বিজয়ের সুফল বয়ে আনুক সবার ঘরে ঘরে

লিখেছেন লিখেছেন নয়া জামানার ডাক ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:৩৭:০৭ রাত

বিশ্বের ইতিহাসে আমরা দু-দুবার বিজয়ী স্বাধীন বাঙ্গালী জাতি। ১৯৪৭ সালে আমরা বৃটিশ থেকে এবং ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ি যুদ্ধ করে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাক-হানাদারদের শোষণ থেকে ১৬ ই ডিসেম্বর চুড়ান্ত বিজয় লাভ করি। এ মাস বিজয়ের মাস। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মহা বিজয় । মূলত বৈষম্যমূলক আচরনের বিরুদ্ধেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল। স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে কিন্ত বৈষম্য দূর হয়নি। বিজয়ের ৪৩ বছর পরেও নাগরিক তার মৌলিক অধীকার থেকে বঞ্চিত। অসহায় মানুষের হাহাকার অর্জিত স্বাধীনতাকে ম্লান করে দিয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতষ্ঠাই ছিল বিজয়ের মূল চেতনা। তাহলে জাগ্রত বিবেগকে প্রশ্ন রাখি আমরা কি আমাদের সেই অধিকার ও গণতন্ত্রের নুন্যতম ব্যক্তি স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছি ? আজ স্বাধীন দেশের নাগরিকদের কারো পউষ মাস আবার কারো সর্বনাশ। বিজয় কোন জাতির ঐক্যের বারোতা নিয়ে আসে। কিন্ত আমরা তার পরিবর্তে অনৈক্য সৃষ্টি করছি, বিভাজন হয়েছে জাতি। স্বাধীনতার স্বপক্ষে-বিপক্ষে, চেতনা ধারী-চেতনা বিরুধী ধোঁয়া তুলে জাতি আজ অনৈক্যের অতল গহবরে নিমজ্জিত প্রায়। মতানৈক্যর কারণে আজ স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম সারির নেতৃত্বদানকারী কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধা কে নব্য রাজাকার বা পাকিস্তানের চর উপাধি দেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার আগে যেভাবে হায়েনারা এ জনপদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়েছিল, আজও সেভাবে বাড়ি-ঘর বুল্ডোজার দিয়ে মাড়িয়ে দিয়ে মাঠির সাথে ধুলিৎস্বাত করা হচ্ছে। অনেকাংশে পাক হানাদেরকেও হার মানিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে আজ অস্ত্রের ঝনঝনানী, প্রায় ক্যাম্পাসে আজ খুনের মাতম, যেন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। গুম,খুন ও মানবাধিকার লংঘন আজ জাতীয় ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যাদের কে নাগরিকদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের নিমিত্তে নিয়োজিত করা হয়েছে, তারাই আজ এসব অপরাধ মূলক কাজে জড়িত হয়ে পড়েছে। বিজয়ের সুফল কেউ ভোগ করছে দালান প্রাসাদের ঊচু তলায় আবার কেউ গাছ তলায়। অনেক মুক্তিযোদ্ধার জীবন চলে এখনও রিক্সার পেডোলে। কেন স্বাধীনতা আজ সীমান্তের কাঁটা তারে ঝুলে, কেন স্বাধীনতা আজ পুলিশের বুটের নিচে পিস্ট হয়, কেন স্বাধীনতা আজ বস্তা বন্ধী পাথর বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে লাশ ? এই যদি হয় আমাদের বিজয়ের চেতনা, তাহলে আগামী প্রজন্মকে স্বপ্ন বিনাশী ভবিষ্যৎ নিয়ে ঘোরপাক খেতে হবে। তাই মহান বিজয়ের দিবসের এ দিনে শপথ নিতে হবে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের প্রতিটি ঘরে ঘরে নাগরিকের স্বাধীনতা ও বিজয়ের সত্যিকারের সুফল বয়ে আনুক এটাই নব প্রজন্মের প্রত্যাশা।

বিষয়: বিবিধ

১০৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File