বনু ইস্রাঈলের পূর্ব ইতিহাস :

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৯ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:৪৫:২৩ সন্ধ্যা



হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর কনিষ্ঠ পুত্র হযরত ইসহাক্ব (আঃ)-এর পুত্র ইয়াকূব (আঃ)-এর অপর নাম ছিল ‘ইস্রাঈল’। হিব্রু ভাষায় ‘ইস্রাঈল’ অর্থ ‘আল্লাহর দাস’। সে হিসাবে ইয়াকূব (আঃ)-এর বংশধরগণকে ‘বনু ইস্রাঈল’ বলা হয়। কুরআনে তাদেরকে ‘বনু ইস্রাঈল’ বলে অভিহিত করা হয়েছে, যাতে ‘আল্লাহর দাস’ হবার কথাটি তাদের বারবার স্মরণে আসে।

ইয়াকূব (আঃ) ও বনু ইস্রাঈলদের আদি বাসস্থান ছিল কেন‘আনে, যা বর্তমান ফিলিস্তীন এলাকায় অবস্থিত। তখনকার সময় ফিলিস্তীন ও সিরিয়া মিলিতভাবে শাম দেশ ছিল। বলা চলে যে, প্রথম ও শেষনবী ব্যতীত প্রায় সকল নবীর আবাসস্থল ছিল ইরাক ও শাম অঞ্চলে। যার গোটা অঞ্চলকে এখন ‘মধ্যপ্রাচ্য’ বলা হচ্ছে। ইয়াকূব (আঃ)-এর পুত্র হযরত ইউসুফ (আঃ) যখন মিসরের অর্থমন্ত্রী ও পরে শাসনকর্তা নিযুক্ত হন এবং অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় কেন‘আন অঞ্চলেও চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তখন ইউসুফ (আঃ)-এর আমন্ত্রণে পিতা ইয়াকূব (আঃ) স্বীয় পুত্রগণ ও পরিবারবর্গ সহ হিজরত করে মিসরে চলে যান। ক্রমে তাঁরা সেখানে আধিপত্য বিস্তার করেন ও সুখে-শান্তিতে দিনাতিপাত করতে থাকেন। তারীখুল আম্বিয়া-র লেখক বলেন, ইউসুফ (আঃ)-এর কাহিনীতে কোথাও ফেরাঊনের নাম উল্লেখ না থাকায় প্রমাণিত হয় যে, ঐ সময় ফেরাঊনদের হটিয়ে সেখানে ‘হাকসূস’ (ملوك الهكسوس ) রাজাদের রাজত্ব কায়েম হয়। যারা দু’শো বছর রাজত্ব করেন এবং যা ছিল ঈসা (আঃ)-এর জন্মের প্রায় দু’হাযার বছর আগের ঘটনা।[5] অতঃপর মিসর পুনরায় ফেরাঊনদের অধিকারে ফিরে আসে। ইউসুফ (আঃ)-এর মৃত্যুর পরে তাঁর পঞ্চম অধঃস্তন পুরুষ মূসা ও হারূনের সময় যে নিপীড়ক ফেরাঊন শাসন ক্ষমতায় ছিল তার নাম ছিল রেমেসীস-২। অতঃপর তার পুত্র মারনেপতাহ-এর সময় সাগরডুবির ঘটনা ঘটে এবং সৈন্য-সামন্ত সহ তার সলিল সমাধি হয়।

‘ফেরাঊন’ ছিল মিসরের ক্বিবতী বংশীয় শাসকদের উপাধি। ক্বিবতীরা ছিল মিসরের আদি বাসিন্দা। এক্ষণে তারা সম্রাট বংশের হওয়ায় শাম থেকে আগত সুখী-স্বচ্ছল বনু ইস্রাঈলদের হিংসা করতে থাকে। ক্রমে তা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের রূপ পরিগ্রহ করে।

এক বর্ণনায় এসেছে যে, ইয়াকূবের মিসরে আগমন থেকে মূসার সাথে মিসর থেকে বিদায়কালে প্রায় চারশত বছর সময়ের মধ্যে তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল কাছাকাছি প্রায় তিন মিলিয়ন[6] এবং এ সময় তারা ছিল মিসরের মোট জনসংখ্যার ১০ থেকে ২০ শতাংশ’।[7] তবে এগুলি সবই ইস্রাঈলীদের কাল্পনিক হিসাব মাত্র। যার কোন ভিত্তি নেই’। বরং কুরআন বলছে إِنَّ هَؤُلآء لَشِرْذِمَةٌ قَلِيلُونَ- (الشعراء ৫৪)- ‘নিশ্চয়ই তারা ছিল ক্ষুদ্র একটি দল’ (শো‘আরা ২৬/৫৪)। এই বহিরাগত নবী বংশ ও ক্ষুদ্র দলের সুনাম-সুখ্যাতিই ছিল সংখ্যায় বড় ও শাসকদল ক্বিবতীদের হিংসার কারণ। এরপর জ্যোতিষীদের ভবিষ্যদ্বাণী ফেরাঊনকে ভীত ও ক্ষিপ্ত করে তোলে।হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর কনিষ্ঠ পুত্র হযরত ইসহাক্ব (আঃ)-এর পুত্র ইয়াকূব (আঃ)-এর অপর নাম ছিল ‘ইস্রাঈল’। হিব্রু ভাষায় ‘ইস্রাঈল’ অর্থ ‘আল্লাহর দাস’। সে হিসাবে ইয়াকূব (আঃ)-এর বংশধরগণকে ‘বনু ইস্রাঈল’ বলা হয়। কুরআনে তাদেরকে ‘বনু ইস্রাঈল’ বলে অভিহিত করা হয়েছে, যাতে ‘আল্লাহর দাস’ হবার কথাটি তাদের বারবার স্মরণে আসে।

ইয়াকূব (আঃ) ও বনু ইস্রাঈলদের আদি বাসস্থান ছিল কেন‘আনে, যা বর্তমান ফিলিস্তীন এলাকায় অবস্থিত। তখনকার সময় ফিলিস্তীন ও সিরিয়া মিলিতভাবে শাম দেশ ছিল। বলা চলে যে, প্রথম ও শেষনবী ব্যতীত প্রায় সকল নবীর আবাসস্থল ছিল ইরাক ও শাম অঞ্চলে। যার গোটা অঞ্চলকে এখন ‘মধ্যপ্রাচ্য’ বলা হচ্ছে। ইয়াকূব (আঃ)-এর পুত্র হযরত ইউসুফ (আঃ) যখন মিসরের অর্থমন্ত্রী ও পরে শাসনকর্তা নিযুক্ত হন এবং অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় কেন‘আন অঞ্চলেও চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তখন ইউসুফ (আঃ)-এর আমন্ত্রণে পিতা ইয়াকূব (আঃ) স্বীয় পুত্রগণ ও পরিবারবর্গ সহ হিজরত করে মিসরে চলে যান। ক্রমে তাঁরা সেখানে আধিপত্য বিস্তার করেন ও সুখে-শান্তিতে দিনাতিপাত করতে থাকেন। তারীখুল আম্বিয়া-র লেখক বলেন, ইউসুফ (আঃ)-এর কাহিনীতে কোথাও ফেরাঊনের নাম উল্লেখ না থাকায় প্রমাণিত হয় যে, ঐ সময় ফেরাঊনদের হটিয়ে সেখানে ‘হাকসূস’ (ملوك الهكسوس ) রাজাদের রাজত্ব কায়েম হয়। যারা দু’শো বছর রাজত্ব করেন এবং যা ছিল ঈসা (আঃ)-এর জন্মের প্রায় দু’হাযার বছর আগের ঘটনা।[5] অতঃপর মিসর পুনরায় ফেরাঊনদের অধিকারে ফিরে আসে। ইউসুফ (আঃ)-এর মৃত্যুর পরে তাঁর পঞ্চম অধঃস্তন পুরুষ মূসা ও হারূনের সময় যে নিপীড়ক ফেরাঊন শাসন ক্ষমতায় ছিল তার নাম ছিল রেমেসীস-২। অতঃপর তার পুত্র মারনেপতাহ-এর সময় সাগরডুবির ঘটনা ঘটে এবং সৈন্য-সামন্ত সহ তার সলিল সমাধি হয়।

‘ফেরাঊন’ ছিল মিসরের ক্বিবতী বংশীয় শাসকদের উপাধি। ক্বিবতীরা ছিল মিসরের আদি বাসিন্দা। এক্ষণে তারা সম্রাট বংশের হওয়ায় শাম থেকে আগত সুখী-স্বচ্ছল বনু ইস্রাঈলদের হিংসা করতে থাকে। ক্রমে তা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের রূপ পরিগ্রহ করে।

এক বর্ণনায় এসেছে যে, ইয়াকূবের মিসরে আগমন থেকে মূসার সাথে মিসর থেকে বিদায়কালে প্রায় চারশত বছর সময়ের মধ্যে তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল কাছাকাছি প্রায় তিন মিলিয়ন[6] এবং এ সময় তারা ছিল মিসরের মোট জনসংখ্যার ১০ থেকে ২০ শতাংশ’।[7] তবে এগুলি সবই ইস্রাঈলীদের কাল্পনিক হিসাব মাত্র। যার কোন ভিত্তি নেই’। বরং কুরআন বলছে إِنَّ هَؤُلآء لَشِرْذِمَةٌ قَلِيلُونَ- (الشعراء ৫৪)- ‘নিশ্চয়ই তারা ছিল ক্ষুদ্র একটি দল’ (শো‘আরা ২৬/৫৪)। এই বহিরাগত নবী বংশ ও ক্ষুদ্র দলের সুনাম-সুখ্যাতিই ছিল সংখ্যায় বড় ও শাসকদল ক্বিবতীদের হিংসার কারণ। এরপর জ্যোতিষীদের ভবিষ্যদ্বাণী ফেরাঊনকে ভীত ও ক্ষিপ্ত করে তোলে।

বিষয়: বিবিধ

২০২৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

346408
১৯ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৮:৪৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
বনি ইসরাইল সে সময় কৃষিকাজে দক্ষ ছিল এবং উর্বর নিল বদ্বিপ অঞ্চলে তারা চাষবাদ করে অর্থশালি হয়েছিল। যেখানে মূল মিশরবাসিরা ছিল হান্টার-গেদারার শ্রেনির।
১৯ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:১১
287493
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
346418
১৯ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:৩৮
নাবিক লিখেছেন : ভালো লাগলো।
346420
১৯ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:৪৯
হতভাগা লিখেছেন : আল্লাহ এদেরকে বিশ্ববাসির মধ্যে সেরা হিসেবে তুললেও এরা বার বার আল্লাহর নাফরমানী করেছিল ।

এরা নবীদেরকে অত্যাচার করতো এবং কাউকে কাউকে এরা মেরেও ফেলেছিল ।

ফেরাউন থেকে মুক্ত করার পর সামেরীর প্ররোচনায় তারা বাছুর পূঁজা শুরু করে দিয়েছিল ।

কোন এক জাতির সাথে যুদ্ধ করার আহবান জানানো হলে তারা মুসা (আঃ)কে বলেছিল'' আপনি ও আপনার আল্লাহ যান যুদ্ধ করতে , আমরা বসে আছি ।''

শনি বারের ব্যাপারে তারা নাফরমানির কাজ করেছিল ।

আল্লাহর দেওয়া কিতাব ধারণ করতে অস্বীকার করায় আল্লাহ তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তুর পর্বত তুলে ধরে ছিলেন ।

346456
২০ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৩:১৩
সাদাচোখে লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম!
ভাল লিখেছেন। একটি রিপোর্ট এমন আছে যে, ইউসুফ আঃ কে দাস হিসাবে কেনা মালিকটি ছিল আজিজ (যা কোরানে আছে) পরিবারের। আজিজ মূলতঃ ফারাও (ফেরাউন) এর পূর্বতন শাসকদের উপাদী - যারা মিশরীয় ছিল না।

যেহেতু ইউসুফ আঃ ও বনী ইসরাইলী বংশীয় লোকজন ভিনদেশী আজীজ শাসকগোষ্ঠির রাষ্ট্রীয় কাজে সহযোগী ছিল - সেহেতু ফারাওদের অভ্যুত্থানের পর স্বাভাবিক নিয়মেই তাদের দাসত্বে আবদ্ধ করা হয়।

ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল আজকের বিশ্বে ইয়াহুদী ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে মাত্র ১০% বনী ইসরাইলী বাকি ৯০% ই অ বনী ইসরাইলি খাজারস্‌ রা - যাদের সাথে আজকের ইসরাইলের কোন সম্পর্কই নেই।

আল্লাহর ওয়াদা অনুযায়ী বনী ইসরাইলীরা জেরুজালেম এ ফিরছে (সুরা আম্বিয়া ৯৫-৯৬ নং আয়াতানুযায়ী) সারা পৃথিবী হতেই, এক্সেপশান শুধু খোরাসানভুক্ত বনী ইসরাইলীরা - যার একটা বড় অংশ মুসলমান হয়ে ভিন দেশীদের সাথে সংগ্রামে রত আর অন্য অংশটি 'অবশিষ্ট তৌরাত' ভিত্তিক জীবনাচারে ব্যস্ত, ধর্মে কর্মে ব্যস্ত। এদেরকে ইসরাইল এ ফিরিয়ে নিতে জিয়োনিস্টরা (নন বনী ইসরাইলীরা) রিসার্চ, মোটিভেশান সহ বিভিন্ন প্রজেক্টের পেছনে এ পয্যন্ত মিলিয়নস অব ডলার ব্যায় করা হয়েছে কিন্তু পারেনি। অথচ হাদীস অনুযায়ী আগামীতে তারা ঠিক ই জেরুজালেম অভিমুখে মার্চ শুরু করবে - যা জিয়োনিস্টদের জন্য শুভ বলে মনে হয় না।
২০ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ১২:৪৯
287591
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : চমতকার মন্তব্যর জন্য আপনাকে প্রান উজাড় করে ধন্যবাদ জানাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File