একজন সাজেদা+রুমনের একটি অসমাপ্ত প্রেমের গল্প
লিখেছেন লিখেছেন এ এম ডি ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৫:৫২:৩১ বিকাল
রুমন তখন কেবল মাত্র ইন্টার পরিক্ষা দিয়েছে বয়সি বা তার কি হবে যতদুর মনে হয় তখন রুমনের পরিক্ষার রেজাল্ট বের হয় নায়।
তবু রুমন চুপ করে বসে নাই ছোট একটি চাকুরি নিল । রুমনের সংসারে ওরা দুই ভাই কোন বোন নাই । রুমন সংসারের বড় ছেলে
রুমনের বাবার চায়ের দোকান ছিল । বেশ ভালই দিন চলতেছিল রুমনদের ।
একদিন শুক্রুবার বিকেলে রুমন তাদের চায়ের দোকানে বসে দোকান দারী করতেছিল এমন সময় রুমনের কাছে চা নিতে এলো তাদের পাশের বাড়ির সাজেদা ।
সাজেদাকে ছোট থেকেই একটু অন্য চোখে দেখে কিন্তু কখন বলা হয় নাই তাকে । যাই হোক ঐ দিন কার মত সাজেদাকে চা দিয়ে দিলো রুমন সাজেদা রুমনকে চায়ের দাম দিয়ে চায়ের মগটি হাতে নিয়ে চলে গেল । যাবার সময় রুমন কিছু বলতে চেয়েও কেন জানি বলতে পারলো না ।
রাতে রুমন শুয়ে বিছানায় একা একা ভাবতেছে সাজেদাকে কত ছোট দেখেছি আর এখন সাজেদা অনেক বড় হয়ে গেছে আর দুই তিন বছর পর ওর বিয়ে হয়ে যাবে ও শশুর বাড়ি চলে যাবে কিন্তু আমার মনের কথা মনেই রয়ে যাবে ওকে বলা হবে না ।
রুমন ভাবছে বসে না অনেক হয়েছে সাজেকা আমি যে ভালবাসি মানে সাজেদাকে আমার না বলা মনের ভেতর পুষে রাখা প্রেমের
কথা এখন ওকে বলার সময় এসেছে ।
এখন না বললে পরে আর বলার সময় পাবো না ।
শনিবার দিন সকালে রুমন অফিসে চলে গেল । ঐ দিন অফিসে কাজের চাপ থাকাতে রুমনকে অফিসে নাইট করতে হয় ।
রবি বার বিকেলে রুমনের অফিস ছুটি হয়েগেল সে বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে বিকেলের নাস্তা করে তাদের বাসার সামনে একটি খালি মাঠ ছিল সেখানে একটি চেয়ার নিয়ে বসে হাতে একটি গল্পের বই নিয়ে পড়তে ছিল ।
হঠাৎ রুমনের চোখ পড়লো সাজেদাদের জানালার দিকে রুমন চেয়ে দেখে এক পলকে সাজেদা রুমনের দিকে তাকিয়ে আছে যেন রুমকে সাজেদা কিছু বলবে । রুমনো গল্প পড়া বাধ দিয়ে অনেকক্ষন এক ধ্যানে সাজেদার দিকে তাকিয়ে রইল ।
মাগরিবের সময় হয়ে গেল বাসার ভেতর থেকে রুমনকে ডাক দিলেন তার মা । রুমনকে তার মা বললেন বাবা রুমন একটু দোকানে যাও নামাজের সময় হয়ে গেছে তুমি দোকানে বসলে তোমার বাবা নামাজে যাবেন ।
রুমন তারাতারি দোকানে চলেগেলেন । রুমনকে দেখে বাবা বললেন বাবা একটু দোকানে বস আমি নামাজ পড়ে আছি । ঠিক আছে আপনি নামাজে যান আমি দোকানে বসতেছি । রুমন দোকানে উঠে বসলো আর ওর বাবা নামাজে চলে গেল ।
রুমন দোকানে বসার কিছুক্ষন পরেই সাজেদা এলো চা নিতে । এসে প্রথমে রুমনকে বললো রুমন ভাই ভালো আছেন হ্যা সাজেদা ভালো আছি তুমি ভালো আসো সাজেদা হ্যা রুমন ভাই ভালো আছি ।
তা কি মনে করে দোকানে এলে সাজেদা কি আর মনে করে আসবো রুমন ভাই আপনাদের দোকানে আসা মানে একটিই কারন আর তা হলো চা নেওয়া দেন দেহি দশ টাকার চা দেন ।
বাহ সাজেদা তুমি দেখছি শধু বড়ই হও নাই তোমারত কথার বেশ খই ফুটেছে । কেন রুমন ভাই আপনে কি মনে করছেন সারা জীবন মানুষ এক রকমই থাকে ।না সাজেদা তা কেন মনে করবো ।
যাক রুমন বেশি কথা কইয়া লাভ নাই তারাতারি চা দেন চা লইয়া বিদায় হই ।
কেন সাজেদা বিদায় হওয়ার কি হইলো আমি আর তোমাকে আমার ঘরে নেওয়ার চিন্তা করতেছি কি বললেন রুমন ভাই না কিছুনা ।
তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে একটু সময় করে দুই একদিনের ভিতরে আমার সাথে তুমি দেখা কইরো ।
সাজেদা রুমনের কথা শুইনা একটু লাজুক হাঁসি দিয়ে তারে কইলো রুমন ভাই অত দেখা করার সময় নাই আর কথা শুনার কাম নাই
দুজনে কথার মাঝে রুমন দেখতে পেল তার বাবা আসতেছে তাই রুমন তারাতারি করে সাজেদাকে চা দিয়ে বিদায় করে দিল ।
সমবার রুমনের অফিসে কাজ কম থাকায় সে দুপুরের খাবারের পরে অফিস থেকে চলে আসলো ।
রুমন বাসায় এসে তার একটা ভাগ্নি ছিল ওর সাথে আবার সাজেদার সম্পর্ক ভালো ছিল । রুমন তাকে ডাক দিয়ে চুপ করে বল্ল আম্মু আমার একটা কাজ করে দিতে পারবি সে বললো কি কাজ মামা রুমন বললো ছোট একটি কাজ দেখিছ কেউ যেন আবার না জানে । ঠিক আছে মামা কেউ জানবে না বলো এখন তোমার কাজটাকি আম্মু দেখতো তোমার সাজেদা আঙটি বাসায় আছে না কোচিং করতে গেছে যোদি বাসায় থাকে তাহলে আমার সাথে এখনি একটু দেখা করতে বলবে । ঠিক আছে মামা আমি এখনই যাচ্ছি বলে চলে গেল রুমনের ভাগ্নি ।
১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে ভাগ্নি এসে রুমনকে বলসে মামা সাজেদা আঙটি এসেছে সে তোমার জন্য মাঠে অপেক্ষা করছে ।
আচ্ছা ঠিক আছে আম্মু তুমি এখন পড়তে বস মামা একটু তোমার আঙটির সাথে দেখা করে আছি ।
আচ্ছা মামা সাজেদা আঙটিকে আমি মামি বলে ডাকলে তোমার কোন সমস্যা হবে এ কেমন কথা আমার সমস্যা হবে কেন দেখ তোর সাজেদা আঙটির কোন সমস্যা না হলে আমার কোন সমস্যা হবে না ।তবে তুই আবার সকলের সামনে তাকে মামি বলে ডাকিছ না ।
বলে রুমন চলে গেল সাজেদার সাথে দেখা করতে ।
সাজেদা মাঠের এক কোনে দাড়িয়ে আছে রুমন তার পাশে দাড়ালো দুজনে চুপ কেও কাউকে কিছু বলছে না ।সাজেদা হঠাৎ বলে ওঠলো কি বেপার রুমন ভাই কিছু বলছেনা দেখি কি বলে বলবেন তার জন্য নাকি আমারে দেখা করতে বলছেন ।তা বলুন না রুমন ভাই কি বলবেন আমার হাতে আবার সময় কম তা ছাড়া আমাদের দুজনকে এক সাথে কেউ দেখলে বুঝেনতো হয়েছে । রুমন চিন্তায় পরে গেল কেমন করে সাজেদাকে তার ভালবাসার কথা বলবে ।
রুমন ও সাজেদা ওদের দুজনের মধ্যে চোখের ভাষায় প্রেমের কথা চলছে এখনো মুখে ফুটে বলতে পারেন নাই সাজেদাকে তার ভালবাসার কথা ।
দুজনের কথার মাঝে হঠাৎ করে রুমনের ভাগ্নি চলে আসলো । রুমন ভাগ্নিকে দেখে সাজেদাকে তার ভালবাসার কথা বলার আইডিয়া পেল।
রুমন সাজেদাকে বললো সাজেদা আমার ভাগ্নি তোমাকে তার মামি বানাতে চায় যদি তোমার কোন আপত্তি না থাকে তুমি কি বলো ।
সাজেদা রুমনকে বললো রুমন ভাই আমাকে একটু ভাবতে সময় দিন আমি আপনাকে দুদিন পরে জানাই । ঠিক আছে তোমাকে দুদিনের সময় দিলাম তাহলে দুদিন পরে তুমি আমাকে জানাবে । ঠিক আছে রুমন ভাই বলে সাজেদা চলেগেল তার বাসায় রুমন চলে গেল রুমনের বাসায় ।
রুমন সময় গুনতে শুরু করে দিল সমবারে কথা হয়েছে সাজেদার সাথে । সাজেদা হাতে সময় নিয়েছে দুইদিনের । রুমন বুধবার একবার চিন্তা করে ভাগ্নিকে ডাক দিয়ে বলবো সাজেদাকে ডেকে আনতে নাকি আর একদিন সময় দিবো রুমনের মনে নানান ধরনের প্রশ্ন জাগে সাজেদা কি তাকে ভালবাসবে নাকি তাকে ফিরিয়ে দিবে।
রুমনের এই ভাবনার ভিতরে কিছুক্ষন পরে তার ভাগ্নি আসলো তার কাছে ভাগ্নি এসে বলছে মামা সাজেদা আঙটি কালকে তোমাকে তার সাথে দেখা করতে বলছে । রুমন ভাগ্নির মুখে এ কথা শুনার পরে মনে কিছুটা আসার বানী শুনতে পেলেন ।
রুমন বৃঃপতিবার সকালে অফিসে চলে গেলেন । মনে আনন্দ নিয়ে সারাদিন কাজ করলেন বিকেলে অফিস ছুটি হলো বাসায় ফিরলেন ।
বাসায় ডুকার আগে রুমনের চোখ দুটি একবার সাজেদাদের বাসার দিকে পড়লো সে দেখলো সাজেদাদের বাসার সামনে বেশ কিছু মানুষের ভির ।
রুমন বাসার ভিতর ডুকে তার রুমে প্রবেশ করলেন রুমন অফিসের পোশাক চেঞ্জ করলেন ।
এরই মধ্যে রুমনের ভাগ্নি রুমনের কাছে এলো । রুমন ভাগ্নির দিকে তাকিয়ে দেখে ভাগ্নির মুখটা অন্ধকার । রুমন ভাগ্নিকে জিজ্ঞাসা করলো কিরে মা কি হয়েছে তোর মা বকেছে ভাগ্নি কোন জবাব দেয়না ।
এভাবে রুমন ভাগ্নিকে কয়েকবার জিজ্ঞাসা করার পরে ভাগ্নি উত্তর দিলেন কেন মামা বাসায় ডুকার আগে কিছু শুনো নাই রুমন বললো কই নাতো ।
ভাগ্নিকে জিজ্ঞাসা করলো কেনরে মা কি হয়ছে ।
এ কথা বলতেই ভাগ্নির চোখ থেকে দুই গাল বেয়ে চোখের নোনা জ্বল পড়তে শুরু করে ।
আর ভাগ্নি রোমনকে বলে মামা সাজেদা আঙটি আর নেই । রুমন বলে মানে আজ বিকেলে সাজেদা আঙটি রিক্সায় করে কোচিং শেষ করে যখন বাসায় ফিরছিলেন তখন তার রিক্সার পিছন দিক থেকে একটি বড় গাড়ি আঘার্ত করে ওখানেই রিক্সার ড্রাইবার মারা যায় আর সাজেদা আঙটি রিক্সা থেকে ছিটকে পরে অন্য একটি গাড়ির সাথে তার মাথায় আঘাত লাগে তাকে হাসপাটালে নেওয়ার সময় সে মারা যায় ।
রুমন বললো ও মাই গড।।
বিষয়: সাহিত্য
১৭০৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপু আপনিকি সামুতে পোষ্ট দেওয়া বন্ধ করে দিলেন নাকি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন