পরকিয়া ও আমাদের সমাজ
লিখেছেন লিখেছেন সাইমুম হাবিব ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:০২:১৪ দুপুর
৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রের হাত ধরে ৮ম শ্রেনীর ছাত্রীর পলায়ন অতঃপর বিয়ে! মামা-ভাগ্নির অবৈধ সম্পর্কের জের গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে খুন!! দুই সন্তান রেখে সন্তানের শিক্ষকের হাত ধরে গৃহবধু পলাতক!!! সন্তানসহ প্রবাসী স্বামী কে হসপিটালে রেখে প্রেমিকের হাত ধরে পলায়ন!! স্ত্রীর পরকীয়ার জের, স্বামী খুন ...............এমন অসংখ্য খবরে পত্রিকার পাতা এখন সয়লাব। এই ধরেন খবর আগে পত্রিকায় দেখতাম বিশ্বের অন্য কোন সভ্যতার অন্তরালে অসভ্য প্রাচাত্তের কোন দেশে ঘটেছে। আর আজ খুবই দুঃখ জনকভাবে শুনতে হচ্ছে এইগুলি আমাদের দেশে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা!! এ ধরনের আরও কতো কিছু ঘটে যাচ্ছে, যার বর্ণনা আর ভয়াবহতা লিখাও অনেক সময় বিবেকে বাঁধে বা অন্তরালেই থেকে যায়।
এর জন্য দায়ি কে??? আমাদের বর্তমান সামাজীক এবং নৈতিক অবক্ষয় এবং নষ্ট প্রজাতির কিছু মানুষ নামের কুকুর!! ইসলামি আদর্শ ও মূল্যবোধ থেকে যারা এদেশের যুব সমাজকে দুরে রাখতে কাজ করেছে তারাই এসব ঘঠনার জন্য মূলত দায়ি। যতদিন এই নষ্ট প্রজাতির লোকদের কর্যক্রম বন্ধ না হবে এবং ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে দূরে থাকবে, ততদিন আমাদের সামাজীক অবক্ষয় এবং এইধরনের ঘটনা হতেই থাকবে।
পরকিয়া!!! বর্তমান সময়ের সব চেয়ে গৃন্য এবং আলোচিত একটি সামাজিক ব্যাধি। বিয়ের পরে অনেক স্ত্রী অহংকারের বশে বা অন্য কোন ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে স্বামীর আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং স্বামীর সাথে প্রতারনা ও বিদ্বেষ পোষণ করা শুরু করে। আবার কিছু নষ্টা প্রজাতির পুরুষ বা মহিলা কোন স্বার্থ ছাড়াই অবৈধ এই সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। কেউবা নিজেকে তথাকথিত ওভারস্মার্ট প্রমানের জন্যও এই পরকিয়া সম্পর্কে জড়ায়। এটি এমন একটি মরন ব্যাধি যা কিনা অনেক সময় নাকি হেরোইন এর নেশাকেও হার মানায়। বিষয়টা অনেকটা এমন, নেশাগ্রস্থ লোককে নিরাময় কেন্দ্র থেকে অনেক টাকা খরছ করে সুস্থ করে আনার পরেও কোনভাবে যদিনা নেশার একটু গন্ধ পায় তাহলে নাকি নিরাময় কেন্দ্রের সব নিরাময় বিফলতার মুখ দেখতে শুরু করে আর সুস্থ লোকটি ফিরে যায় তার সেই আগের অন্ধকার জগতে। ঠিক তেমনি পরকিয়াও এমন একটি নেশা যা কিনা অনেক নষ্টাকে শুধু সঠিক পারিবারিক শিক্ষা এবং মূল্যবোধ না থাকার কারনে নিয়ে যায় অন্ধকার এই জগতে। যেখানে অনেক সময় এমনকি ভুলে যায় ভেদাভেদও। অবৈধ এই সম্পর্কের কিছু সময় আনন্দ আর ফুর্তিতে কাটলেও একসময় এদের জীবনে নেমে আসে করুন পরিণতি। পরকিয়া সম্পর্কের কারনে একদিকে করা হয় একটি মানুষের সাথে প্রতারনা অন্যদিকে করা হয় আল্লাহর অনেক বড় একটি অপছন্দনিয় কাজ। তেমনি ভাবে অমান্য এবং অবজ্ঞা করা হয় একটি হালাল এবং বৈধ সম্পর্ক বিয়েকে।
আল্লাহর সাথে শিরক করার পর সবচাইতে বড় একটা পাপ হচ্ছে – জিনা বা ব্যভিচারের। আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, “তোমরা ব্যভিচারের নিকটেও যেওনা, কারণ এটি অশ্লীল ও মন্দ পথ।” (সূরা বনী ইসরাইল ৩২)
ঘরে স্বামী/স্ত্রী রেখে অন্য কারো সাথে পরকিয়া/জেনা করার শাস্তিঃ মি’রাজের রাত্রিতে রাসুলে কারিম (সঃ) একদল লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন তাদের সামনে একটি পাত্রে গোশত রান্না করে রাখা হয়েছে। অদূরেই অন্য একটি পাত্রে রয়েছে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা গোশত। লোকদেরকে রান্না করে রাখা গোশত থেকে বিরত রেখে পঁচা এবং দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা গোশত খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা চিৎকার করছে এবং একান্ত অনিচ্ছা সত্বেও তা ভক্ষণ করতে হচ্ছে। নবী (সঃ) জিবরীল (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলেনঃ এরা কারা? জিবরীল (আঃ) বললেনঃ এরা আপনার উম্মতের ঐ সমস্ত লোক যারা নিজেদের ঘরে পবিত্র এবং হালাল স্বামী/স্ত্রী থাকা সত্বেও অন্যজনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতো। উৎসঃ আল- খুতাবুল মিম্বারিয়াঃ ডা সালেহ আল-ফাওজান।
আজকাল আশঙ্কা জনকভাবে একটি বিষয় শুনা যায়, মামা-ভাগ্নির অবৈধ সম্পর্ক, চাচা ভাতিজির খারাপ ও সন্দেহজনক আচরণ ইত্যাদি ইত্যাদি। যাকিনা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। এই সম্পর্কে একটি হাদিসের দিকে দেখি এইসব মানুষ রুপি কুকুর আর শুকরদের সম্পর্কে কি বলা হয়েছেঃ যে ব্যক্তি কোন মুহররামাত (১৪ জন, যাদেরকে বিবাহ করা হারাম) যেমন – আপন বোন, কন্যা, বোনের মেয়ে ইত্যাদি এর সাথে হারাম জানা স্বর্তেও যিনা করবে তাকে হত্যা করা ফরজ। বারা ইবনে আজেব (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমার চাচাকে ঝান্ডা উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেখে বললাম, কোথায় চলছেন চাচা? তিনি বললেন, আমাকে রাসুল করিম (সাঃ) প্রেরণ করেছেন ঐ মানুষের নিকট যে তার বাবার স্ত্রীকে বিবাহ করেছে। তিনি ( সাঃ) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন তার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার জন্য এবং সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য। (সহীহ তিরমিজি -১৩৬২ , নাসাঈ -৩৩৩২)
বিষয়: বিবিধ
২৪৮৫ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কথাটা মানতে পরলাম না। স্বার্থ থাকলেই কি পর নারীর সাথে পরকিয়া করা যাবে??
সাধারণ মানুষ যাদেরকে আইডল/আইকন হিসেবে ফলো করে সেই তারকাদের মধ্যে পরকিয়া একটা বিশাল কৃতিত্বের ব্যাপার । ভক্তরা তো তাদের ফলো করবেই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আল্লাহ তায়ালা সকল মুসলমানদের দ্বীনি বুঝ দান করুক এবং সকল অশ্লিল ও বেহায়াপনা থেকে হেফাজত করুক।
নৈতিক শিক্ষা নাই যেখানে সেখানে আর কি হতে পারে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন