এক নজরে জেনে নিন ইসলাম অবমাননার শরিয়া এবং প্রচলিত আইনে শাস্তি
লিখেছেন লিখেছেন সত্যকথা ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:০২:২৮ বিকাল
ইসলামের ৫ টি রজ্জুর অন্যতম পবিত্র হজ্ব নিয়ে কুলাঙ্গার মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি জঘন্য মন্তব্য করেছেন।আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর পারিবারিক এবং রাজনৈতিক পরিচয় সবাই জানে। সাথে সবাই জানে কতটা বেয়াদব এই স্টুপিড মন্ত্রী।সিব সটুপিডিটি মেন নেয়া যায় না। গত রোববার নিউ ইয়র্কে স্থানীয় টাঙ্গাইল সমিতির এক অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী।’ ওই ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায়, ‘এ হজে যে কতো ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। এই হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গেছেন। এদের কোনো কাজ নাই। কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু ডিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা বিদেশে দিয়ে আসছে।
আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি আরও বলেন ‘আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করল এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কীভাবে চলবে? তারাতো ছিল ডাকাত। তখন সে একটা ব্যবস্থা করলো যে আমার অনুসারীরা প্রতিবছর একবার একসঙ্গে মিলিত হবে। এরমধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে।’
Key Point: লতিফ সিদ্দিকীর কথাগুলো পয়েন্ট আকারে সাজিয়ে নিন। মুখস্ত রাখতে সুবিধা হবে।
01. ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী।
02. আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী।
03. এ হজে যে কতো ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়।
04. এই হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গেছেন। এদের কোনো কাজ নাই।
05. কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু ডিডাকশন দিচ্ছে।
06. শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা বিদেশে দিয়ে আসছে।
07.‘আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করল এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কীভাবে চলবে? তারাতো ছিল ডাকাত। তখন সে একটা ব্যবস্থা করলো যে আমার অনুসারীরা প্রতিবছর একবার একসঙ্গে মিলিত হবে। এরমধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে।’
বিরোধী। আমি কোন মুফতি নই। কোন ফতোয়া দেয়ার অধিকার আমার নেই। আর ফতোয়া জানলেও তা বলা সমিচীন হবে কি? কারণ লতিফ সিদ্দীকিরা ফতোয়া নিয়ে ইতোমধ্যে আইন জারি করেছে। ইসলাম নিয়ে যতটুকু পড়েছি সেখানে মুরতাদের সংজ্ঞা এভাবে পেয়েছি:
মুরতাদ বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে যে প্রথমে মুসলমান ছিল। তারপর ইসলামের যে কোন জরূরিয়্যাতে দ্বীন অস্বিকার করে কাফের হয়ে গেছে। উক্ত ব্যক্তির নাম মুরতাদ। আর যে ব্যক্তি মুরতাদ সে কাফেরও হয়ে যায়।
এখানে একটি বিষয় বুঝে রাখতে হবে যে, কাফের মানেই মুরতাদ নয়। কিন্তু মুরতাদ মানেই কাফের। পার্থক্যটা এজন্য যে, কোন ব্যক্তি প্রথমে মুসলমান না হয়ে যদি শুরুতেই ইসলামের আবশ্যকীয় কোন বিষয় অস্বিকার করে, তাহলে সে কাফের। কিন্তু মুরতাদ নয়। কিন্তু যে ব্যক্তি মুসলমান থেকে তারপর কুফরী কাজ করে কাফের হয়, সে হল মুরতাদ। সাথে সাথে কুফরী কাজ করার দ্বারা কাফেরও।
মুরতাদের শাস্তি হল মৃত্যুদন্ড
মুরতাদকে প্রথমে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হবে। যদি না মানে, তাহলে তাকে হত্যা করা হবে।
عن عائشة قالت : ارتدت أمرأة يوم أحد فأمر النبي صلى الله عليه و سلم أن تستتاب فإن تابت وإلا قتلت
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। ওহুদ যুদ্ধে এক মহিলা মুরতাদ হয়ে যায়,তখন রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন,তাকে তওবা করানো হোক,আর যদি তওবা না করে,তাহলে তাকে হত্যা করা হবে। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১২১, সুনানে বায়হাকী কুবরা,হাদীস নং-১৬৬৪৫,মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক,হাদীস নং-১৮৭২৫,মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,হাদীস নং-২৯৬০৭}
عن جابر أن امرأة يقال لها أم مروان ارتدت عن : الإسلام فأمر النبي صلى الله عليه و سلم أن يعرض عليها الإسلام فإن رجعت وإلا قتلت
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। উম্মে মারওয়ান নামের এক মহিলা মুরতাদ হয়ে গেলে রাসূল সাঃ আদেশ দেন যে,তার কাছে ইসলাম পেশ করতে,যদি সে ফিরে আসে তাহলে ভাল, নতুবা তাকে হত্যা করা হবে। {সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী,হাদীস নং-১৬৬৪৩,সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১২২}
এখন প্রশ্ন হলো বাংলাদেশে তো ইসলামী আইন কায়েম নেই। কি হবে তাহলে? তাহলে আসুন জেনে নেই বাংলাদেশে প্রচলিত আইন কি?
বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ২৯৫ক ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অসদুদ্দেশ্যে লিখিত বা মৌখিক বক্তব্য দ্বারা কিংবা দৃশ্যমান অঙ্গভঙ্গি দ্বারা সংশ্লিষ্ট ধর্মটিকে বা কারো ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবমাননা করে বা অবমাননার চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৮৬০ সালের মূল আইনে এ ধারাটি ছিল না। পরবর্তীতে ১৯২৭ সালে এক সংশোধনীর মাধ্যমে এ ধারাটি যুক্ত করা হয়।
প্রমাণের বিষয়
এই ধারার অভিযোগ প্রমাণ করতে হলে:
ক. অভিযুক্ত ব্যক্তি কিছু বলেছিলেন বা কোনো শব্দ লিখেছিলেন বা কোন ভাবভঙ্গি করেছিলেন।
খ. অভিযুক্ত ব্যক্তি ওইরকম কাজ করে কোনো ধর্মকে বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননা করেছিলেন।
গ. অভিযুক্ত ব্যক্তি উক্ত শ্রেণির ধর্মীয় অনুভূতিতে কঠোর আঘাত আনার অভিপ্রায়ে ইচ্ছাকৃত এবং বিদ্বেষাত্মকভাবে করেছিলেন।
এ বিষয়ে উচ্চতর আদালতের সিদ্ধান্তসমূহ
(১) কোনো কাজ ইচ্ছাকৃত হতে পারে কিন্তু বিদ্বেষাত্মক নাও হতে পারে। ২৯৫ক ধারার অপরাধের জন্য এ দুই প্রকার অভিপ্রায়ই থাকা প্রয়োজন। অন্য কথায়, জেনে, শুনে, দেখে, বুঝে এবং বিদ্বেষাত্মকভাবে যে ব্যক্তি কোন ধর্মকে আঘাত করে, সেই ব্যক্তি এই ধারায় দোষী হয়
(২) বিদ্বেষ বলতে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অকল্যাণ কামনা করা বোঝায়। এটাই এই শব্দের সাধারণ অর্থ। কিন্তু আইনে বিদ্বেষাত্মকভাবে বললে অন্যের ক্ষতিজনক কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে করাকে বোঝায়। যখন কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের ক্ষতিকর কোনো কাজ করেন, তখন তিনি বিদ্বেষাত্মকভাবে কাজ করেছিলেন বলে ধরা হয়। সাধারণভাবে বিদ্বেষ বলতে গেলে অন্যের সাথে শত্রুতা বা অন্যের বিরুদ্ধে অমঙ্গল কামনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু আইনের ভাষায় বিদ্বেষাত্মক বলতে অন্যের ক্ষতি হতে পারে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কাজ করা বোঝায় ।
(৩) অন্য ব্যক্তি তার ধর্ম আক্রমণ করেছেন বলে তিনি ঐ ব্যক্তির ধর্মের বিরুদ্ধে অবমাননাকর কিছু লিখেছেন, এই অজুহাতও আইনে গ্রহণযোগ্য নয় ।
(৪) ধর্ম প্রবর্তক, প্রচারক এবং মুনী-ঋষীদের সম্পর্কে কটাক্ষ করা বা তাদের ব্যক্তিগত জীবনের কুৎসা কাহিনী বর্ণনা করা বা প্রচার করা এই ধারানুযায়ী অপরাধ (লাহোর বনাম সম্রাট)।
(৫) ২৯৫ক ধারার উপাদান তখনই পূর্ণ হয় যখন এটা প্রতিষ্ঠিত হয় যে পরিকল্পিতভাবে এবং বিদ্বেষত্মাকভাবে কোনো ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে। যখন কোনো ধর্মকে ধর্মীয় চেতনা অবমামনা করার জন্য আপত্তি করা হয় এবং এমন কোন নির্ভরযোগ্য বিষয় থাকে না যার উপর ভিত্তি করে তাকে সমর্থন করা যায় তখন আদালত এটা অনুমান করে নিতে পারে যে, এটা পরিকল্পিতভাবে এবং বিদ্বেষাত্মকভাবে করা হয়েছে।
নিজে কোন মন্তব্য করলাম না। শরীয়া আইন এবং বাংলাদেশের প্রচলিত আইন পড়ে আপনিই বলুন এই কুলাঙ্গারকে কি করা দরকার?
ফুটনোট: আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাজ্জ (হজ্জ) করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত রইল, সে নবজাতক শিশু, যাকে তাঁর মা এ মুহূর্তেই প্রসব করেছে, তার ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে। (বুখারী শরিফ: হাদীস নং ১৪৩১)
বিষয়: বিবিধ
১২৩৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
======================
এটা আবার কোন কুলাঙ্গার? কোন লতিফের বাচ্চারে?
বিদেশ এসে, হজ্বের নামে, তাবলীগের নামে, এসব কথা বলেরে !
বুকের ভিতর আঘাত দিলি, মুসলমানের বাচ্চা তুই !
হজ্বে যাবি না আবার নিউয়র্ক যাবি, বড্ড বড় পাঁজি তুই !
হজ্বে যাই, টাকা ঢালি বিনিময়ে কি পাই জানিস?!
ভাতৃত্ববোধ ত্যাগ ভালোবাসা! দুরে চলে যায় শয়তান ইবলিশ!
মাদ্রাসা মসজিদ বা রাজস্বখাতে টাকা দিলে তুই কি খুশি??আল্লাহ তায়ালা তার চেয়ে বেশি খুশি হয়! দেশের জন্য জীবন কুরবানী তাও তো ঐ হজ্বই শিখায়!!
তুই হজ্বে যাবি ক্যান, কৃপন রে তুই, হজ্বটা করে এসেই দেখ! জান্নাতী ফুল ফুটবে মনে, উঠবে হেসে বুঝবি তখন মনের আবেগ
সুন্দর পোষ্টটির দ্বারা অনেক কিছুই জানতে পারলাম।
শুনলাম লতিফকে নাকি মন্ত্রীসভা থেকে জয়ের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কথা বলার জন্য অপসারণ করা হয়েছে!!
তাহলে আর ব্যাটাকে মন্ত্রী বলা কেন?
আপনার লেখাটির জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমরা তো অক্ষম হয়ে পড়ে আছি- তবে আল্লাহতায়ালা সাধারণতঃ এমন অপরাধের শাস্তি না দিয়ে কাউকে দুনিয়া থেকে তুলে নেন না
অপেক্ষা করি... ইনশাআল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন