শাহাদত এবং ইসলামী আন্দোলন একই সুত্রে গাঁথা । ওসমানী খেলাফত পরবর্তি ওমর মুখতার শহীদ হবার ইতিহাস
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০২ এপ্রিল, ২০১৬, ০৬:৩৫:১২ সন্ধ্যা
"যেই শাহাদত আঙ্গুলি দিয়ে আমি প্রতিদিন সাক্ষ্য দেই যে এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নাই। সেই আঙ্গুল মিথ্যা কোন কথা লিখতে পারবে না। আমরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে আত্মসমথর্পণ করি না। আমরা হয় জিতি, না হয় মরি।" - শহীদ ওমর মুখতার (রহ
ওমর মুখতার (১৮৬২-১৬ সেপ্টেম্বর,১৯৩১)। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে যিনি ইউসুফ বিন তাশফিন হয়ে মুসলমানদের আজাদীর জাহাজ হাকিয়ে ছিলেন ধু ধু মরুর বুকে তিনি হলেন ওমর মুখতার রাহিঃ। লিবিয়ার এক নির্যাতন ক্যাম্পে হাজার হাজার বন্দী ভক্ত-শুভাকাংখীদের সামনে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে শহীদ করে ইতালীর দখলদার বাহিনী।
ওসমানীয় খেলাফতের পতনের পর লিবিয়ায় দখলদারিত্ব কায়েম করে মুসোলিনির ইটালি। চলতে থাকে অসভ্যতা-বর্বরতা আর অন্যায় জুলুম।তপ্ত মুরুর বুকের অসহায় মানুষগুলো ধুকে ধুকে মরছিল বিভিন্ন নির্যাতন ক্যাম্পে, তখন সিংহের মত গর্জন করে মুসোলিনির কুকুরদের সামনে এসে দাড়ালেন আল্লাহর এক বান্দা। তিনিই ওমর মুখতার (রহ.)। যিনি গর্জন করলে রোম পর্যন্ত কেপে উঠত।
১৯১১ তে তার মাতৃভূমি আক্রান্ত হলে দলবল এবং ছাত্রদের নিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়লেন।সিংহের মত দাবড়িয়ে বেড়িয়েছেন মুসোলিনির জালেম অফিসারদেরকে। একসময় রোমে শুধু একটি নামই উচ্চারিত হতো, ওমর
মুখতার ! লিবিয়ার মুক্তিকামী মুসলমান বেদুঈনদের নয়নের মণি হয়ে উঠেছিলেন এই সাদামাটা কিন্তু ভয়ংকর লোকটি।
ইতালীয় ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে মুখতারের প্রায় ২০ বছরব্যাপী লড়াই ১৯৩১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তার প্রেপ্তারের মাধ্যমে সমাপ্তি লাভ করে। স্লোনটার নিকটে যুদ্ধে তিনি আহত অবস্থায় প্রেপ্তার হন।
মাত্র তিন দিনের মধ্যেই মুখতারের বিচার সম্পন্ন হয়।বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৩১ সালে রায়ে তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। তবে ঐতিহাসিকদের মতে এই বিচার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ছিল না।
মরুর সিংহ নামে খ্যাত হযরত ওমর মুখতার রহঃ কে মুসোলিনির ইটালিয়ান সেনা অফিসার জিজ্ঞেস করলঃ তুমি কি জান তোমার শাস্তি মৃত্যুদন্ড?
ওমর মুখতারঃ হ্যাঁ।
অফিসারঃ তুমি যা করেছ তার জন্য তুমি অনুতপ্ত?
ওমর মুখতারঃ প্রশ্নই হয় না, আমি
আমার দেশ আর মানুষের জন্য লড়েছি।
সেনা আদালতের বিচারক তার দিকে তাকিয়ে বললঃ তোমার মত লোকের এমন পরিণতি দেখে আমি দুঃখিত ।
ওমর মুখতার বললেনঃ "কিন্তু এটাই তো জীবন শেষ করার সর্বশ্রেষ্ঠ উপায়।"
এরপর বিচারক প্রস্তাব দিল তাকে মুক্ত করে দেয়া হবে যদি , সে মুজাহিদিনদের কাছে চিঠি লেখে যাতে মুজাহিদিনরা ইটালিয়ানদের সাথে যুদ্ধ বন্ধ করে । ওমর মুখতার বিচারকের দিকে তাকালেন এবং তার সেই বিখ্যাত উক্তিটি বললেনঃ
"যেই শাহাদত আঙ্গুলি দিয়ে আমি প্রতিদিন সাক্ষ্য দেই যে এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নাই। সেই আঙ্গুল মিথ্যা কোন কথা লিখতে পারবে না। আমরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে আত্মসমথর্পণ করি না। আমরা হয় জিতি, না হয় মরি।"
যিনি আজো মুসলিম জাতির প্রেরণা আল্লাহ তায়ালা এই জানবাজ মুজাহীদকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তরে স্থান করে দিন। #আমীন।
সংগ্রহিত
বিষয়: বিবিধ
৩০৪৮ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সেটা শুধুমাত্র ঈমানী বলে সম্ভব
ধন্যবাদ
যিনি আজো মুসলিম জাতির প্রেরণা আল্লাহ তায়ালা এই জানবাজ মুজাহীদকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তরে স্থান করে দিন। #আমীন
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
আমাদেরকে যেন আল্লাহ রব্বুল আলামিন তার ঈমানদারদের পথে চলার বল বুদ্ধি দিক
মন্তব্য করতে লগইন করুন