প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সব জায়গায় অঙ্ক ছিল পিতা পুত্র নিয়ে। যে অঙ্ক ছিল শিক্ষার্থীদের ভয়ের আরেক নাম। সেই ভয়ের দাগ এবার পাঠ্যপুস্তক ছেড়ে অর্থনীতির বাজারে। যেখানে কে কার থেকে কত বছরের বড় এই হিসেব নয় উল্টো বের হয়ে আসছে সন্তানের চালচলনে পিতার অবৈধ সম্পদের হিসাব। আর বদলে যাচ্ছে পিতা পুত্রের সম্পর্ক।
বাবাকে নামি দামী ব্রান্ডের কোটি টাকার গাড়ি উপহার দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন রাফসান দ্যা ছোট ভাই। আর সেখান থেকে বের হয়ে এসেছিল ঋণ খেলাপী রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের বাবা মো. জাকারিয়া এবং তার মা কাজী নুরুন্নেছার নাম। যেখানে তারা ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার ঋণখেলাপি বলে জানা গেছে।
এবার পিতা পুত্রের অঙ্কে ঢুকে গেল ছাগল। আর তাতে যেন আরও কঠিন হয়ে গেলো অঙ্ক । তবে অঙ্কটি করতে গেলে একটি প্রবাদও মনে পড়ে যাবে। প্রবাদটি হলো হাজার টাকার বাগান খাইলো পাঁচ সিকার ছাগলে। বলছিলাম জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বাগানের কথা।
গেল ঈদে মতিউরের দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ইফাতের ১৫ লাখ টাকার ছাগলসহ অর্ধ কোটি টাকার কোরবানি হিসেব অনেকটা গড়মিল করে দিলো খোদ পিতা পুত্রের সম্পর্ককে। অঙ্কের ডাক থেকে হঠাৎ মুছে গেলো পিতা পুত্রের সম্পর্ক। বিপাকে পড়ে যেতে হলো অঙ্ক মেলাতে। হঠাৎ প্রশ্নে নতুন সংযোজন। ইফাত মতিউরের সন্তান নয়। তাই প্রথমে প্রমাণ করুন ইফাতই মতিউরের প্রথম সন্তান। এমন প্রশ্নে কিছুটা হতভম্ব হলেও খুব সহজেই মিলে গেলো ইফাতই মতিউর পুত্র। তারপর লাপাত্তা পিতা পুত্র আর সঙ্গে মতিউর রহমানের দুই স্ত্রী। বের হয়ে আসলো হাজার কোটির অবৈধ সম্পদের হিসেব। দুদক গেলো তদন্তে আসলো সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ।
সৈয়দ সোহানুর রহমান তিনি ড্রাইভার বাবার বিলাসী পুত্র। চড়েন নামি দামী গাড়িতে। আর সে টাকা আসে বাবার প্রশ্ন ফাসের ব্যবসা থেকে। আর সেই ব্যবসার লাভ তাকে বানিয়েছে বড় উদ্যোক্তা আর কোটিপতি। পিতার টাকায় পুত্রের রাজনীতির অঙ্কটাও বেশ সুন্দর। ক্ষমতার হিসেব মিলাতে লাগান ছাত্রলীগ পরিচয়।
পুত্রের স্মার্ট চলাচল আর রাজনৈতিক ব্যক্তি হয়ে উঠার চেষ্টা বাবাকেও ঝুকিয়েছে সেদিকে। তাই পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী হতে চান জনপ্রতিনিধি। তবে শেষ রক্ষা হলো না পিতা পুত্রের। প্রশ্ন ফাসের তথ্য সামনে আসায় বাবার সঙ্গে পুত্রকেও হতে হয়েছে গ্রেপ্তার।
বইয়ে করা পিতা পুত্রের অঙ্কের এবার যোগ করা যেতেই পারে পিতা ও কন্যার নাম। যার উদাহরণ হতে পারে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ ও তার দুই দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর।
বইয়ে থাকা পিতা পুত্রের অঙ্ক ভয়ের কারণ হয়ে উঠে অঙ্ক করা শিক্ষার্থীদের। তবে এবার এই পিতা পুত্র সম্পর্কই যেনো কাল হয়ে দাড়াচ্ছে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়া বাস্তব জীবনের পিতা পুত্রদের।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন