এবার তবে আন্দোলনে নামুন মশাই !
লিখেছেন লিখেছেন সত্যকথা ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৭:৪৫:৫৭ সন্ধ্যা
মরহুম কোকোর জানাযায় লাখো মানুষ। সমালোচকরা যতই ভ্রুকুঞ্চি কাটুক না কেন জানাযায় “অগনিত” লোক সমাগম হয়েছে। আমি নিজে বায়তুল মোকাররমের থেকে অর্ধকিলোমিটার দুরে সিটি সেন্টারের পেছনে জায়গা পেয়েছিলাম। সকল মুসল্লীর চোখে আগুন দেখেছি। শোককে শক্তিতে পরিনত করার স্ফুলিঙ্গ দেখেছি। আসরের নামাযের পর কেন জানি জানাযার নামায পড়তে অনেক দেরী হচ্ছিল। সুযোগ পেয়ে একজন জাতীয়তাবাদী কর্মীকে কয়েকটা প্রশ্ন করলাম। ভদ্রলোক একটি ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি। আমর পরিচয় দিতেই বুকে জড়িয়ে ধরলেন। প্রশ্ন করলাম..
ভাই এবার কি কিছু হবে আন্দোলনে?
অবশ্যই। হবে। দেখছেন না ম্যাডাম কি শক্ত। ছেলের মৃত্যুও ওনাকে নরম করতে পারে নি।
বুঝলাম ম্যাডাম খুব শক্ত আছেন কিন্তু কিভাবে আন্দোলন সফল হবে?
আরে ভাই এভাবে আর একমাস অবরোধ চললেই কেল্লা ফতে। দেখেছেন জানাযায় কত মানুষ। শেখ হাসিনার ঘুম হারাম হয়ে যাবে।
তো এক মাস অবরোধ করার ব্যাপারে আপনারা কি প্রস্তুত?
হ্যাঁ...সিরিয়াসলি প্রস্তুত।
কিভাবে প্রস্তুত?
বুঝতে পারছেন না ম্যাডাম কোন মতেই অবরোধ প্রত্যাহার করবেন না। আর প্রস্তুতির কি আছে? অবরোধ চলছে...চলবে।
আমি হাসছিলাম। বুঝলাম ম্যাডাম...ম্যাডাম.....আার ম্যাডাম। কিছুটা ধাতস্থ হয়ে বললাম আন্দোলন নিয়ে আপনাদের উর্ধ্বতন নেতাদের সাথে কোন কথা বা পরামর্শ হয়?
হুম....জানুয়ারীর দুই তারিখে আমাদের ওয়ার্ডের বর্ধিত সভা হয়েছিল।
কি নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল?
বলা যাবে না। গোপন ব্যাপার।
একটু ভাব নিয়া বুঝিয়ে দিলাম আমি খুবই বড় এক ছাত্রনেতা। তখন ওনি আমার কানের কাছে এসে বললেন দুই তারিখের মিটিংয়ে বড় নেতা বলেচিলেন যে আগামী পাঁচ তারিখে হাসিনা সরকার বিদায় নিবে।
আমি এবার সত্যিই হাসি আটকাতে পারিনি। গোপন কথা শুনে সিরিয়াস হয়ে বললাম....আপনার সেই বড় ভাই এখন কোথায়?
আর যায় কোথায়? মুখস্ত গালি। আমাকে নয়...সেই বড় ভাইকে। বাংলা, ইংলিশ..হিন্দী সব।
এই খুবই গোপনীয় কথোপকথন তুলে ধরলাম খুবই প্রকাশ্য একটা কথা বলার জন্য। আর তা হলো চলমান আন্দোলনে বিএনপির নেতৃবৃন্দের হ য ব র ল অবস্থা। নেই কোন সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা। রাজপথে বড় মিছিল নিয়ে নামতে পারছে না ভাল কথা। কিন্তু তৃণমূল কর্মীদের বিকল্প কৌশলের কথা কেউ বলছেন না। সবাই ভাবছেন অনঢ় খালেদা জিয়া তাদের ক্ষমতার ম্যাজিক চেয়ারে বসিয়েই ছাড়বে। সন্তানহারা এক অসহায় মহিলার দিকে তাকিয়ে আছে জাতীয়তাবাদী সব বীরপূরুষ! আমার বুঝে আসে না এতবড় একটা পার্টি এরকম বিশৃংখল নেতৃত্ব নিয়ে চলে কিভাবে? লাখো কর্মীকে বন্দুকের মুখে ঠেলে দিয়ে ঐ স্টুপিড ভীরুরা কি করে এসি রুমে বসে টিভি স্ক্রলে অবরোধ-হরতালের খবর দেখে?
বলছিলাম কোকোর জানাযার কথা। সত্যিই আশা জাগানিয়া। লাখো মানুষ। সবাই বেগম জিয়ার জন্য হাপিত্যেশ করছেন, সহমর্মীতা জানাচ্ছেন। এতলোক দেখে আমি নিজেই অনুপ্রানিত হয়েছি। শুধু ভেবেছি ইস যদি এই লোকগুলো সুশৃংখলেএকটি দলের কমান্ডে থাকতো।
আমি বিনয়ের সাথে বিএনপির কাপূরুষ, স্টুপিড নেতাদের অনুরোধ করবো...এবার একটু গা ঝাড়া দিয়ে বিছানা ছাড়ুন। একজন সন্তানহারা মায়ের পাশে দাঁড়ান। আপনাকে বেনজির আহমদের বন্দুকের সামনে আত্মাহুতি দিতে বলছি না। বলছি সহজাত নেতৃত্ব দিতে। লাখো কর্মীকে ইনস্ট্রাকশন দিতে। পরামর্শ দিতে। কৌশল বাতলে দিতে। অহিংস থেকেও বাকশালীদের ভীত নাড়িয়ে দেয়া যায়। চাই প্রজ্ঞা, বুদ্ধি ও কৌশল। এবার তবে নামুন মশাই !
নইলে সরকারের সাথে গোপন আঁতাত করে আপনি হয়তো বাঁচবেন। কিন্তু আগামী প্রজন্ম...আপনার সন্তান?
বিষয়: রাজনীতি
২২৬৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সময়োপযোগী গঠনমূলক লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
এই দেশে কিছু এজিটেটর নেতাই জনপ্রিয় হয়। আর সাধারন মানুষ তাদের দারা ভুল পথে পরিচালিত হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন