রক্ষী বাহিনীর ইতিহাস এবং গণ হত্যার বিচার চাই। সূচনার কারি মুজিব নিজে কথিত যুদ্ধ অপরাধীর বিচার হলে , স্বাধীন দেশের গণ হত্যার বিচার হবে না কেন ?

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৬:৪৪:১৮ সন্ধ্যা



রক্ষী বাহিনী ‪স্বাধীন‬ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলংকজনক অধ্যায়। যার সূচনার করেছিলেন শেখ মুজিব নিজে।

মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব ভারতের করায়ত্ব করতে ‪ ‎আওয়ামীলীগ‬ কর্মীদের নিয়ে যে মুজিব বাহিনী গঠন করা হয়েছিল তার সদস্যদের নিয়েই গঠন করা হয়েছিল এই রক্ষী বাহিনী। এদের সংগঠিত করা, প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র প্রদান সম্পূর্ণ ছিল ভারতীয়দের হাতে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মাথা চাড়া দিয়ে উঠা বাম শক্তি ও মাওলানা ভাসানী নেতৃত্ব থাকা চীন পন্থীদের দমনের জন্য রক্ষী বাহিনী গঠন করা হলেও তারা শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে সীমাবদ্ধ থাকে নি। বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষের কাছে তারা আবির্ভুত হয় এক ত্রাস রুপে।

রক্ষীবাহিনী বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু ১৯৭১ সালে ৩ দেশের মধ্যে যোদ্ধকালীন সময়ের বিচার হলে , কেন স্বাধীন দেশে গণ হত্যার বিচার হবে না। রক্ষীবাহিনী যাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল তাদের বিচার হবে না কেন ?

পদের লোভে এরা বিচার দাবি করে না ? মাত্র একটি প্রমান দিলাম।

১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক বোরহানউদ্দিন রোকনকে খুন করে রক্ষী বাহিনী । ’৭৪-এর ৩ ফেব্রুয়ারি জাসদের জাতীয় কমিটির সহসভাপতি মোশাররফ হোসেনকে রক্ষীবাহিনী যশোরে গুলি করে হত্যা করে । তিনি ছিলেন ছাত্রলীগের নেত্রী রওশন জাহান সাথীর (বর্তমানে সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য) বাবা। রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের অনেককেই পিটিয়ে বা গুলি করে হত্যা করে। রক্ষীবাহিনীকে অলিখিত ইমিউনিটি দেওয়া হয়েছিল।

রক্ষিবাহিনীর সীমাহীন দৌরাত্ম , লম্পট অপকর্ম , ১৯৭৪ সালের দূর্ভিক্ষ সেই সময়কার আওয়ামী সন্ত্রাস আর দখল কোনটাই কী বাংলাদেশের মানুষ ভুলতে পারবে?

টাঙ্গাইলে লতিফ সিদ্দিকী রাষ্ট্র পতি আবু সাঈদ চৌধুরীর বাড়ি দখল করেছিলেন। আমির হোসেন আমু এবং আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ , তোফায়েল ,নাসিম , আব্দুর রাজ্জাক , মায়া সহ তত্কালীন চোরাকারবারী দলের হোতারা ব্যক্তিগত শত্রুকে শায়েস্তা করতে রক্ষীবাহিনীকে দিয়ে তরুণ তরুনীদের প্রকাশ্যে নির্মম নির্যাতন করেন। দুষ্টু বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানো হতো , ‪#‎ রক্ষীবাহিনী‬ আসছে বলে।

শেখ মুজিব ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার প্রধান হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন পুলিশ বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে তাঁর কাছে দায়বদ্ধ ছিল। সশস্ত্র বাহিনীও তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। সে ক্ষেত্রে আর একটি বাহিনী রক্ষীবাহিনী তার ব্যক্তিগত কমান্ডে রাখার কী যুক্তি থাকতে পারে? অন্য বাহিনীগুলোর ওপর কি তাঁর কোনো আস্থা ছিল না? সহজেই সেই প্রশ্ন জাগে।

রক্ষীবাহিনী গঠন করায় এর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর একটা মনস্তাত্ত্বিক লড়াই শুরু থেকেই লক্ষ করা যায়। রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা পান, তাঁদের হাতে অধিকতর উন্নতমানের অস্ত্র, সাজসরঞ্জাম। সেই সময়কার বাংলাদেশের সকল আওয়ামী সরকারবিরোধী আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখবার জন্যই মূলত এই বর্বর রক্ষী বাহিনী গঠন করা হয়। সেই সময় কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা এবং থানা , ইউনিয়ন , ওয়ার্ড পর্যন্ত এই বাহিনীর সকল কার্যকলাপ ঐ এলাকার আওয়ামীলীগের সাংসদদের নির্দেশেই পরিচারিত হতো। প্রতিদিন লাশের খবর চারদিকে। মানুষ কাদতে পারত না , কান্না করলেও রক্ষী বাহিনী পিটিয়েছে।

একদিকে জাসদের জঙ্গি বাহিনী অন্য দিকে রক্ষীবাহিনী। সারা দেশের মানুষ অসহায় ছিল।

হাসানুল হক ইনুর ও তাহেরের গণবাহিনীর তান্ডবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ছিল রক্তাক্ত। দিন দুপরে মেয়েদের ধরে নিয়ে যেত গণবাহিনী। মাঠের ফসল , গরু , ছাগল ধরে নিয়ে যেত। যাকে খুশি তাকে হত্যা করতো জাসদের আন্ডার গ্রাউন্ডের জঙ্গি গণবাহিনী।

রক্ষীবাহিনীকে অলিখিত ইমিউনিটি দিয়ে হত্যার রাজ্যে পরিনত হয়েছিল ‪বাংলাদেশ‬।

শেখ ‪‎মুজিব‬ ছিলেন মন্ত্রিসভার প্রধান হিসেবে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন রক্ষী বাহিনীর সুপিরিরর কমান্ডার। তাহলে সংবিধান , আইন মোতাবেক ৩৫ হাজার নিরীহ জনগনকে হত্যার দায় শেখ মুজিবের উপর পড়বেই।

কর্নেল তাহের এবং হাসানুল হোক ইনুর গণ বাহিনীর তান্ডবের ‪‎ইতিহাস‬ আর রক্ষী বাহিনীর ইতিহাস কে বিচার করলে অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশের নির্মম তামশা - আজ কর্নেল তাহেরের স্ত্রী আওয়ামীলীগের বিনা ভোটের এমপি। হাসানুল হক ইনু অনির্বাচিত মন্ত্রী।

সেই রক্ষীবাহিনীর কমান্ডিং নেতা তোফায়েল আহমেদ , ফজলুল হক মনি , শেখ সেলিম , শেখ জামাল , শেখ কামাল। আবদু রাজ্জাক , সহ রক্ষীবাহিনীকে দিয়ে গণ হত্যার কমান্ডারদের বিচার হবে না ?

রক্ষীবাহিনীর প্রকৃত ইতিহাস জানতে হলে মাওলানা ভাসানীর হক কথা , এনায়েত উল্লাহর হলিডে সহ তত্কালীন সময়ের পত্রিকা। 'ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামী লীগ' নামে সাংবাদিক আহমেদ মুসা সাহেবের বইটি পড়ুন

বিষয়: বিবিধ

২২৫৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

354270
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সব কিছু জানা গেলেও আমরা চেতনায় থাকব অচেতন!
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৪
294116
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : একবারে একশত বার সহমত
ধন্যবাদ
354277
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১২
শেখের পোলা লিখেছেন : জাতির ভগ্নির বিচার করার ক্ষমতা নেই যাদের তারা করবে জাতির আব্বাহুজুরের বিচার!
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৮
294129
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : একবারে একশত বার সহমত
ধন্যবাদ
354442
১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:২৮
হতভাগা লিখেছেন : জামায়াত ক্ষমতায় আসলে এসবের অস্থির বিচার করবে
১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৪৭
294261
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : জামায়াতের তো খেয়ে দেয়ে কাজ নাই তাই আওয়ামিলীগের মতো ফালতু কাজ করে শাখের করাতের মতো হবে।
পিছে যাক আর আর সামনে যাক এই কুলাংগার লিগের অস্তিত্ব বাংলাদেশের জমিনে আর থাকবে না
১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৫৩
294263
হতভাগা লিখেছেন : ২৬ শে মার্চের আগে জামায়াতকে অলআউট করার চিন্তা ভাবনা আছে হাসুবুর
১৮ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:০৬
294376
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : এটাতো অনেক আগের কথা
কিন্তু এতে নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরেছে জামায়াত এর আগেও বন্ধ হয়েছিল এখনও বন্ধ হবে তাতে কোন ক্ষতি হবে না বরং পুর্বের অবস্থা আর এখনকার অবস্থা এক নয় এবার কিন্তু নিপাত হবে লীগের বাচ্ছা গুলি

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File