নামাজরত অবস্থায় মসজিদের ইমামের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীর উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে ইমামের পাজরের দুইপাশে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়েছে। ওই ইমামের নাম হাফেজ মাওলানা মো. বদরুল হাসান (৪২)। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের সাতচর উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) মাগরিবের নামাজ চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার মাগরিবের জামাত শেষে মাওলানা মো. বদরুল হাসান সুন্নত নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইমামের উপর আগে থেকে ক্ষুব্ধ সজীব নামে এক মুসল্লি পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী ইমামের শরীরের পেছনে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এতে রক্তাক্ত অবস্থায় ইমাম মসজিদের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। পরে মসজিদে উপস্থিত অপর মুসল্লিরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত ইমাম বদরুল হাসান ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার হাসেমদিয়া গ্রামের শামসুল এর ছেলে বলে জানা গেছে। তিনি আলকরা ইউনিয়নের সাতচর রিয়াজুল জান্নাহ মাদরাসার মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করছেন এবং সাতচর উত্তরপাড়া জামে মসজিদে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ইমামতি করছেন।
এদিকে ইমামের উপর হামলার খবর শুনে স্থানীয়রা হামলাকারী যুবক সজীবকে আটক করে রাখে। সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ পৌঁছে ঘটনাস্থল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার দুপুরে আটককৃত সজীবকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে ।
সাতচর উত্তরপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি শাহ-আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘হামলার ঘটনা শুনেছি। ইমাম সাহেবের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ন্যাক্কারজনক এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মডেল মসজিদের খতিব হযরত মাওলানা মুফতি আব্দুর রহিম বলেন, ‘আলকরায় ইমামের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
আলকরা ইউপি চেয়ারম্যান মাইনউদ্দিন ভূঁইয়া জানান, ‘ইমাম সাহেবের উপর হামলার ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও ঘৃণীত কাজ। আমি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তির শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, ‘ইমামের উপর হামলাকারী যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার কারণ সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। এ সংক্রান্ত থানায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বুধবার দুপুরে আটককৃত যুবককে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন