ইসলামী দলগুলোর অবস্থান ও করনীয়
লিখেছেন লিখেছেন ইসলামী দুনিয়া ০৬ নভেম্বর, ২০১৪, ০৪:০১:০১ বিকাল
আমি প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, যদি কারো দলের সাথে মিলে গিয়ে মর্মাহত হয়ে থাকেন। কারণ আমি কাউকে আঘাত করার জন্য এ পোষ্ট দিইনি। বরং আমি দিয়েছি বাংলাদেশের ইসলামী দলসমূহকে নিজেদের দলীয় মতামত ভুলে এক কাতারে (কোরআন-হাদীস) দাড়ানোর জন্য। আমি চরমভাবে মর্মাহত যে বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলো এতটা ইসলামীভাবাপন্ন হওয়ার পরও অবৈধভাবে মার খায়। আমি আরো বেশি ব্যাথিত হই, যখন এক দলকে দুর্বল করার জন্য আরেক ইসলামী দল লেগে যায় বরং আমাদের দলসমূহের উচিত ছিল, আন্তরিকভাবে ভুল শুধরে দেওয়া। বিপদে আপদে এগিয়ে যাওয়া, কিন্তু না এই দলসমূহ তা করেননি। অবস্থাটা ঠিক মনে হয় এরুপ-
এক জংগলে চারটা গরু বাস করত। এদের মধ্যে একটা গরু সাদা। তারা সবাই এক সাথে মাঠে চড়ে বেড়াত, মোট কথা সবকিছুই একসাথে। তারমধ্যে প্রতিনিয়তই বাঘ গরু চারটিকে তাড়া করে বেড়াতো কিন্তু গরু চারটির লম্বা মোটা সিং দেখে বাঘ আক্রমন করতে সাহস পেত না। বাঘ কিন্তু নাছোড়বান্দা, এদিকে গরু চারটিও ছিল সবসময় ভীতসন্ত্রস্ত। একদিন কালো গরু তিনটি বসে এক অপরকে বলল, ঐ সাদা গরুটার জন্য আমাদের এত সমস্যা, সাদার রংএর কারণে সহজেই দেখতে পায় আর এতটা পেরেসান হতে হয়। আমরা তো কালো যে কোন স্থানে লুকিয়ে পড়তে পারি, কিন্তু ঐ সাদাটার জন্য পারিনা। কেন আমরা ওর জন্য কষ্ট করব? তাই চল আমরা কোথাও লুকিয়ে যায় যাতে সাদাটা আমাদের সাথে মিশতে না পারে। যেই কথা সেই কাজ, ঐদিকে বেচেরা সাদা গরুটা সাথী গুর তিনটিকে খুজে খুজে হয়রান। আর বাঘ মামা তো এতদিনে সুযোগ পেল, সাদা গরুকে ধরে দিল ঘাড় মটকে। কালো গরু তিনটা লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে আর বলছে, আজকে থেকে আমাদের সমস্যা শেষ।
কিন্তু না একে একে বাকী তিনটাকেও ঘাড় মটকে ছাড়ল।
আমাদের অবস্থা ঠিক এরুপ। জামাআতে ইসলাম এর কোন ত্রুটি পেলে জাকিয়ে হাকিয়ে বলে বেড়ায়।আর চরমোনাই পীর এর বিদআত ও শিরকগুলোকে বড় বড় করে প্রচার করি, আহলে হাদীসের ভুলগুলো ছাড়া কিছুই দেখি না। আমাদেরকে এসব বাদ দিতে হবে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে আত্মসমালোচনা করে সংশোধন হতে হবে। তা না হলে আজীবন মার খেতে থাকতে হবে।বর্তমান যা হচ্ছে। কোন দলই বিজয়ের মুখ দেখছে না। আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, আমি মুমিনদের জয় এবং পরাজয় দিই। আমি তো দেখতেছি বাংলার মুসলিমরা কোন জয় পেল না শুধুই পরাজয়।তাহলে কী আমরা মুমিন না? এজন্য ইসলামীক আমাদের দলসমূহকে যা করতে হবে-
জামাতে ইসলামকে কুফুরী গণতন্ত্রর মাধ্যমে ইসলাম কায়েমের চিন্তা বাদ দিয়ে সুন্নতি তরিকা অবলম্বন করতে হবে।কারণ গনতন্ত্রের মূল চাবীকাঠি সংখ্যাগরিষ্টতা। সংখ্যা গরিষ্টতা ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব। আর আল্লাহ তাআলা কোরআন পাকে বলেছেন, অধিকাংশই কাফের, আধিকাংশই ফাসেক, অধিকাংশই জালেম, অজ্ঞ, পথভ্রষ্ট, এবং ইমান আনার পরেও মুশরিক। স্বয়ং আল্লাহ বলছেন, সংখ্যাগরিষ্টই খারাপ। তাই এই সংখ্যা গরিষ্ট লোক ইসলামকে কখনোই সমর্থন করবে না। সেহেতু ইসলামে গণতন্ত্র বাতিল।
চরমোনাই পীরকেই শিরক বিতআত ত্যাগ করে সুন্নতি পন্থায় দ্বীন কায়েমের চেষ্টা করতে হবে।চরমোনাই ভায়েরা খিলাফত তথা খলিফা দাবী করে অথচ খলিফার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না। কারণ চরমোনাই এর আকীদাহ কিছুটা শিরক মিশ্রিত। তাই আল্লাহর নবীর সহীস হাদীস অবলোকন করে শিরক-বিতআত মুক্ত হয়ে, সুন্নতি পন্থায় দ্বীন কায়েম করার চেষ্টা করতে হবে।
আহলে হাদীস আন্দোলন, শুধুমাত্র দাওয়াতী বিপ্লব করে মানুষগুলোকে পরিবর্তন করতে চান। অথচ আল্লাহর নবী সা: দাওয়াতের সাথে একটি রাষ্ট্রের প্রোয়জনীয়তা অনুভব করছিলেন। সে অনুযায়ী কাজ করেছিলেন। ইসলামের প্রধানত দুটি অংশ- (১) ব্যাক্তিগত ইবাদত (২) হুকুমত (আইন)। আল্লাহর নবী বাস্তব জীবনে ব্যাক্তিগত ইবাদতের সাথে হুকুমত (আইন) প্রতিষ্ঠা করে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন। আহলে হাদীসকে শুধু দাওয়াতের সাথে সুন্নতি তরিকায় দ্বীন কায়েমের চেষ্টা করতে হবে ।
আল্লাহ আমাদেরকে সবাইকে হামজা, উমর, আবু বকর, উসমান, আলী রা: গণের মত কবুল করে নিন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১০৭০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন