তাই আমরা জঙ্গি ? আলহামদুলিল্লাহ
লিখেছেন লিখেছেন ঈনসাফ ১২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:১৪:১৪ দুপুর
উম্মতের প্রয়োজনে এক এক সময়ে এক একটা বিষয় গুরুত্বের চুড়ায় ছিলো। যখন মুসলিমরা সংখ্যায় কম ছিলো তখন রসুলুল্লাহ সঃ তখন অমুসলিমদের দাওয়াতের দিকে সবচেয়ে বেশি সময় দিয়েছিলেন। মদিনায় হিজরতের পর গুরুত্ব আসলো মুসলিমদের জীবনের হালাল-হারাম সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে।তারপর আসল জিহাদের হুকুম আরো অনেক কিছুই।
উমারের সময় তো উনি অমুসলিমদের যাকাত প্রদানের খাতটাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন যে মুসলিমদের সংখ্যা এখন যথেষ্ট , নতুন করে অমুসলিমদের যাকাতের খাত থেকে অর্থ দিয়ে ইসলামে ডাকার প্রয়োজন নেই
বিভিন্ন মহাদেশে ইসলামের দুর্বার অগ্রযাত্রায় হিজরি প্রথম শতকের শেষ দিক থেকে দ্বিতীয় শতকে ছিল ফিকহ এবং শারিয়াহর বিধি-বিধান পালনের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ।এজন্য আবু হানিফা, শাফেয়ি, মালিক এবং আহমাদ বিন হাম্বলের মত মুজতাহিদ আলিমদের উত্থান এই সময়েই।
এর কিছুদিন পর ফতোয়া শপিং, হাদিস জাল, আমির-শাসকদের হাদিস নিয়ে সেচ্ছাচারিতার কবলে পড়ে প্রয়োজন পড়লো হাদিসগুলোকে বিধিবদ্ধভাবে সংকলনের এবং একই সাথে হাদিসের রাবীদের চরিত্র কার কেমন ছিলো সেটা বিশ্লেষণের।বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য মুহাদ্দিসরা এলেন এই হিজরি তৃতীয় শতকেই।
.
.. তারপর কেটে গেল অনেকটা সময়।
আর আমাদের বর্তমান এই সময়টা আমরা পার করছি যখন আমাদের কোন আমীর নেই।কেয়ামতের মাইনর সাইন গুলো প্রায় সিংহভাগই দেখা শেষ আমাদের। রসুলুল্লাহর মৃত্যু, পারস্য রোম, জেরুজালেম তারপর কন্সট্যান্টিনোপল বিজয় পার করে আজ আমরা দেখছি মেষচালকরা আকাশ চুম্বি দালান বানানোর প্রতিযোগিতায় নামছে, পতিতাবৃত্তি সরকারী লাইসেন্স পাচ্ছে, নিকৃষ্ট লোকরা আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে, সমকামিতার প্রসার হচ্ছে আরও কত কি।
মুসলিমদের রক্ত পানির মত প্রবাহিত হচ্ছে, টেবিলে সাজিয়ে রাখা ডিশের মত আমাদেরকে আক্রমণের জন্য কুফফাররা একে অন্যকে দাওয়াত দিচ্ছে, আফগানিস্তানে ছিলো ৩৮ টা জাতির সম্মিলিত বাহিনী আর এখন সিরিয়ায় আক্রমণের দাওয়াত পেয়েছে পঞ্চাশেরও অধিক রাষ্ট্র।
এই যখন অবস্থা তখন রসুলুল্লাহর হাদিস অনুযায়ী নবুয়্যাত, খুলাফায়ে রাশেদা, রাজতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র পেরিয়ে আবার নবুয়্যাতের আদলে খিলাফাহ আসার কথা। আল্লাহ্ মুসলিমদের বিজয়ের জন্য প্রস্তুত করছেন, ইমাম মাহদী ঈসা আলাইহিসসালামের আগমনের পথ প্রশস্ত করছেন আলহামদুলিল্লাহ। খোরাসানের প্রাণকেন্দ্র আফগানিস্তান থেকে কুফফার রাশিয়া তারপর আমেরিকা পলায়ন করেছে।এক সময়কার বাথিস্ট ইরাক এখন কুফফারদের গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে, সৈন্য পাঠানোর মুরোদ নেই উপর থেকে বোমাবাজি করেই পার পেতে মরিয়া কুফফাররা।আতাতুর্কের তুরস্ক, জামাল আব্দুন নাসের আনোয়ার সাদাত মোবারকের মিসর, বেন আলীর তিউনিসিয়া, গাদ্দাফির লিবিয়া সব ছারখার করে মুসলিমরা জেগে উঠেছে।শামের উচ্চ মর্তবা সম্পর্কিত হাদিসগুলো আজ স্পষ্ট হচ্ছে- দিনের আলোর মত প্রতিভাত হচ্ছে কুফফারদের আসন্ন পরাজয়। কমিউনিসম, জাতীয়তাবাদ, ডেমোক্রেসি কোন ট্যাবলেটে ফল না পেয়ে মুসলিমরা আল্লাহর শারিয়াহ কায়েমে আজ জেগে উঠেছে। বুড়ো বয়সে হজ করে পাক-পবিত্র হওয়ার মত দেরি নয়, মুসলিম নও জোয়ানরা নিজ পরিবারে নিজ বাসায় অনাহুত আগন্তুক হয়ে দ্বীন মানার শপথ নিয়েছে, ক্রমেই আরো কম বয়সী প্র্যাক্টিসিং মুসলিমদের দলও ভারি হচ্ছে।
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর জন্যই সমস্ত প্রশংসা যিনি আমাদের এমন একটা সময়ে জন্ম দিয়েছেন, যৌবন দান করেছেন যে সময়ে তিনি তাঁর দ্বীনকে পুনরজাগরণ করার জন্য প্রস্তুত করছেন।এই সময়টায় দ্বীনের সব খুটি-আসবাবের প্রাচুরয থাকবে অবশ্যই তবে দিগন্ত আলোকিত করে চুড়ায় উঠবে জিহাদের ঝান্ডা ইন শা আল্লাহ্।আমার ভাইদের রক্ত পানির মত প্রবাহিত হচ্ছে- কেন ? তাদের রক্ত কি অন্যদের মত লাল নয়? কাফিরদের কারাগারে আমার বোনের পেটে এখন শিয়া, নুসাইরি আর নাসারাদের বাচ্চা অতচ এর আগে কেউ তাঁর একটা চুলের আগা পর্যন্ত দেখেনি! এখন যে জিহাদেরই সময়। সবাই আলিম হবে এমন তো কথা নেই , খালিদ বিন ওয়ালিদদের কি আমরা কম মনে রেখেছি? আল্লাহ্ তাদেরও সম্মানিত করেছেন।খালিদ,আবু দুজানা, কাকা বিন আমরদের অভাবটাই কি এই উম্মাহর শিরা-উপশিরায় টনটন করে বাজছেনা? তাদের অভাবটাই ঘুচবে এবার ইন শা আল্লাহ্।
একটা কথা বলতেই হয়- জিহাদ কারো বাপের কেনা পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, জিহাদের কথা আনলেই সেটাকে আল কায়েদা, তালিবান কিংবা আইএসের দিকে সম্পর্কিত করে খারিজি বিদাতি রব তুলে জিহাদ বিষয়টাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা কোন মুসলিমের কাজ নয়, মুনাফিকের কাজ। যেসব ভাইরা শয়ে শয়ে মাইল পাড়ি দিয়ে আফগান, চেচনিয়া কিংবা ইরাক সিরিয়ায় গেছেন তারা কেউই কোন দলের নির্দিষ্ট ব্যানারকে সারভ করতে যাননি, ইসলামের পতাকা উঁচু করতে সুবিধাজনক একটা প্ল্যাটফর্ম বেছে নিয়েছেন মাত্র, আর ফিত্নার কথা বলবেন- সেটা কোন সময় ছিলনা? যে যত বেশি হকের পথে থাকতে চাইবে তাঁর পরিক্ষাও তত বেশি হবে এতে তো কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।
আর ভুল-ত্রুটি তো থাকবেই, কাদা তো তাঁর জামায়ই লাগবে যে কাদার উপর দিয়ে হেটে শুকনো পরিষ্কার জমিনের দিকে পা বাড়ায়, আর ওই ব্যক্তির জামাই কি পরিষ্কার থাকবে না যে কাদায় না হেঁটে ঠায় পেছনে দাড়িয়ে থাকে আর পেছন থেকে কাদা লাগলো-সব গেলো বলে অগ্রপথিকের দুর্নাম গাইতে থাকে? আল্লাহ্ মুমিনদের ক্ষমা করুন আর পশ্চাতের পথিককে হেদায়েত করুন।
মুফতি কাজি ইব্রাহীম বলছিলেন সাধারণ একটা মানুষ যখন মারা যায় তখন তার মউতের কষ্ট হয় তিন হাজার তরবারির আঘাতের সমান । আর একজন শুহাদার ? একটা পিঁপড়ার কামড়ের মত! বলুন তো কি দেখেছিলেন সেই সাহাবী, কেমন আনন্দ পেয়েছিলেন সেই সাহাবী যিনি (যাকে রসুলুল্লাহ সঃ কুরআন শিক্ষা দেয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন আর বিশ্বাসঘাতকরা তাকে হত্যা করে) যখন পেছন দিক থেকে একটা বর্শা এতো জোরে তাঁর পিঠ দিয়ে আঘাত করে যে সেটা বুক ফেড়ে বের হয়ে আসে আর তিনি বলে উঠেন "কাবার রবের শপথ! আমি সফল হয়ে গেছি!" আমরাও যে ওই পথেই হাঁটতে চাই।
সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন আমরা আজকের কায়সার কিসরাদের শির ধুলায় লুটিয়ে আল্লাহ্র তাবৎ যমিনে তাকবির দেব ... আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন