তাবলিগ জামাতের ইসলাম কি কোরআনের ইসলাম? নবীজী (সা.)-এর পথ ও তাবলিগিদের পথ ? সংক্ষেপে জেনে নেই
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৮ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:০২:২৭ রাত
তাবলিগ জামাতের মূল আগ্রহটি নামাজে ও আখেরি মোনাজাতে লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে। অথচ সেরূপ আগ্রহ সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ইসলামের শত্রুপক্ষের দখলদারি মুক্ত করা নিয়ে যেমন নেই, তেমনি নেই শরিয়তের প্রতিষ্ঠা নিয়েও। টঙ্গীর ইজতেমায় প্রতি বছর ২০ বা ৩০ লাখ লোকের জমায়েত হয়। এরা নামাজে খাড়া হয়, মোনাজাতেও অংশ নেয়। কিন্তু তাদের ক’জন জীবনে একবারও খাড়া হয়েছে অন্যায়ের নির্মূল ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায়? ইসলামের বিজয় আনতে নবীজী (সা.) ও তাঁর সাহাবারা কাফেরদের হত্যা করেছেন। কিন্তু তাবলিগকারীরা কি ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে তীর বা পাথর ছোড়া দূরে থাক একটি কথাও কি বলেছে? দুর্বুত্তরা যে দুর্বৃত্ত, সে সাক্ষ্য দিতেই-বা ক’জন খাড়া হয়েছে? বরং যারা বিশ্ব ইজতেমায় জমা হয় তাদের অনেকে তো খাড়া হয়েছে নির্বাচনে ইসলামের শত্রুপক্ষের সমর্থনে। ক্ষুদ্র আগাছা নির্মূলেও তো শক্তি চাই। অন্যায়ের নির্মূল এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা তো শুধু চাইলেই হয় না, সে জন্য তো দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে লড়াই চাই। অথচ সমাজ ও রাষ্ট্রজুড়ে তো তাদেরই দখলদারি। দুর্বৃত্তদের এমন এক দখলদারি তো নবীজী (সা.)-এর সময় সমগ্র আরবজুড়ে ছিল। সে দখলদারি নির্মূল করতে সাহাবায়ে কেরামকে নামাজ-রোজার পাশাপাশি লাগাতার জিহাদেও নামতে হয়েছে। শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ সাহাবিকে শহীদও হতে হয়েছে। কিন্তু আজ দুর্বৃত্তদের নির্মূলে ক’জন জিহাদে যোগ দিচ্ছে? আল্লাহর শরিয়তের প্রতিষ্ঠার মধ্যেই যে একমাত্র সুবিচার ও শান্তি সে সাক্ষ্যই-বা তাদের ক’জন দিচ্ছে? বরং যে দেশে ২০ বা ৩০ লাখ লোক ইজতেমায় জমা হচ্ছে সে দেশটিই অন্যায় ও অবিচারে ৫ বার বিশ্বরেকর্ড গড়েছে। দেশটির ওপর এখনও ইসলামের শত্রুপক্ষের প্রবল দখলদারি। মুসল্লিরা লাশ হচ্ছে রাজপথে।
বাজেয়াপ্ত হচ্ছে ইসলামী বই। নিষিদ্ধ হয়েছে তাফসির মাহফিল। বাংলাদেশের আদালতে এখনও ঔপনিবেশিক কাফেরদের প্রণীত কুফরি আইন। সে আইনে সুদ যেমন হালাল, তেমনি পতিতাবৃত্তির মতো ব্যভিচারও আইনসিদ্ধ। শরিয়ত প্রতিষ্ঠার লড়াই চিহ্নিত হচ্ছে সন্ত্রাসরূপে। অথচ এ নিয়ে তাবলিগ জামাতের মাঝে কোনো মাতম নেই। পাপাচার নির্মূলে কোনো অঙ্গীকারও নেই। শত শত মুসল্লি লাশ হলেও তা নিয়ে তাদের ইজতেমায় দোয়া পর্যন্ত করা হয় না। ফলে তাবলিগ জামাতের ইজতেমায় লোকের সংখ্যা বৃদ্ধিতে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণটি কোথায়? বাড়ছে কি তাতে শরিয়ত প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা? প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে কি মহান আল্লাহর সর্বময় সার্বভৌমত্ব?
সুস্থ মানুষ মাত্রই চেতনায় একটি স্পষ্ট মানচিত্র ও রোডম্যাপ নিয়ে পথে নামে। পাগলের সেটি থাকে না বলেই সে পাগল। চলার পথ দেখেই বোঝা যায় সে মানুষের গন্তব্যটি কোনমুখী। নাস্তিক ও আস্তিক, কাফের ও মুমিন, সেক্যুলারিস্ট ও ইসলামিস্টদের পথচলা তাই একই পথে হয় না। তাছাড়া নিজ মনে যে শহরে যাওয়ার ভাবনা নেই, সে শহরের অলিগলি নিয়ে কেউ ভাবে না। কিন্তু তাবলিগ জামাত তো জান্নাতে যাওয়ার কথা বলে। ফলে সেখানে পৌঁছার রাস্তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনাটাও তাদের কাছে গুরুত্ব পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তাদের অনুসৃত সে পথে সিরাতুল মোস্তাকিমের পরিচিত আলামতগুলো কোথায়? তাবলিগ জামাতের কর্মসূচিতে আছে গাশত, আছে চিল্লাহ, আছে ফাজায়েলে আমল থেকে পাঠ, আছে ইজতেমা। আছে তাবলিগের নামে বিদেশ গমন। প্রশ্ন হলো, নবীজী (সা.)-এর ইসলামে কি এসব ছিল? তিনি কোথায় গাশত বা চিল্লাতে বেরিয়েছিলেন? বেরুলে হাদিসে তার উদাহরণ কই? কোথায় তিনি দোয়ার ইজতেমা বসিয়েছেন? নিজ দেশে কাফের শক্তির নির্মূল এবং ইসলামের পূর্ণ বিজয়ের আগে নবীজী (সা.) কখনোই বিদেশে ইসলাম প্রচারে লোক পাঠাননি। অন্য দেশে যখন গিয়েছেন তখন গেছেন সেনাবাহিনী নিয়ে। লক্ষ্য ছিল, সে দেশে আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী শক্তির নির্মূল এবং সত্যের পথ থেকে সব ধরনের বাধা সরিয়ে দেয়া। সেটি নবুয়ত লাভের ১৮ বছর পর। অমুসলিম দেশে যাওয়ার আগে যেটি গুরুত্ব পেয়েছিল সেটি মুসলিম দেশে পরিপূর্ণ ইসলামী বিপ্লব। একমাত্র সেটি সমাধা হওয়ার পরই তিনি বিদেশের দিকে নজর দিয়েছেন। কিন্তু তাবলিগ নেতারা নবীজী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের সে নীতি থেকে কোনো শিক্ষাই গ্রহণ করেনি। নিজ দেশের জনগণ দুর্বৃত্তি তথা নানারূপ পাপাচারে যখন বিশ্বরেকর্ড গড়ছে, তখন দেশের তাবলিগকারীরা লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে ইউরোপ ও আমেরিকায় বিশাল বিশাল জামাত নিয়ে যাচ্ছেন। যে বাতি তার নিজ ঘরের অন্ধকার সরাতে পারিনি, সেটি কি হাজার হাজার মাইল দূরের অন্য এক মহাদেশে বা দেশে আলো দিতে পারে? বিদেশিদের কাছে এটি কি বিদ্রূপ ও হাসির খোরাকরূপে গণ্য হয় না? নিজ দেশের মানুষের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, দর্শন ও চারিত্রিক রোগের সঙ্গে যেরূপ পরিচিতি, সেটি কি বিদেশিদের সঙ্গে থাকে? ফলে নিজ দেশে দাওয়াতের সামর্থ্য কি অধিক থাকা স্বাভাবিক নয়? দূরের দেশে গিয়ে কি সেটি সম্ভব?
বিষয়: বিবিধ
২৬৭৬ বার পঠিত, ৩৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কোন কর্ম করতে গিয়ে যদি সুফলের থেকে কুফল বেশি হয় সেখানে সবাইর মিলে উচিত এমন কর্ম থেকে তাদেরকে ফিরানো
সবগুলো অপবাদ তাবলীগের উপর চেপে দিলেন, অন্য ইসলামী দলগুলোর দায়িত্ব কি একটুও নেই!
আখেরি মোনাজাতে লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে তাবলীগের কোন কর্মপদ্ধতি নেই। তাই মুনাজাত বাংলাতেও হয় না। আপনি কোথা থেকে এসব উদ্ভট কথা তাদের উপর চাপাচ্ছেন?
তাদের দ্বারা কি ইসলামের কাজ সামান্যটুকু হচ্ছে না?
তাদের কর্মপদ্ধতি ও চেষ্টা মেহণত কি একেবারেই বৃথা?
কেন ভাই একে অন্যের বিরুদ্ধে লেগে ভেদাভেদ সৃষ্টি করছেন?
তাবলীগ জামাত তো কখনো কোন ইসলামী পার্টি বা দলের বিরুদ্ধে লাগে নি। তাদের কর্মপদ্ধতি অনুস্বরণ করে তারা সাধ্যমত কাজ চালিয়ে যাচ্ছনে, তাহলে কেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে আদাজল থেয়ে নামছি?
যদি আপনার পক্ষে সম্ভব হয়, তাদের পরিচালনা কমিটিকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু এভাবে স্ব-প্রনোদিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে লেগে থাকার তো কোন মানে হয় না।
ভাবার সময় কি এখনো আসেনি ভায়া!
বুঝেছেন?
আমার বুজুর্গগণ মিলি সেকেন্ডের মধ্যে মানুষকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে নিয়ে যেতেপারে। তাদেরকে অনুরোধ করে দেখুন প্রধানমন্ত্রী/বিরোধী দল ইত্যাদি সবাইকে দেশ থেকে বাহিরে কোন দীপে ফেলে দেয়া যায় কিনা?
এর চেয়ে বড় বুজুর্গী আর কি হতে পারে??
আবার এমর বড় বুজুর্গ আছেন যারা কবরে গিয়ে সালাম দিলে কবরবাসী জওয়াব দেয় এবং মুসাফা করার জন্য হাত বের করে দেয়। এত বড় বড় বুজুর্গের বিরুদ্ধে আপনি কোন সাহসে কথা বলেন?!?
আপনি লিখেছেন: "বরং যারা বিশ্ব ইজতেমায় জমা হয় তাদের অনেকে তো খাড়া হয়েছে নির্বাচনে ইসলামের শত্রুপক্ষের সমর্থনে।"
এই ব্যাপারটিতো পবিত্র হজ্জ্বের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বরং আরো বড় পরিসরে। এব্যাপারে আপনি কি বলবেন? হজ্জ্বে যাওয়া ব্ন্ধ করে দিতে??
জিহাদ বলতে আপনি কি বুঝাচ্ছেন??? একটি দলতো হরতাল, অবরোধকেও জিহাদ বলে এই জিহাদে মারা গেলে নিজেদের শহীদও বলে। আপনার দৃষ্টিতে জিহাদের সংজ্ঞা কি? আর তাবলীগ কওমী মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট একটি সংগঠন আর আফগানিস্তানের তালেবানরাও তাই। আপনি পরোক্ষভাবে বলছেন, হেজাফতের মানুষ মরলেও তাদের সেখানে সংশ্লিষ্টতা ছিলনা অথচ যিনি যারা এই আন্দোলনের প্রধান হাতিয়ার তারা তাবলীগের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জানিনা আপনি কেন এসব প্রচারণা চালাচ্ছেন। আপনার মনে হচ্ছে তাবলীগ নিতান্তই পিকনিক পার্টি। কিন্তু পিকনিক পার্টিতে তারা কোথায় যায়?? বাংলাদেশের এমনসব দুর্গম এলাকায় যেখানে রাস্তাঘাট, মোবাইল নেটোয়ার্ক, গাড়িঘোড়া কিছুই নেই। এখানকার মানুষগুলোর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌছানোর কেই নেই এরাই এসব দায়িত্বগুলো পালন করেন। সবাই বিশ্বাস করে ইসলাম বুঝি এলিটদের জন্য তাই শহুরে এলিটশ্রেণী ইসলাম মানছেনা বলে সবার সে কি কান্না, সব চিন্তা এদের নিয়ে অথচ একজন কৃষক, রিকসাআলার কাছেও দ্বীনের দাওয়াত পৌছানো জরুরী এটা কেই মনেই আনছেনা। তাবলীগ কিন্তু এসব প্রান্তিক মানুষের কাছেও ইসলাম নিয়ে যাচ্ছে। আপনি বলেছেন, "নিজ দেশে কাফের শক্তির নির্মূল এবং ইসলামের পূর্ণ বিজয়ের আগে নবীজী (সা.) কখনোই বিদেশে ইসলাম প্রচারে লোক পাঠাননি।"
এটি কি সঠিক? হুদায়বিয়ার সন্ধির পরে তিনি বিভিন্ন দেশের রাজ রাজাদের কাছে যখন ইসলামের দাওয়াত পাঠাচ্ছিলেন তখনও কি মক্কা বিজয় হয়েছিল? রাগ করবেননা ভাইয়া। তাবলীগকে আমিও পূর্ণাঙ্গ সমর্থন করিনা তাদেরকে জাস্ট একটা ইসলামিক প্যাকেজ মনে করি, যেভাবে গণতান্ত্রিক ইসলামিক পার্টিকেও প্যাকেজ মনে করি যা দিয়ে একটা দুটো ভাল কাজ হয়, কিন্তু কোন সমাধান বের হয়ে আসেনা। মহান আল্লাহ আমাকেও অল্প কিছু কুরআন-হাদিসের জ্ঞান দিয়েছেন যা দিয়ে বিভিন্ন দলকে ভুল প্রমাণ করা যায়। কিন্তু তাতে আমার লাভ???? আমার তো সমস্যা বাড়ানোর কথানা বরং সমস্যা সমাধান দরকার। যখন ইরাক ও মিশরের কিছু লোকেরা মিলে উসমান (রাঃ) কে হত্যা করল এবং আলী (রাঃ) তার বিচার করার জন্য বললেন, কে হত্যা করেছ স্বীকার কর। তখন ১০,০০০ লোক অস্ত্র উচু করে প্রত্যেকেই বলল, আমি করেছি। তখন উপস্হিত সাহাবারা অবাক হয়ে বলতে লাগলেন, এরা কি মুসলিম! যারা নিজেদের খলিফাকে হত্যা করার দাবি করছে? আলী (রাঃ) বললেন, হ্যা! এরা মুসলিম আর আমাদেরই ভাই। রাসূল সল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমার ভাই যদি অত্যাচারী হয়, তবুও তাকে সাহায্য কর। সাহাবারা বলেছিলেন, কিভাবে? উত্তর এসেছিল, তাকে বিরত রাখার চেষ্টা কর, সদুপদেশ দাও। অর্থাৎ যে রীতিমত অত্যাচারী তাকেও সাহায্য করতে বলা হয়েছে। খারেজীরা রীতিমত আলী (রাঃ) কে খলিফা হিসেবে প্রত্যাক্ষান করে এবং তাকে হত্যার ফতোয়া জারি করে এরপরেও আলী (রাঃ) তাদেরকে বোঝানোর জন্য কয়েকজন সাহাবীকে তাদের নিকট প্রেরণ করেন এবং তাদের মাঝে অনেকেই (সম্ভবত ১০,০০০ বা কম)নিজেদের ভুল বুঝে তোওবা করে। এই হল ইসলামের কথা। আর আমরা একে ভুল প্রমাণে ব্যাস্ত, ওকে মুরতাদ, অন্যজনকে কাফির। আমরা কি পাগল হয়ে গেছি? হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী মালহামা প্রায় শুরু হতে চলেছে। মালহামা শুরু হলে তখন এই বিভক্ত মানুষজন আরো বেশি বিপদে পরবে তার জন্য কিন্তু আপনারা দায়ী হবেন যারা একতার চিন্তা না করে অন্যের দোষ ধরেছেন ফলে শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছিল। রাগ করবেননা আপনাকে অনেক শ্রদ্ধা করি। তবুও লেখা নিয়ে কথা বলছি তাই একটু কঠিনকথা বলতেই হল।
↓
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন যে, রাছূল
(ছাঃ) বলেছেন, "আমার মৃত্যুর পর শেষ
যামানায় আমার উম্মাতের মধ্য থেকে
পূর্বের কোন দেশ থেকে একটি
জামা'আত তাবলীগের নামে বের হবে,
তারা কোরাআন তিলাওয়াত করবে,
তাদের কোরাআন তিলাওয়াত
তোমাদের কোরাআন তিলাওয়াতের
তুলনায় খুবই সুন্দর হবে। কোরাআনের প্রতি
বাহ্যত তাদের ভক্তি শ্রদ্ধা ও
আন্তরিকতা দেখে মনে হবে যেন ওরা
কোরাআনের জন্য এবং কোরাআনও
তাদের জন্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওরা
কোরাআনের প্রতিটি আয়াতের উপর
ঈমান রাখবে না এবং কোরাআনের
কঠিন নির্দেশের প্রতি আমাল করবে
না।
এ জামা'আতের অধিকাংশ লোক হবে
অশিক্ষিত ও মূর্খ। যেমন- কোরাআন ও
হাদীছের জ্ঞানে হবে মূর্খ তেমন
সাধারণ জ্ঞানেও হবে মূর্খ। এ
জামা'আতে যদি কোন শিক্ষিত লোক
যোগদান করে তার আচরণ ও স্বভাব হয়ে
যাবে জামা'আতে যোগদানকারী
অন্যান্য মূর্খের মত। মূর্খরা যেমন মূর্খতার
আনুগত্য করবে তেমনি শিক্ষিত লোকটিও
মূর্খদের আনুগত্য করবে।
এ জামা'আতের বয়ান ও বক্তৃতায় থাকবে
কেবল ফাযীলাতের বয়ান। বিভিন্ন
আমলের সর্বোচ্চ ফাযীলাতের
প্রমাণবিহীন বর্ণনাই হবে তাদের
বয়ানের বিষয়বস্তু।
হে মুসলিমগণ! ঐ জামা'আতের লোকদের
ছালাত, ছিয়াম অন্যান্য আমল এতই সুন্দর
হবে যে, তোমরা তোমাদের ছালাত,
ছিয়াম ও আমল সমূহকে তাদের তুলনায় তুচ্ছ
মনে করবে। এ জামা'আতের লোকেরা
সাধারণ মানুষকে কোরাআন পথে তথা
দ্বীনের পথে চলার নামে ডাকবে,
কিন্তু চলবে তারা তাদের তৈরী করা
পথে, ডাকলেও তারা কোরাআনের
পথে চলবে না।
তাদের ওয়াজ ও বয়ান হবে মধুর মত মিষ্টি,
ব্যবহার হবে চিনির মত সুস্বাদু, তাদের
ভাষা হবে সকল মিষ্টির চাইতে মিষ্টি।
তাদের পোশাক-পরিচ্ছেদ, ধরণ-ধারণ
হবে খুবই আকর্ষণীয়, যেমন সুন্দর হরিণ তার
দিকে হরিণের পিছনে যেমন ছুটতে
থাকে তেমন সাধারণ মানুষ তাদের
মিষ্ট ব্যবহার, আমলের প্রদর্শনী ও সুমধুর
ওয়াজ শুনে তাদের জামা'আতের দিকে
ছুটতে থাকবে।
তাদের অন্তর হবে বাঘের মত হিংস্র।
বাঘের অন্তর যেমন কোন পশুর চিৎকারে
মমতা প্রবেশ করে না, তেমন কোরাআন ও
হাদীছের বাণী যতই মধুর হোক তাদের
অন্তরে প্রবেশ করবে না। তাদের
কথাবার্তা, আমল-আচরণ, বয়ান যেগুলি
তারা তাদের জন্য নির্ধারণ করে
নিয়েছে, তার ভিতরকার কোরাআন
সুন্নাহ বিরোধী আমলগুলি বর্জন করে
কোরাআন সুন্নাহ মুতাবিক আমল করার
জন্য যতবার কেউ কোরাআন ও সুন্নাহ
প্রদর্শন করুক বাঘের অন্তরে যেমন মমতা
প্রবেশ করে না, তেমন তাদের অন্তরে
কোরাআন সুন্নাহ প্রবেশ করবে না।
তাদের জামা'আতে প্রবেশ করার পর
তাদের মিষ্টি ব্যবহারে মানুষ হবে মুগ্ধ,
কিন্তু ঐ মনোমুগ্ধ ব্যবহারের পেছনে
জীবন ধ্বংসকারী মত ঈমান বিনষ্টকারী,
ইসলামী মূল্যবোধ বিনষ্টকারী মারাত্মক
বিষ বিরাজমান থাকবে। তাদের
প্রশিক্ষণ ধীরে ধীরে মানুষের অন্তর
হতে আল্লাহ ও রাছূল (ছাঃ) এর
আনুগত্যের প্রেরনা শেষ করে দেবে
এবং জামা'আতের আমীরদের আনুগত্যের
প্রতি মরণপণ আকৃষ্ট করবে। আমীরগণ
দেখতে হবে খাঁটি পরহেজগার দ্বীনদার
ব্যক্তিদের মত, কিন্তু অন্তর হবে
শাইত্বনের মত, কোরাআন সুন্নাহর প্রতি
বিদ্রোহী। আমীরগণ যা করে যাচ্ছে
তার মধ্যে কোরাআন সুন্নাহ বিরোধী
কোন কাজ কখনো কেউ ধরিয়ে দিলে
কোনক্রমেই তা পরিবর্তন করতে প্রস্তুত
হবে না। অর্থাৎ কোরাআন হাদীছ
উপস্থাপন করার পর তারা কোরাআন
হাদীছ দেখেও কোরাআন হাদীছ বর্জন
করে মুরুব্বীদের কথা মানবে। কোরাআন
হাদীছের প্রতি তাদের অনীহা এতই
তীব্র হবে যে, তারা অর্থসহ কোরাআন
হাদীছ কখনই পড়বে না, পড়ানোও যাবেন
না।
এ জামা'আতটি ইসলামের তাবলীগ
করার কথা যতই বলুক কোরাআন যত সুন্দরই
তিলাওয়াত করুক, ছালাত ছিয়াম যতই
সুন্দর হোক, আমল যতই চমৎকার হোক, মূলতঃ
ঐ জামা'আতটি ইসলাম হতে বহির্ভূত
হবে।
সাহাবাগণ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ
রাছূল (ছাঃ)! ঐ দলটি চিনার সহজ উপায়
কি? আমাদেরকে জানিয়ে দিন। রাছূল
(ছাঃ) বললেন, এ ইসলাম বহির্ভূত
জামা'আতটি চিনার সহজ উপায় হলঃ
১) তারা যখন তালীমে বসবে, গোল হয়ে
বসবে।
২) অল্প সময়ের মধ্যে এ জামা'আতের
লোকদের সংখ্যা খুব বেশী হবে।
৩) এ জামা'আতের আমীর ও মুরব্বীদের
মাথা নেড়া হবে। তারা মাথা
কামিয়ে ফেলবে।
তীর মারলে ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে
যায়। ঐ তীর আর কখনো ধনুকের দিকে
ফিরে আসে না, তেমন যারা এ
জামা'আতে যোগদান করবে তারা
কখনো আর দ্বীনের দিকে ফিরে আসবে
না। অর্থাৎ এ জামা'আতকে দ্বীনের
পথে ফিরিয়ে আনার জন্য কোরাআন
হাদীছ যত দেখানো হোক, যতই চেষ্টা
করা হোক না কেন দলটি দ্বীনের পথের
ফিরে আসবে না। এদের সাথে
তোমাদের যেখানেই সাক্ষাত হোক,
সংগ্রাম হবে অনিবার্য। এ সংগ্রাম যদি
কখনো যুদ্ধে পরিণত হয় তাহলে তা
থেকেও পিছপা হবে না। এ সংগ্রাম বা
যুদ্ধে যারা মৃত্যুবরণ করবে, তাদেরকে যে
পুরস্কার আল্লাহ দান করবেন তা অন্য
কোন নেক কাজে দান করবেন না।
[বুখারী আরবী দিল্লী ২য় ভলিউম ১১২৮
পৃষ্ঠা ও ১০২৪ পৃষ্ঠা; মুওয়াত্তা ইমাম
মালিক আরবী ১ম ভলিউম ১৩৮ পৃষ্ঠা; আবূ
দাঊদ আরবী দিল্লী ২য় ভলিউম ৬৫৬
পৃষ্ঠা; তিরমিযী, মিশকাত আরবী ২য়
ভলিউম ৪৫৫, ৪৬২ পৃষ্ঠা]
হাদীছ সমূহের বর্ণনাকারী হলেন আবূ
সাঈদ (রাঃ), আলী (রাঃ), আবূ হুরাইরাহ্
(রাঃ), আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ)।
[বুখারী ৬ষ্ঠ খন্ড আধুনিক প্রকাশনী হাঃ
৬৪৪৯, ৬৪৫০, ৬৪৫২, ৭০৪১; মুওয়াত্তা ইমাম
মালিক ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খন্ড
হাঃ ৫৭৮]
( অনেক ধন্যবাদ মিয়া ভাই।)
আপনার হাদীসটি সঠিক নয়। একটু পরে দেখবেন কতজন এসে আপনার কমেন্টসে কতকিছু বলবে। তাই আগেই সাবধান করে দিলাম।
আমার পীরসাহেব সাবধান করা তাগিদ দিয়েছেন এজন্য দুকলম লিখে দিলাম।
আমার পীরসাহেব হক্কানী ও আল্লাহর অলী যা কোরআন ও হাদীদ দারা প্রমানিত।
আপনার পীরের নামটি কি জানতে পারি ? আপনার হাবভাবে বলতেছে আপনি আশেকে রাসুলের মুরিদ
আমার এক সহকর্মী আমাকে বলত- আমি হইলাম রফাদান!
-
আমার এলাকার এক মুরুব্বী বলেন- আহলে কিতাব!
-
আমাদের মসজিদের ঈমাম সাহেব বলেন- আমরা শাফেয়ী!
-
হানাফী বন্ধুরা বলেন- আমি আহলে হাদিস!
-
পরিচিত কওমী বন্ধুরা বলেন- আমি লা-মাযহাবী!
-
কেউ কেউ গালি দিয়ে বলেন- এই বেটা ওহাবী!
-
দুই-একজনকে বলতে শুনেছি- আমি নাকি সালাফী!
-
গ্রামের মানুষকে বলতে শুনেছি- আমরা মোহাম্মাদী!
-
-
কিন্তু আমি বলি আমি একজন মুসলিম!
এতক্ষন পরে আপনাকে পেলাম আমার কাছে। আমার এই পোষ্টটা দেওয়ার পর মৌমাছির চাকে ঢিল মারলে যেমন অবস্থা হয় আমার অবস্থা তেমন হয়েছিল । একবার এরাদা করেছি পোষ্টটি ডিলেট করে দেই কারন ব্লগে ইসলামের কথা বলা সুন্দর সুন্দর উদাহরন আলা লোকরাও দেখছিলাম ঐদিকে
আব্দুল মান্নান ভাই সময় মত হাদিছটি পেশ করেছেন এখন যাদের বুঝার তারা বুঝুক
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
-
http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/11215/Musolman/70419#.ViXQ9X4rLIU
-
http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/11215/Musolman/69487#.ViXRKn4rLIU
-
মাওলানা যাকারিয় (রহ.) তার পিতা থেকে শোনা এ কাহিনীতে বলেন, যমুনা যখন ভরপুর থাকে তা এপার ওপার করা অসম্ভব হয়ে থাকে। একজন ব্যাক্তি পানি পথের বাসিন্দ ছিল। যার বিরুদ্ধে খুনের মুকাদ্দামা করে ছিল। সে সময় যমুনা নদী টইটুম্বর ছিল। তাই সে প্রত্যেক মাঝিকে খোসামদ করতে লাগল। কিন্তু প্রত্যেকেরই একই জওয়াব যে, আমি কি তোমার সাথে নিজেকেও ওতে ডুবাব? এই বেচারা গরীব লোকটি পেরেশান হয়ে কেঁদে কেঁদে ফিরতে থাকল। এক ব্যাক্তি তার শোচনীয় অবস্থা দেখে বলল যে, যদি আমার নাম লও তাহলে আমি একটি উপায় বাতলাব। যমুনার নিকটে অমুক জায়গায় একটি ঝুপড়ি পড়ে আছে। তাতে একজন মাজযুব (আত্মভোলা) প্রকৃতির লোক পড়ে থাকে তার কাছে গিয়ে পড়ে যাও। খোশামদ ও কাকুতি মিনতি যা কিছু তোমার পক্ষে সম্ভব তা করতে মোটেই ছাড়না। তিনি তোমাকে যতই ভাল মন্দ করুক এমনকি যদি তিনি তোমাকে মারেনও তবুও ফিরে আসবে না। তাই লোকটি তার কাছে গেল এবং তাকে খোসামদ করল। কিন্তু তিনি তার অভ্যাস মতো তাকে খুবই ভর্ৎসনা করে বলেন যে, আমি কি খোদা, আমি কি করতে পারি? যখন সে কাঁদতেই থাকল তখন সেই বুযুর্গটি বলেন, যমুনাকে বলে দাও যে, সেই ব্যাক্তি যিনি সারা জীবন কিছুই খায়নি, না তার স্ত্রীর কাছে গিয়েছে , তিনি পাঠিয়েছেন যে আমাকে পথ করে দাও। তাইই সে গেল এবং যমুনা তাকে রাস্তা করে দিল। (ফাযায়িলে সদাক্বাত, পৃষ্ঠা-৫২৮)
আপনি !!
মন্তব্য করতে লগইন করুন