়ে ঘোষণা আসবে। কিন্তু না, দু’টি প্রস্তাবের বিষয়েই অস্পষ্টতা থেকে গেছে। অবশ্য চীনের তরফে ১০০ কোটি ইউয়ান সহায়তার একটি স্বতন্ত্র ঘোষণা এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজেট সহায়তায় ২০০ কোটি ডলার পাওয়ার প্রস্তাবটি দিয়েছিল ঢাকা। সেটি না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ চীন কাউকেই এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বাজেট সহায়তা দেয়নি। তবে যে ৫০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য সহায়তার প্রস্তাব চীন দিয়েছে সেটির নেগোসিয়েশন এখনো বাকি। অর্থাৎ শর্ত কাটছাঁট করে এটি পাওয়ার সুযোগ আছে। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের অর্জন বিশ্লেষণ করেছে দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া গ্লোবাল টাইমস। তারা হাই প্রোফাইল ওই সফর নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন করেছে। তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে চীনের সহযোগিতা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে বলে উল্লেখ করা হয়। এক্ষেত্রে তীব্র ভূ-রাজনৈতিক ‘গেম’ এর বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিশ্লেষকদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, বাংলাদেশ যদি দ্রুত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি করতে চায় তাহলে অবশ্যই চীনের সহযোগিতা প্রয়োজন। কিন্তু তীব্র ভূ-রাজনীতির খেলার মধ্যে পড়ে গেছে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশ। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেতে ঘনিষ্ঠ হওয়া দেশগুলোর ওপর অপরিহার্যভাবে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা চাপ বাড়াচ্ছে। সাংহাই একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সের ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনের রিসার্চ ফেলো হু ঝিয়োং বলেন, যখনই দক্ষিণ এশিয়ান কোনো নেতা চীন সফরে আসেন, তখন সবসময়ই নানা অজুহাতে বাধা সৃষ্টি এবং প্রচারণা শুরু করে ভারত। কিন্তু নয়াদিল্লির অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয় যে, চীনের সঙ্গে অন্য দেশের যোগাযোগ বা ঘনিষ্ঠতার কারণে ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের ফলে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন হবে দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক। বুধবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তিনি বলেন, তৃতীয় কোনো পক্ষকে টার্গেট করবে না চীন-বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নয়ন। লি কিয়াং বলেন, চীন সবসময়ই ‘জিরো-সাম’ গেমের বিরোধী এবং চীনের অবস্থান হলো পারস্পরিক সুবিধা ও সহযোগিতার পক্ষে। তিনি আরও বলেন, জটিল ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের কৌশলগত পছন্দকে সম্মান করে চীন। অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্কে বেইজিংয়ের যে আপত্তি নেই তা-ও খোলাসা করেন তিনি। চীনের আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যম সিজিটিএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দেশ তাদের সম্পর্ককে একটি ‘বিস্তৃত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করেছে। চীনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে প্রাধান্য দিয়েই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে শি বলেন, ১৯৭৫ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই দেশ সব সময় পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখেছে ও পরস্পরকে সমর্থন দিয়েছে। একে অপরের সঙ্গে সমতাপূর্ণ আচরণ করেছে ও সমলাভের ভিত্তিতে সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। বৈশ্বিক দক্ষিণের (গ্লোবাল সাউথ) দেশগুলোর মধ্যে চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ও পারস্পরিক উপকারী অংশীদারিত্বের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন শি। সিজিটিএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী বছর ‘জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্কের বর্ষকে (ইয়ার অব পিপল-টু-পিপল এক্সচেঞ্জস)’ সামনে রেখে দুই দেশকে সংস্কৃতি, পর্যটন, সংবাদমাধ্যম ও খেলাধুলার মতো খাতে বিনিময় এবং সহযোগিতা বাড়াতে চেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন শি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য বহুপক্ষীয় কাঠামোর মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করতে চীন প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক সম্পর্ক নিয়ে যা বলা হয়েছে ২৭ দফা যৌথ ঘোষণায়: প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে সমাপনীতে ২৭ দফা যৌথ ঘোষণা প্রকাশ পেয়েছে। ভবিষ্যতের দলিল হিসেবে থাকা ওই জয়েন স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা এবং ঢাকার সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকদের ভাষ্য মতে, সিরিজ নেগোশিয়েশনের মধ্যদিয়ে যেসব বিষয়ে দু’পক্ষ এক হয়েছে বা ছাড় দিয়ে রাজি হয়েছে তা-ই স্টেটমেন্টে স্থান পেয়েছে। এবারের প্রধানমন্ত্রীর সফরে রাজনৈতিক দিকটা যতটা স্পষ্ট হয়েছে ততটা অর্থনৈতিক এবং সামরিক পার্টে খোলাসা করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি করা হয়। বলা হয়, তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশের পানি ব্যবস্থাপনায় প্রস্তাবিত বহুমুখী সুবিধাসমৃদ্ধ প্রকল্প নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো পর্বেই আলোচনা হয়নি। ওই প্রকল্পের কারিগরি দিক খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি দিল্লি টিম পাঠানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে সম্ভবত সে কারণেই বিষয়টি নিয়ে চীনের সঙ্গে কথা বলা থেকে বিরত থেকেছেন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে এবারই প্রথম বাংলাদেশের কাছ থেকে তাইওয়ান প্রশ্নে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য পেয়েছে চীন। এতদিন তাইওয়ান নিয়ে চুপ ছিল ঢাকা। কিন্তু এবারে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন টেনে তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে স্বীকার করে নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে সাউথ চায়না সি নিয়ে বাংলাদেশ এবার খানিকটা কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। যা চীন হয়তো ভালোভাবে নেবে না। কর্মকর্তারা বলছে, চীনের কিছু উদ্যোগে বাংলাদেশের যোগদানের প্রস্তাব ছিল, কিন্তু ঢাকা তাৎক্ষণিক সম্মতি দেয়নি। প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে সব পর্যায়ে এবং বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী ও বিভাগের মধ্যে বিনিময় আরও জোরদার করতে এবং ব্যবহারিক সহযোগিতাও বাড়াতে রাজি হয়েছে চীন-বাংলাদেশ। পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণের বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্পৃক্ততা ধরে রাখতে একমত হয়েছে দুই দেশ। মানবতার তাগিদে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা করতে হবে এবং জীবিকা নির্বাহ ও উন্নয়নের অধিকারগুলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মানবাধিকার এ বিষয়ে দুই দেশই একমত হয়েছে। সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সব দেশের মধ্যে মানবাধিকার বিষয়ে বিনিময় ও সহযোগিতা সমর্থন করে চীন ও বাংলাদেশ। এ ছাড়াও দুই দেশই মানবতার সাধারণ মূল্যবোধকে সমর্থন করে, মানবাধিকারের রাজনীতিকরণের বিরোধিতা করে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এজেন্ডার সব ক্ষেত্রে যৌথভাবে সুষ্ঠু অগ্রগতি প্রচারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে চীনে আম রপ্তানির প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে বিবৃতিতে পাট, চামড়া, জলজ পণ্য এবং অন্যান্য উচ্চমানের বিশেষ পণ্য রপ্তানি সমপ্রসারণে বাংলাদেশকে চীন স্বাগত জানায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চমানের বাংলাদেশি কৃষিপণ্য চীনে রপ্তানির বিষয়ে যোগাযোগ আরও নিবিড় করতেও উভয়ে সম্মত বলে জানানো হয়।
দক্ষিণবঙ্গের উন্নয়নে সমর্থন দিয়েছে চীন, তবে আশ্বাস নেই ঋণের: প্রধানমন্ত্রী সফরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরেকটি বড় চাওয়া ছিল সাউদার্ন ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (সিডি) বা পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সম্পৃক্ততা। এ বিষয়ে বেইজিং ইতিবাচক। তবে এটি বাস্তবায়নে তাদের তরফে ঋণের কোনো প্রতিশ্রুতি মিলেনি। যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত চীনের ১ বিলিয়ন ইউয়ান যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬০০ কোটি টাকা সেটি স্থান পেয়েছে। সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, প্রধানমন্ত্রী লি শিয়াংসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক এবং ২১টি সমঝোতা স্মারক, সাতটি ঘোষণা এবং ১৬টি ব্যবসায়িক সমঝোতার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বিবৃতিতে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অধীনে আরও গুণগত মানসম্পন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে আশা করা হয়েছে, একসঙ্গে পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে উভয়পক্ষই লাভবান হবে। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ঢাকা সফরে দু’দেশের সম্পর্ক ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ স্তরে পৌঁছে। এবার এটাকে ‘সর্বাঙ্গীণ কৌশলগত সহযোগী অংশীদারত্ব’ স্তরে নেয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। চীনের সহযোগিতায় বাংলাদেশে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংসহ বিভিন্ন প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া পদ্মা সেতু রেল লিংক, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রাজশাহী পানি শোধনাগারসহ বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে সাবওয়ে, মেট্রোরেল ও সড়ক; তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান; হাসপাতাল এবং পানিসম্পদ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের বিষয়ে চীনের এন্টারপ্রাইজগুলোকে উৎসাহিত করার কথা উল্লেখ রয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। ৮ থেকে ১০ই জুন চীনে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফরের ২৭ দফা যৌথ বিবৃতির সূচনাতে রোহিঙ্গাদেরকে ‘মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্রুত প্রত্যাবাসনই সেই সংকটের সমাধান তাও উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি নীতির প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে সম্মত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। চীন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্নভাবে অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে এবং বিজয়ী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানিয়েছে। চীন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জনকে সাধুবাদ জানানো ছাড়াও ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে সমর্থন ব্যক্ত করেছে। চীন ও বাংলাদেশ প্রাচীনকাল থেকেই সুপ্রতিবেশী ও ভালো বন্ধু উল্লেখ করে বেইজিংয়ের তরফে বলা হয়, কূটনৈতিক সম্পর্কের গত ৪৯ বছরে ঐতিহ্যবাহী চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব শক্তিশালী থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। দুই দেশ সব সময় একে অপরকে সম্মান করে, একে অপরের সঙ্গে একই রকম আচরণ করে এবং পরস্পরের সুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখে। পারস্পরিক বিশ্বাসকে গভীরতর করার সঙ্গে সঙ্গে, দুই দেশ তাদের বাস্তব সহযোগিতায় ফলপ্রসূ ফলাফল অর্জন করেছে এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রেখেছে, এইভাবে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও পারস্পরিকভাবে উপকারী সহযোগিতার একটি চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করেছে। একে অপরের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং একে অপরের মূল স্বার্থ ও প্রধান উদ্বেগের বিষয়গুলোতে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সমর্থনের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বেইজিং বলেছে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিশেষত: অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা এবং স্বাধীনভাবে বাংলাদেশ যেন তার উন্নয়নের পথ বেছে নিতে পারে সে জন্য ঢাকাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন