বদর যুদ্ধের প্রস্তুতি সভায় হযরত মিকদাদ ইবনে আমর ও হযরত সাদ ইবনে মুআয (রা) এর বিখ্যাত ভাষণ ...... ==========================
লিখেছেন লিখেছেন শান্ত জুবায়ের ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:৩২:৩৯ দুপুর
বদর যুদ্ধের চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেবার সংকল্প করেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওসাল্লাম আনসার ও মোহাজিরদের একত্র করলেন। তাদের সামনে পরিস্থিতি পরিস্কার তূলে ধরলেন।
একদিকে উত্তরে বাণিজ্য কাফেলা এবং অন্যদিকে দক্ষিনে এগিয়ে আসছে কুরাইশদের সেনাদল। আল্লাহর ওয়াদা এ দুটির মধ্য থেকে কোন একটি তোমরা পেয়ে যাবে।
তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ বলো, এর মধ্য থেকে কার মোকাবিলায় তোমরা এগিয়ে যেতে চাও? জবাবে বিপুল সংখ্যক সাহাবী মত প্রকাশ করলেন, কাফেলার ওপর আক্রমণ চালানো হোক।
কিন্তু নবী (সা) এর সামনে ছিল অন্য কিছু অভিপ্রায়। তাই তিনি নিজের প্রশ্নের পুনরাকৃত্তি করলেন। একথায় মোহাজিরদের মধ্য থেকে মিকদাদ ইবনে আমর (রা) উঠে বললেনঃ
-------------------------------
“হে আল্লাহর রসূল! আপনার রব আপনাকে যেদিকে যাবার হুকুম দিচ্ছেন সেদিকে চলুন। আপনি যেদিকে যাবেন আমরা আপনার সাথে আছি।
আমরা বনী ইসরাঈলের মত একথা বলবো নাঃ যাও তুমি তোমার আল্লাহ দুজনে লড়াই করো, আমরা তো এখানেই বসে রইলাম।
বরং আমরা বলছিঃ চলুন আপনি ও আপনার আল্লাহ দুজনে লড়ুন আর আমরা ও আপনাদের সাথে জানপ্রাণ দিয়ে লড়াই করবো।
যতক্ষণ আমাদের একটি চোখের তারাও নড়াচড়া করতে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত” ।
কিন্তু আনসারদের মতামত না জেনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভবপর ছিল না।
কারণ এ পর্যন্ত যেসব সামরিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল তাতে তাদের সাহায্য গ্রহণ করা হয়নি এবং প্রথম দিন তারা ইসলামকে সমর্থন করার যে শপথ নিয়েছিল তাকে কার্যকর করতে তারা কতটুকু প্রস্তুত তা পরীক্ষা করার এটি ছিল প্রথম সুযোগ।
সুতরাং রসূলুল্লাহ (সা) সরাসরি তাদেরকে সম্বোধন না করে নিজের কথার পুনরাবৃত্তি করলেন ।
একথায় সাদ ইবনে মুআয উঠে বললেন, সম্ভবত আপনি আমাদের সম্বোধন করে বলছেন? জবাব দিলেনঃ হাঁ। একথা শুনে সাদ বললেনঃ
----------------------------
“আমরা আপনার ওপর ঈমান এনেছি। আপনি যা কিছু এনেছেন তাকে সত্য বলে ঘোষনা করেছি।
আপনার কথা শুনার ও আপনার আনুগত্য করার দৃঢ় শপথ নিয়েছি। কাজেই হে আল্লাহর রসূল! আপনি যা সংকল্প করেছেন তা করে ফেলুন।
সেই সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন, আপনি যদি আমাদের নিয়ে সমুদ্রে ঝাঁপ দেন তালে আমরাও আপনার সাথে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়বো।
আমাদের একজনও পিছনে পড়ে থাকবে না। আপনি কালই আমাদের দুশমনদের সাথে যুদ্ধ শুরু করুন।
এটা আমাদের কাছে মোটেই অপছন্দনীয় নয়। আমরা যুদ্ধে অবিচল ও দৃঢ়পদে থাকবো।মোকাবিলায় আমরা সত্যিকার প্রাণ উৎসর্গীতার প্রমাণ দেবো।
সম্ভবত আল্লাহ আমাদের থেকে আপনাকে এমন কিছু কৃতিত্ব দেখিয়ে দেবেন, যাতে আপনার চোখ শীতল হবে। কাজেই আল্লাহর বরকতের ভরসায় আপনি আমাদের নিয়ে চলুন”।
(তথ্য সুত্র ; সুরা আনফাল ,তাফহিমুল কুরআন )
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন