ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে কামাল আতাতুর্কের ইসলাম নিশ্বেস করনের ইতিহাস এবং হাসিনার শাষনের অঘাত মিল ! কালো ইতিহাসের দোর গোড়ায় আমরা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৪ মে, ২০১৭, ০২:১৮:৩৪ দুপুর

রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করে তুরস্কে কি করা হয়েছিলো ?

পশ্চিমা বিশ্বে মোস্তফা কামাল পাশাকে তুরস্কের জাতীয় নেতা বলে বিশেষ

গুরুত্ব দেওয়া হয়।

কিন্তু প্রকৃত ইতিহাস কী বলে? তা বোঝার জন্য সে কিভাবে ইসলামবিদ্বেষী ও ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডসমুহ বাস্তবায়ন করেছিল তার বিবরণ দেয়া

হল

১.১৯২৪ সালে কামাল ওয়াকফ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইমাম, মুযাজ্জিন ও আলেমদের অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে ।

২. ১৯২৫ সালে বিদ্যালয় হতে কুরআন ও ধর্মশিক্ষা দেওয়া বন্ধ করে দেয়

৩. কামালের মতে, প্রত্যেক আলেম ও দরবেশই নতুন শাসনতন্ত্রের শত্রু। আলেম ও দরবেশদের কর্মক্ষেত্র ষড়যন্ত্র ও কুসংস্কারের বিকাশ ক্ষেত্র ।এজন্য সে ১৯২৪ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর সব তেক্কা (মাজার ও কবর) ও তুর্বা (খানকা) বন্ধ এবং দরবেশ প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে ।

৪. শায়েখ, দরবেশ প্রভৃতি উপাধি ও তাদের রীতিনীতি গ্রহণ, এমনকি তাদের বিশেষ পোশাক পরিধানও দন্ডনীয় বলে ঘোষনা করে ।

৫. এখনও তুরস্কের মসজিদে হুজুররা প্রচলিত সুন্নতি লেবাস পড়ে নামাজ পড়ান না । তারা কোর্ট প্যান্ট পড়ে নামাজ পড়ান ।

৬.হিজরী ক্যালেন্ডার তার কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল । এজন্য ১৯২৫ সালের

২৬শে ডিসেম্বর তারা হিজরী সনের পরিবর্তে ইংরেজদের তৈরী করা ক্যালেন্ডার (গেগ্রিয়ান ক্যালেন্ডার) চালু করে ।

৭.ইসলামে মূর্তি অগ্রহণযোগ্য । তারপরও ১৯২৬ সালের ৩রা অক্টোবর ইস্তাম্বুলে কামালের মর্মর পাথরের তৈরী মূর্তি স্হাপন করা হলো।

তুরস্কে এ দৃশ্য সর্বপ্রথম। ১৯২৬সালের ৪ঠা নভেম্বর আঙ্কারার যাদুঘরের সম্মুখে আরও একটি মূর্তি স্থাপিত হলো। এভাবে তুরস্কের সর্বত্র তার মুর্তি স্হাপন করা হলো ।

৮. এখন তুরস্কে প্রায় স্কুলে তার মুর্তি ও ছবি সাভাবিক ব্যাপার । ছাত্র-ছাত্রীদের তার ছবি আঁকা বা মুর্তি বানানো পাঠ্যসুচীর অংশ ।(বাংলাদেশের

ক্ষেত্রে মুর্তিকে ভাস্কর্য বলা হয় )

৯.পারিবারিক আইনই ছিল ইসলামী আইনের সর্বশেষ ধ্বংসাবশেষ। নতুন দেওয়ানী আইন প্রবর্তিত হওয়ায় তাও বাতিল হয়ে গেল।

১০.রার্ষ্ট্রকে সম্পূর্ণভাবে ধর্মহীন করার পথে আর দুটি বাধা ছিল। ১৯২৮ সাল পর্যন্ত ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম বলে স্বীকৃত ছিল এবং একটি আলাদা

ধর্মীয় বিভাগের অস্তিত্ব ছিল।

১১. ১৯২৮ সালের ১০ এপ্রিল সংবিধান হতে ধর্ম সংক্রান্ত সব কথাই বাদ দেয়া হলো। এর ফলে ইসলাম আর তুরস্কের রাষ্ট্রধর্ম রইল না।

১২.প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী- পুরুষ ইচ্ছানুযায়ী ধর্ম পরিবর্তন করার অধিকার ও বিয়ে করার সুযোগ পেল।

১৩. ১৯২৮ সালের ৩রা অক্টোবর আরবীর অক্ষরের বদলে ল্যাটিন বর্ণমালায় (ইংরেজী বর্ণমালা ল্যাটিন বর্ণমালায় লেখায় হয়) তুর্কি ভাষা

লেখার চালু করা হলো । অনেক আগের থেকেই তুর্কি ভাষা আরবী অক্ষর ব্যবহার করে লেখা হতো ।

১৪.১৯৩৪ সালের ২৬শে নভেম্বর একটি আইনের মাধ্যমে সব তুর্কি নাগরিককে আহমদ, মুস্তফা প্রভৃতি আরবী নাম রাখা নিষিদ্ধ হলো ও

যাদের এধরনের নাম ছিল তা বাদ দিয়ে প্রাচীন তুর্ক নাম গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হলো এবং বে, আগা, পাশা, হানুম, এফেন্দি প্রভৃতি আরবী- ফারসী পদবি ও উপাধি বাতিল করা হলো।

১৫. কামাল নিজেও মুস্তফা নাম ও গাজী উপাধি ত্যাগ করে আতাতুর্ক (তুর্কদের জনক) ও ইসমত ইনোন (ইনোনুর যুদ্ধ জয়ী) উপাধি গ্রহণ

করলো। ২৪শে নভেম্বর মহাসভার এক অধিবেশনে কামাল এই নতুন উপাধিতে ভূষিত হল ।

১৬.১৯২৫ সালের ২৫শে নভেম্বর ফেজ ও পাগড়িকে জাতীয় পোশাক হিসেবে বাতিল করা হয় এবং হ্যাটসহ ইউরোপীয় পোশাক পরিধান

বাধ্যতামূলক করে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গ্রহণ করা হয়।

১৭. ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী সালাম দেওয়াও নিষিদ্ধ করা হয় । এর পরিবর্তে সুপ্রভাত (Good Morning) বিদায় (Good Bye) ও হ্যান্ডশেক রেওয়াজ প্রবর্তিত হলো।

১৮.১৯৩৫ সালে মসজিদের বাইরে ইমাম- মুফতীদের পাগড়ি ও জুব্বা পরা নিষিদ্ধ হয়ে গেল। শুধু ইমামতি করার সময়ই ধর্মীয় পোশাক পরার অনুমতি মিলল। কামাল বলল, “পায়ে জুতা, উপরে প্যান্ট, ওয়েস্ট কোট, শার্ট, টাই, কোট এবং সর্বোপরি এদের সাথে মিলিয়ে রৌদ্র প্রতিরোধক হ্যাট তা হবে আমাদের জাতীয় পোশাক।

১৯.আরবীর পরিবর্তে তুর্কী ভাষায় নামায পড়তে বাধ্য করা হলো এবং তুর্কি ভাষায় আযান দিতে মুয়াজ্জিনদের বাধ্য করা হলো । তুর্কি ভাষায় আযান দেওয়ার সময় প্রথমে বলা হতো : তানরি উলমুদ তানরি উলমুদ (এর বাংলা হলো সৃষ্টিকর্তা মহান সৃষ্টিকর্তা মহান । মূলত তা আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার এর বদলে তা বলা হতো)।

২০.১৯৩৫ সালে লুকিয়ে থাকা মক্তব-মাদ্রাসা সরকারের আদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় ও ধর্ম শিক্ষা দান বন্ধ হওয়ায় কাঙ্খিত ধর্মনিরোপেক্ষ

শিক্ষা বিপ্লব সম্পূর্ণ হলো। ইস্তাম্বুল শহরেই ৬০০ মসজিদ ভিত্তিক বিদ্যালয় তথা মক্তব ছিল; আজ তার একটিরও অস্তিত্ব নেই।

সামনে এমন দিনই আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে, যেভাবে আপনারা চুপ আছেন ,

সংকলিত

বিষয়: বিবিধ

১৯১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File