কম্পিউটার আবিস্কারের তথ্যমূলক কথা
লিখেছেন লিখেছেন এ এম ডি ০৪ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:০৮:২৭ দুপুর
আমরা অনেকে জানলেও অবশ্য আবার অনেকে জানি না কম্পিউটার আবিষ্কারের কথা ।
কম্পিউটার কিন্তু হঠাৎ করেই আবিস্কার হয় নায় । এইযে আজ আমরা কত আধুনিক
কম্পিউটার ব্যবহার করেছি তা কিন্তু একদিনে বা একহাজার দিনেও হয়নি ।
এর জন্য আমাদের কয়েক শতক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে । তবে হ্য আর অন্য আবিস্কারের সময় সীমা তুলনায় কম্পিটারে বেশি সময় লেগেছে ।কম্পিউটার সম্পর্কে প্রথমে ধারণা লাভ করে চীন । আর সে সময় চিনে এক ধরনের গননা যন্ত্র ব্যবহার করা
হতো তার নামঃ ছিল এ্যাবাকাস (Abacus) । আর সেতাউ ব্যবহার করা হতো প্রায় তিন হাজার বছর আগে ।
এ্যবাকাস হলো এক ধরনের গ্রীক শব্দ । এর মানে হচ্ছে এটি একটি গননা যন্ত্র । এই এ্যবাকাস থেকেই মানুষের মাথায় ক্যালকুলেটার আবিস্কারের চিন্তা ডুকে । এ্যবাকাসে বেশ কিছু ছোট গোল পাথর লম্বা দন্ডের সাথে সংযুক্ত থাকে । দন্ডের সাথে সংযুক্ত পাথর গুলো চাইলে উপরে নিচে বা চার পাশে গুরানো যায় । আর এ্যবাকাসের প্রতেকটি দন্ডে পাচঁটি করে গোল পাথর ছিদ্র করে ডুকিয়ে দেওয়া হয় ।
এ্যবাকাসের নিচে দশ দন্ডের একটি চেম্বার আছে আর তাতে প্রতেকটি দন্ডে দুটি করে গোল পাথর দেওয়া থাকে ।উপরের চেম্বার আর নিচের চেম্বারের বল গুলো দিয়ে সমম্বয়ে পাথর গুলোকে উপর নিচ বা গুরিয়ে গননা কাজ করা হোত । তাতে সময় বেশি লাগলেও কাজ হতো নিখুত । এখন এ্যবাকাস ব্যবহার করছে চীন এবং আমদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে।
আর এই এ্যবাকাস থেকেই ক্যালকুলেটারের তৈরি । ল্যাটিন ভাষায় ক্যালকুলাসকে (Calculas) কে ছোট পাথর বলে । আর এই ক্যালকুলাস থেকেই ক্যালকুলেটারের নাম।
এ্যবাকাস থেকে পথম আবিস্কার (calculator) ক্যালকুলেটার আর পরবর্তী প্রজম্মে ক্যালকুলেটার থেকে কম্পিউটারের আবিস্কার ।
এ্যবাকাস থেকে প্রথম ক্যালকুলেটার আবিস্কারের চিন্তাভবনা করেন ১৬৪৫ খ্রীস্টাব্দ একজন ফারাসী আবিস্কারক –স্যার ব্লায়াস প্যাসকেল । তিনি উক্ত এ্যবাকাস যন্ত্রের একটি
উন্নতমানের সংস্করণ করেন তৈরি করেন । স্যার ব্ল্যাস উক্ত গণনা যন্ত্রটির নাম দিয়েছিলেন প্যাসকেলাইন (pascaline) এর পরে পেরিয়ে যায় প্রায় পঞ্চাশ ৫০ বছর
আনুমানিক ধারনা করা হয় ১৬৯৪ সালের দিকে স্টেপড রেকোনার (stepped reekoner) নামে উন্নতমানের একটি নতুন গণনা যন্ত্র বানান ।
আর এটি বানান জার্মান বিজ্ঞানী স্যার গটফ্রেড উইলহেম ভন লেইবনিজ (sir Gottfriend Wilhem Von Leibniz) । আর সে যন্ত্রটি দিয়ে অনেক বড় বড় হিসাবের কাজ করা হতো । এর পর আবার পেরিয়ে গেল প্রায় ১২৫ বছর ।
অনুমান করা হচ্ছে ১৮২০ সালের গোড়ার দিকে আরেক বিজ্ঞানী জার্মানীর বিজ্ঞানী টমাস দ্যা কোমার ( Thomas de Colmar) লেইবনিজের সে যন্ত্রটি আর একটু উন্নত সংস্করন করেন । ঠিক এরই মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৮২৩ সালের মাঝামাঝি সমস্ত বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে সত্যিকারের কম্পিউটারের সূত্রপাত ঘটালেন একজন ইংরেজ অংকশানস্ত্রবিদ স্যার চার্লস ব্যাবেজ (Sir Charles Babbage, ১৭৯২-১৮৭১)।
তিনি অংকের বিভিন্ন তথ্যকে সহজ সমাধানের জন্য তৈরি করলেন ভিন্ন মাত্রার গণনা যন্ত্র। আর সে গণনা যন্ত্রের নাম দিলেন তিনি ডিফারেন্স ইঞ্জিন (Difference Engine) ।
স্যার চার্লস ব্যাবেজ এই যন্ত্রটিকে আর গ্রহনযোগ্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধি খাটিয়ে তিনটি অংশ (Store, Mill, Control) যোগ করলেন । আর তখন এটার নাম দেওয়া হলো এ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিন (Analytical Engine) । এর পর থেকেই মানুষ আস্তে আস্তে বুঝতে চেষ্টা করলো হিসাব শুধু করলেই চলবে না তাকে সংগ্রহ বা জমা রাখতে হবে ।
স্যার চার্লস ব্যাবেজই প্রথম তার এ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিনে ব্যবহৃত এক ধরনের পাঞ্চ কার্ডে এই সব ব্যবহিত সমস্ত তথ্যাবলী সংরক্ষনের উপায় আবিস্কার করেন । অবশ্য
সে সময় সে কার্ডটি একবার ব্যবহার করা যেত ।
পরবর্তী সময় স্যার চার্লস ব্যাবেজের এক ছাত্রী লেডি লোভেলেস (Lady Lovelace) ঐ পাঞ্চ কার্ডে আরো নতুন কিছু মাত্রা যোগ করলেন যাতে করে পাঞ্চ কার্ডটি বার বার ব্যবহার করা যায় । আর তাতে ঐ যন্ত্রটি উন্নত বিশ্বের কাছে আর গ্রহন যোগ্য হয়ে উঠে।
এর পর থেকে আস্তে আস্তে উন্নত মানের চিন্তাভাবনাগুলো আর এগিয়ে চলে এবং তারই মধ্যে স্যার চার্লস ব্যাবজের ধারনাকে ভিত্তি করে ১৮৮০ সালে ডক্তর হারম্যান হলোরিথ ( Dr. Hermen Hollerith) নামে একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ট্যাবুলেটর মেশিন (Tabulator Machine) নামে উন্নত মানের গণনা যন্ত্র তৈরি করেন। তার তৈরি ট্যাবুলেটের মেশিন দিয়ে আমেরিকান সেনসাস ব্যুরো অতি অল্প সময়ের মধ্যে সমগ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লোক গণনার কাজ করে । এবং সেই সর্ব প্রথম মানুষের তৈরি কম্পিউটার ব্যবহার করেন। একটি বিশাল কাজ করার প্রচেষ্টার সূত্রপাত ঘটে ।
ড. হারম্যান যাতে করে যন্ত্রটির প্রসারতা ও চাহিদা বাড়ে সে দিকে লক্ষ রেখে ও বিবেচনা করে আর উন্নত যন্ত্র আবিস্কারের লক্ষ্যে একটি কম্পানির সাথে যুক্ত হন এবং নতুন কম্পানী গঠন করেন । সেই কম্পানীর নাম দেওয়া হয় টেবুলেটিং মেশিন কোম্পানী
( Tabulating Machine Company) । আর সে আর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এখনকার বিশ্বখ্যাত কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএম (IBM International Business Machines) নামের প্রতিষ্ঠান । তাই সময়ের উক্ত টেবুলেটিং মেশিন কোম্পানী পরে আইবিএম নামে হয় ।
এর পর থেকে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্রমাগ্রত ভাবে চাহিদা ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আবিস্কারের আগ্রহের কারনে ১৯৪০ সালের গোড়া থেকে ১৯৭০ সাল পযন্ত তৈরি করা হয় একের পর এক উন্নত মানের বা উন্নত প্রযুক্তির কম্পিউটার ।
কিন্তু আজকে আমাদের টেবিলে যে ডিজিট্যাল কম্পিউটার তা ১৯৭০ এর অনেক পরে আছে । এক কথায় বলা যায় সত্তর দশক থেকে আধুনিক কম্পিউটারের আবিস্কার হয়ে
থাকলেও তা সাধারন মানুষের হাতের লাগালের বাহিরে ছিল ।
মোটামুটি ভাবে আশির দশকের মাঝামঝি সময় এসে সাধারন মানুষের হাতে আসতে থাকে ।]
বিষয়: বিবিধ
১১৪১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তথ্য সমৃদ্ধ পোস্টের জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই।
এতো তথ্য জানা ছিল না।
ঈদের শুভেচ্ছা থাকলো ঈদমুবারক ।
অনাবিল সুখের উৎস হয়ে থাকুক এই ঈদ সবার জীবনে..... এই শুভ কামনা রইলো।
আপনাকেও ঈদ মোবারক ভাইয়া....।
তথ্য সমৃদ্ধ পোস্টের জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই। এতো তথ্য জানা ছিল না।
আসলেই। অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি বিষয় শেয়ার করার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ব্যবহারের নাগালে এসে গেলে আবিস্কারের কাহিনী মানুষ মনে রাখেনা - এটাই বাস্তবতা
স্মরণ করানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
ঈদের শুভেচ্ছা- কুরবানী ও ঈদ মোবারক
ত্যাগের আলোয় ব্যক্তি ও সমাজ জীবন আলোকিত হোক
মন্তব্য করতে লগইন করুন