আব্দুল হালিম ভাইর মহানুভবতা এবং আমাদের আলেম সমাজের প্রতি সমাজের সর্বস্থরের লোকজনের দায়িত্বও কর্তব্য
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০৮ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:২৫:৪৪ রাত
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মহিম মুন্সি গরু নিয়ে ভাগাড়ের দিকে যাচ্ছে। সেই সকালে যখন ফযরের আযান হয়েছিল তখন আমরা কয়েকজন মহিম মুন্সির ইমামতিতে নামাজ আদায় করেছিলাম। তারপর আমরা সবাই যার যার বাড়ী গিয়ে একটু ঘুমাইছি বটে মহিম মুন্সি সাহবে ঘুমায়নি।
বেচারা মহিম মুন্সি এতভাল লোক, কিন্তু আল্লাহ রব্বুল আলামিন তাকে সম্পদের ভাগিদার করেননি।
মসজিদে আজান দেওয়া , নামাজ পড়ানো , জুমার নামাজ সহ মাত্র ২০০০টাকার বিনিময়ে। তাও প্রতিমাসে বেতন দেওয়া যায়না ,কারন মহিম মুন্সির যেই বেতন সেটা স্থানীয় মুসল্লিরা মাসিক চাদা দিয়ে পরিশোধ করে।
এই টাকাটাও মহিম মুন্সি নিজে মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে আদায় করা লাগে এমন কি বাজারে গিয়েও আদায় করতে হয়।
বেশির ভাগ সময় মহিম মুন্সির বেতনের টাকা পুরা হয়না। কিন্তু কি বা করার আছে তার তাই শোকর করে সেটা নিয়ে নিজের কর্ম চালিয়ে যান।
একটা গাই গরু পুষে দুধের বিনিময়ে কোন রকম তার সংসার চলে।
৩টা মেয়ে কোন ছেলে নাই মেয়েরা সবাই স্থানীয় একটা দাখেল মাদ্রাসায় পড়েন।
মহিম মুন্সির ইনকাম দিয়ে সংসার চলে ঠিকই কিন্তু কোন মাসে তার বাড়তি টাকা থাকে না।
একবার ঈদের সময় ছোট মেয়ে আকলিমা বায়না ধরেছে নতুন জামা কাপড়ের জন্য , এমন বায়না যে তাকে জামা কাপড় দিতেই হবে বলে কান্না শুরু করেছে। মেয়েটা দেখেছে পাশের বাড়ীর তার সমবয়সি মেয়েরা সবাই নতুন জামা কাপড় পড়েছে এখন সেও পড়বে !
ছোট আকলিমা সে কিন্তু তা বোঝেনা যে তার বাবার সেই সামার্থ নাই ।
মাহিম মুন্সি অনেকটা মলিন মুখেই গরুটাকে ভাগাড়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন আর মনে মনে ভাবছে আর মাত্র কয়েকটা দিনে বাদে ঈদ আসবে ! তখন মেয়েটা কি জবাব দিব !!
কয়েকবাড়ী পরের আব্দুল হালিম ভাই , মহিম মুন্সির অবস্থা আচ করতে পেরে মনে মনে ভাবলেন , আমাদের মতো সামর্থবান লোক যদি আজকে মহিম মুন্সিদের পাশে না দাড়াই তবে এমন একটা সময় আসবে যখন এই দেশে মসজিদ মাদ্রাসাগুলিতে কোন আলেম পাওয়া যাবে না ।
আলেমরা আমাদের খেদমত করবে বারো মাস আর আমরা তাদের খেদমত করতে পারবোনা তাহা হতেই পারেনা।
তাই উনি বুদ্ধি করে আব্দুল হালিম ভাই রাত্রের খানার আয়োজন করে মহিম মুন্সির পরিবারকে দাওয়াত দিলেন ।
তারপর খানা দানা শেষে ৫হাজার টাকা আব্দুল হালিম ভাইর স্ত্রী মহিম মুন্সির স্ত্রীর হাতে দিয়ে বললেন ভাবি এই ঈদে আপনারা সহ মেয়েদেরকে নিয়ে এই সামান্য টাকা গুলি খরচ করবেন। আপনারা আমাদের প্রতিবেশী এই সমাজের লোক আপনাদের প্রতি আমাদের অনেক দায়িত্ব আছে কিন্তু সেটা আমরা আদায় করি না ।
পরে মহিম মুন্সির পরিবার চলে এসেছে কিন্তু দুচোখের পানি ফেলে দুহাত তুলে দোয়া করে এসেছে আল্লাহ তুমি আমার ভাই আব্দুল হালিমকে রুজিতে বরকত দিবা এবং হালাল রুজি খাওয়ার তওফিক দিবা।
আমাদের সমাজে আব্দুল হালিম ভাইদের মতো লোকের যতেষ্ট অভাব রয়েছে ওনারা মহিম মুন্সিদের মতো ইসলামের খেদমত কারীদেরকে গোপনে সহযুগিতার হাত বাড়াইবে।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার কথা ঠিক গল্পের সাথে ছবির মিল ছিল না বিধায় ছবিটি সরাইয়া দিলাম
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন