ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপারকের জীবিত ধরতে পারলে বা মারতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেয় জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। ঘোষণার পর আবার প্রেস বিজ্ঞপ্তিও দেন তারা। এই পুরস্কার ঘোষণার পর বনবিভাগের পক্ষ থেকে এটি আইনসিদ্ধ নয় বলে সমালোচনা করা হয়। তিনদিন পর আজ রবিবার এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়াল জেলা আওয়ামী লীগ।
আজ রবিবার (২৩ জুন) নিজের ফেসবুক একটি পোস্ট দিয়ে এই পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহার করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামিম হক।
গতকাল শনিবার (২২ জুন) সকালে পদ্মার চর থেকে একটি জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরেন রেজাউল নামে এক কৃষক। শনিবার সন্ধ্যায় একটি জীবিত সাপ নিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে হাজির হন তিনি।
রেজাউল বলেন, সকালে চরের মধ্যে থেকে ধরছি। সাপটা হেঁটে যাচ্ছিল। গায়ের গেঞ্জি ছুড়ে ওকে ধরেছি। নেতারা পুরস্কার ঘোষণা করছেন। এ জন্য রিস্ক নিয়ে ধরেছি। এখন বনবিভাগে জমা দিতে আইছি। রবিবার দুপুরে ফরিদপুরের বনবিভাগের অফিসে সাপটি নিয়ে গেলে তাকে সাপসহ ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের পুরস্কার ঘোষণা অবৈধ। মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। আমরা এটা প্রমাণ করতে যাবো কেন? ওই কৃষকের উচিত হবে যেখান থেকে সাপটি ধরেছে ওই স্থানে ছেড়ে দেওয়া।
আজ রবিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়ে সবাইকে রাসেলস ভাইপার সাপ মারা বা ধরার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান।
শামীম হক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘জীবিত বা মৃত কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপারের জন্য কোনো পুরস্কার নেই।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রাসেল ভাইপার একটি আলোচিত বিষয়, পাশাপাশি জনগণের জন্য হুমকি স্বরূপ। এটি অত্যন্ত বিপদজনক বিধায় যেকোনো পুরস্কার বা কৌতূহলবশত এ সাপ নিয়ে অতি উৎসাহী হবেন না। জীবিত বা মৃত কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপারের জন্য কোনো পুরস্কার নেই।’
তিনি লিখেন, ‘সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন অথবা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন।’
নেত্রকোণায় পানিতে ডুবে তিন শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যুনেত্রকোণায় পানিতে ডুবে তিন শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি সভায় ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন সভপতি শামীম হক। এ সময় সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ বলেন, শুধুমাত্র কোতোয়ালি থানার মধ্যে কেউ এই সাপ মারতে পারলে তাকে এই টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আমাদের সভাপতি সাহেব এই টাকা দেবেন। এ ঘোষণার পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পুরস্কার পেতে বিভিন্ন জায়গায় সাপ মারার উৎসাহ ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘোষণার পর জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, মেরে ফেললে নয়, জীবিত অবস্থায় রাসেল ভাইপার ধরতে পারলে পুরস্কার দেওয়া হবে। এরপর শুক্রবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ আলী আশরাফ পিয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফরিদপুর সদর উপজেলাধীন কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপটি জীবিত ধরতে পারেন তবে তাকে ৫০ হাজার টাকায় পুরস্কৃত করা হবে। এরপর আবার জীবিত সাপ ধরার উৎসাহ সৃষ্টি হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন