আশুরা, আশুরার রোজা এবং আমাদের করনীয়ঃ

লিখেছেন লিখেছেন সাইমুম হাবিব ২২ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:৫৫:১৯ সন্ধ্যা



আশুরা‬ বা ১০ মহরম মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। ইসলামের ইতিহাসের অনেক তাৎপর্য ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল ঐতিহাসিক এই দিনে। এই দিনটি একদিকে যেমন বিজয়ের অন্য দিকে কারবালার মতো শোকাবহ ঘটনার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর জন্য শিক্ষণীয়ও বটে। অপর দিকে এমন কিছু দিন রয়েছে যেগুলোতে আল্লাহ তায়লা নেক আমল করার জন্য আমাদের মতো গুনাহগারদেরকে সুযোগ করে দিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলোঃ মুহাররাম মাসের দশম দিবস যা এই আশুরা হিসাবে পরিচিত। এই দিনে হযরত মুসা (আঃ) এর বিজয় হয়েছিল। নিল নদে ডুবে পতন হয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী জালেম সম্রাট ফেরআউন ও তার সম্রাজ্যের। আজকে আশুরার দিনে আমাদের প্রার্থনা-নিরাপরাদ মানুষগুলিকে যারা মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসি দিচ্ছে, যারা নিরাপরাদ মানুষকে হয়রানি করছে, যারা মানুষের সাথে প্রতারণা করছে রাব্বুল আলামিন তুমি তাদের দাম্ভিকতাকে ফেরাউনের মতো ডুবিয়ে দাও।

**ঐতিহাসিক এই দিনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাঃ

১. আসমান-জমিন সৃষ্টির কাজ সম্পন্ন হয়েছিলো আশুরার দিনে

২. এই দিনে আদম (আঃ) আল্লাহর খলীফা হিসেবে আগমন করেছিলেন

৩. এ দিনেই আদম (আঃ) এর তাওবা কবুল হয়েছিল

৪. এদিন নমরূদের অগ্নিকুণ্ড হতে ইব্রাহীম (আঃ) উদ্ধার পেয়েছিলেন

৫. এদিন আইয়ুব (আঃ) দুরারোগ্য ব্যাধি হতে সুস্থতা লাভ করেছিলেন

৬. এদিনে আল্লাহ তাআ’লা ঈসা (আঃ) উর্ধ্বাকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন

৭. হিজরী ৬১ সালের এই দিনেই রাসূল (সঃ) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রাঃ) কারবালার প্রান্তরে শহীদ হন। ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর কারবালার প্রান্তরে শাহাদতের ঘটনার মধ্যে মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে।

**আশুরার রোজাঃ প্রিয় নবী মোহাম্মদ মুস্তাফা আহমাদ মুজতাবা (সঃ) কর্তৃক আশুরার রোজা রাখা ও এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামকে উদ্বুদ্ধ করার প্রেক্ষাপট বুখারিতে বর্ণিত হাদিস (১৮৬৫) থেকে আমরা জানতে পারি, ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ “রাসুলুল্লাহ (সাHappy যখন মদিনায় এলেন তখন দেখলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখে। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কেন তোমরা রোজা রাখ? তারা বললঃ এটি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ বনি ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর হাত থেকে মুক্ত করেছেন, তাই মুসা (আঃ) এ দিনে রোজা রাখতেন। তখন নবী (সঃ) বললেনঃ তোমাদের চেয়ে আমি মুসা (আঃ) এর অধিক নিকটবর্তী। ফলে তিনি এ দিন রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।” এ রোযার ফযীলত সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে, নবী (সঃ) বলেন, আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি, তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম ১৯৭৬) এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আমাদের জন্য বিধান হচ্ছে ২ টি রোজা রাখা। ইহুদীদের বিরোধীতা করার জন্য একদিন পূর্বে ৯ অথবা এক দিন পরে ১১ তারিখ রোযা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং আশুরার রোযার ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে, মুহার্‌রমের দশ তারিখের সাথে ৯ অথবা ১১ তারিখেও রোযা রাখা।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সুন্নাহ মোতাবেক আশুরা এবং আশুরার সিয়াম পালন করার তাওফিক দিন। আমীন। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে “মর্সিয়া কন্দন” নয় শুহাদায়ে কারবালা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। ফেরাউন আর নমরুদ এর মতো ধ্বংস করে দিক জালিমশাহী আর মিথ্যাবাদী-প্রতারক-লম্পট-ভণ্ডদের শক্তি আর মসনদকে। আমীন। আমীন।। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামিন।।

বিষয়: বিবিধ

১৯১৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

346870
২২ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:০৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
346968
২৪ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১২:০০
সাইমুম হাবিব লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ @দুষ্টু পোলা

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File