প্রগতিশীল হাসুর দেশে একজন নারীর আত্বচীৎকার, পুরুষকে ঘৃণা করি: ভালবাসলে মেয়েকেই ভালবাসব । ভ্যান চালক রেবেকার মুখে এমন করুন ভাষা কি কারো মন গলাতে পারবে

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ২৮ নভেম্বর, ২০১৫, ১২:২০:২৬ দুপুর



সমাজের অন্য সব নারীর মতোই সংসারী হওয়ার কথা ছিল রেবেকার। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে বেড়ে ওঠা রেবেকা বেছে নিয়েছেন পুরুষের পেশা।

সামাজিক নিরাপত্তার জন্য তাকে পরতে হয়েছে পুরুষের পোশাক। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বাগেরহাটের মংলায় ভ্যান চালিয়ে জীবন ধারণ করছেন তিনি।

বাগেরহাটে পাইকগাছা থানার রেবেকা বিবিসি বাংলার প্রবাহ টিভিকে বলেছেন তার সংগ্রামী জীবনের কথা – তার পুরুষের পেশাকে বেছে নেওয়ার কাহিনি।

“কেউ যদি আমার নাম জানে তারা তো রেবেকাই ডাকে- আর যারা না জানে আর ছোট বাচ্চাকাচ্চা সবাই মেম্বার কইলেই এক নামে চেনে।” পুরুষের পাশাক পরা রেবেকা জানালেন।

তিনি বলছিলেন অভাবে সংসারে বড় হয়েছেন । বাপ মায়ের খুব দুরাবস্থা ছিল। যা আয় করতেন তাতে খেতে দিতে পারতেন না – বলেছিলেন রেবেকা।

“আমি মাথায় করে মাটি বয়েছি, জঙ্গলে গিয়ে কাঠ কাটিছি, আমার নিজির একখান নৌকা বানাইছি- কিন্তু আমার ভাই সেই নৌকা ধ্বংস করি দিলি। আমি সেই রাগে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছি।”

নিজের পায়ে দাঁড়াতে ভ্যান চালানোর পেশা বেছে নিয়েছিলেন রেবেকা।

“কিস্তিতে টাকা তুললাম চার হাজার- তুলে গাড়ি কিনলাম। গাড়ি কিনে ভাড়া দিলে ভাড়ার টাকা দেয় না। তাই ঠিক করলাম নিজেই চালাব। ”

এইভাবেই শুরু- বলছিলেন রেবেকা। এখন ভ্যান চালিয়ে রোজগার করে খান তিনি।

তিনি বলছিলেন প্রথম যখন শুরু করেছিলেন তখন কষ্ট ছিল অনেক বেশি। তখন পেডেল করে ভ্যান চালাতে হতো। এখন মোটর লাগানোর পর চালানোর কাজটা তার জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে।

রাতবিরেতে ভ্যান চালানোর অনেক সমস্যাও ছিল।

“সব কি আর ভাল আছে- কত ড্রাইভাররা খারাপ কথা হয় – হয়ত কবে – তখন তো মান সম্মান যাবে- সেইজন্য আমি পুরুষের পোশাক পরে কাজে নামছি। ”

“নারীরা যদি রোজগার করে তার একটা শক্তি থাকে। আর যদি ঘরে বসে থাকে তাহলে তো স্বামী যা বলবে তা্ই করতে হবে। ”

ছোটবেলায় বিয়ে হয়েছিল রেবেকার। যার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সে তার পরিবারের কাছে অর্থ চেয়েছিল। রেবেকা তাকে বলেছিলেন বাবা তার মারা গেছেন – ছোট ছোট ভাইবোন- মা কোথা থেকে টাকা দেবে? অর্থ না পেয়ে সে রেবেকাকে ছেড়ে চলে গেছে।

“আমি পুরুষেরে ঘিন্না করি। তাই আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে জীবনে আর বিয়া-সাদি করব না। যদি ভালবাসি তাহলে কোনোদিন একটা মহিলাকে ভালবাসব। ”

বিষয়: বিবিধ

১১৫১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

351808
২৮ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:২৯
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ধন্যবাদ, ভাল লাগল। আশা করি নিয়মিত লিখবেন।
২৮ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪
292088
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
351810
২৮ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : বিষয়টা দুঃখজনক হলেও প্রতিবেদন টার মধ্যে কেমন যেন সমকামিতা কে প্রমোট করার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে।
২৮ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩
292087
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : দুঃখটাকে প্রকাশ করতে গিয়ে এমন কিছুর আলামত দেখা যাচ্ছে , আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন যদি সেটা সমাজের খারাবি কোন কিছু হয়ে থাকে
351850
২৮ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:০৭
শেখের পোলা লিখেছেন : পরিশ্রম করে রুজী করা কোন লজ্জার নয় বরং গৌরবের৷ কিন্তু একজন ঘরণী নিজের পোষাক বাদ দিয়ে নিরাপত্তার জন্য পুরুষের পোষাকে পুরুষের কাজ করবে এতে পুরুষের, সমাজের,রাষ্ট্রের লজ্জা হওয়া ডচিৎ৷ ধন্যবাদ৷
২৮ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১০
292113
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File