পুলিশের বেপরোয়া আচরণের নেপথ্যে : অনেক অজানা তথ্থ বেরিয়ে আসছে , বিরোধী দলের নেতানেতৃদেরকে ঠেংগানোর জন্য নিজদলিয় ক্যাডাররাই পুলিশ
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ১১:২৭:৪৭ সকাল
একের পর এক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ। কেন হঠাৎ করে এমন বেপরোয়া হয়ে উঠল এর উত্তর খুঁজছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা শহরে পোস্টিং নিতে এক শ্রেণীর ওসির লাগে ৪০-৫০ লাখ টাকা। বিশেষ থানায় যেখানে ঘুষ বেশি সেখানে টাকার পরিমাণও বেড়ে যায়। এছাড়া এসআই পদের জন্য লাগে ১০-২০ লাখ টাকা।
প্রতিমাসের ১-৫ তারিখের মধ্যে একশ্রেণির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে হলুদ খাম পাঠাতে হয়। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা তুলতে গিয়ে ওসি-এসআইদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। এসব কারণে এ শ্রেণীর পুলিশের বেপরোয়া আচরণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে অপরাধ বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
তদবির-নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ হওয়া দরকার। বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ হলে খারাপ চরিত্রের লোকজনই সুযোগ পায় চাকরিতে বেশি। যোগদানের পরেও সেই চরিত্রের আর পরিবর্তন হয় না।
নিয়োগ ও বদলির তদবির করেন একশ্রেণির মন্ত্রী-এমপি। নিজেদের পছন্দের ওসি কিংবা এসআইদের নিয়ে আসেন নিজের এলাকায়। এসব পুলিশ সদস্য কোন প্রটোকল মানেন না। অনেকের বিরুদ্ধে আবার এমপিকে মাসোহারা দেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
জানা যায়, নানা অপরাধে গত এক বছরে ৯ হাজার ৯৮৫ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শাস্তির মধ্যে রয়েছে জেল-জরিমানা, চাকরিচ্যুতি, বাধ্যতামূলক অবসর, পদাবনতি ও ব্যক্তি সার্ভিস প্রোফাইলে বিরূপ মন্তব্য করা। এর মধ্যে ৭৬ জন পুলিশ সদস্য ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত। এই ৭৬ জনের মধ্যে ৭০ জন কনস্টেবল ও এসআই পদমর্যাদার সদস্য। বাকি ৬ জন রয়েছেন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার।
গত ৯ জানুয়ারি রাতে মোহাম্মদপুর আসাদগেট ক্রসিংয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক গোলাম রাব্বিকে পুলিশ আটক করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই টাকা না দিলে তাকে পুলিশ ব্যাপক মারধর করে। এক পর্যায়ে পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়। পরে তার বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাকে মারধরের রেশ না কাটতেই আরেক সরকারি কর্মকর্তাকে পেটায় পুলিশ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্রকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
একই দিন রাজধানীর পুরান ঢাকায় অজয় শীল নামে এক যুবকের পায়ে পুলিশ অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ৩৫ নম্বর পাতলা গলি লেনে একটি বাড়ির নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। আহতাবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহত যুবকের দাবি, তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে।
ঢাকার বাইরে পাঁচটি থানার ওসি জানান, একশ্রেণির পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাকে প্রতিমাসে উেকাচ দিতে গিয়ে পুলিশ ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া যানবাহন সংকট নিরসন ও শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘুষ গ্রহণ থেকে বের হয়ে আসলে মাঠপর্যায়ে ঘুষ কমে যাবে বলে ওসিরা জানান।
বিষয়: বিবিধ
১১৬৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সব লিগের বাচ্ছাদেরকে পুলিশে ঢুকিয়েছে
ধন্যবাদ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন