পৃথিবীর ১০টি আজব বিয়ের রীতি

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:২১:১২ বিকাল



১.চীনঃ

চীনের তুইজা গোষ্ঠীর মেয়েরা বিয়ের ঠিক একমাস আগে থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে এক ঘণ্টা ধরে কাঁদে। ঠিক শুনেছেন, প্রতিদিন এক ঘণ্টা।

বিয়ের যখন ২০ দিন বাকি তখন তার মা তার সাথে এই প্রাকবিবাহ কান্নায় যোগ দেয়।

এরপর ২০ দিনের মাথায় এই আসরে যোগ দেয় কন্যার নানি।

শেষের দিনগুলোতে পরিবারের বাকি সব মেয়েরাও এতে যোগ দেয়। উদেশ্য একটাই, বিয়ের আনন্দ প্রকাশ করা। আসলে তারা যা করে তা হল নিচু স্বরে এক ধরনের গান যা আসলে কান্নার মতই শোনায়। এটাই তাদের ঐতিহ্য।

২.মঙ্গোলিয়াঃ

চীনের মঙ্গোলিয়ান গোষ্ঠীর কারো বিয়ের তারিখ ঠিক করতে হলে হবু বর-বধুকে একটি ছুরি নিয়ে একসাথে একটি মুরগির ছানা মারতে হয়। এরপর দেখা হয় সেই মুরগির ছানাটির কলিজার রঙ কেমন। যদি তা টাটকা এবং শুদ্ধ মনে না হয়, তবে বিয়ে আর হবে না। অপেক্ষা করতে হবে এভাবে যতদিন না দুজন মিলে একটি মুরগির ছানা মারতে পারে যার কলিজার দেখতে লাগবে টাটকা। তবেই না বিয়ের তারিখ আর বিয়ে।

৩.ভারতঃ

ভারতের মাঙ্গলিক মনে করা হয় এমন সব মেয়েদের প্রথমে কোন একটি গাছের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এবং বিয়ের পর গাছটি কেটে ফেলা হয়। মনে করা হয়ে থাকে যেসব মেয়েরা মাঙ্গলিক হয়, বিয়ের পর পরই তাদের স্বামীর মৃত্যুর হয়। এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে প্রথমে তাদের গাছের সাথে বিয়ে দিয়ে তা ধ্বংস করে ফেলা হয়। এর মানে হল তাদের উপর থাকা অভিশাপ কেটে গেল গাছের সাথে এই প্রথম বিবাহের ফলে, এবং তার স্বামীও মারা গেছে। এবার তার দ্বিতীয়, মানে আসল বিয়েতে আর কোন বাধাই থাকল না। শুনতে অবাস্তব লাগছে? ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনও কিন্তু মাঙ্গলিক ছিলেন, আর তার প্রথম বিবাহ গাছের সাথেই হয়েছিল!

৪.উত্তর বরনিওঃ

উত্তর বরনিওর তাইডং উপজাতির রীতি অনুয়াজী বিয়ের পর নব দম্পতিকে তিন দিন এবং তিন রাত পর্যন্ত ঘরে আটকে রাখা হয়। ভাবছেন ভালই তো, নিজেদের ভালবাসা কোনো ঝামেলা ছাড়াই দিব্যি উপভোগ করার একটা ভালোই তো সুযোগ! সমস্যা একটাই, এই তিন দিন এবং তিন রাত তাদের আটকে রাখা মানে কোথাও যেতে দেয়া হয় না। এমনকি প্রাকৃতিক কাজকর্মে সাড়া দেবারও কোন সুযোগ দেয়া হয় না।। সত্যি বলছি কিন্তু।

৫.ফিজিঃ

আপনি যদি ফিজির কোন বাসিন্দা হন, তবে বিয়ে করতে একটু ঝামেলা আছে বৈকি। কেননা, ফিজিতে শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তিই কন্যার পিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে যার হাতে থাকবে তিমির একটি দাঁত। মানে আপনাকে হয় যেতে হবে ব্ল্যাক মার্কেটে,নতুবা সমুদ্রে। তবে বলে রাখছি, পৃথিবীর বৃহত্তম স্তন্যপায়ী এই তিমি মাছ মানেই কিন্তু বেশিরভাগ সময় সমুদ্রের নিচেই তার বসবাস। তিমির দাঁত সংগ্রহ করার কাজটা একটু জটিলই বটে।

৬.দক্ষিণ সুদানঃ

দক্ষিণ সুদানে নেওউর গোষ্ঠীর লোকেরা বিবাহিত দম্পতিদের কমপক্ষে দুইটি সন্তান না হলে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করে না। দুইটি শিশু নিয়ে হাসি খুশি পরিবার মানে, এতদিনে সেই দম্পতির বিবাহ সম্পন্ন হল।

৭.কেনিয়াঃ

কেনিয়ার মাসাই উপজাতির বাবাকে যদি দেখেন মেয়ের মুখে থু ছিটাতে, বুঝেবেন এটাই তাদের মেয়ের বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বিদায় দেবার পুরানো রীতি। বিয়ে শেষে সাধারনত মেয়ের বাবা আশীর্বাদের জন্য তার মুখে এবং বুকে থু ছিটিয়ে দেয়। পাছে কারো নজর না লাগে!

৮.সুইডেনঃ

সুইডেনে যখনই নববধূ বা বর বাথরুমে যাবার জন্য তাদের টেবিল থেকে উঠে যায়, বসে থাকা তার সঙ্গিকে বিপরিত লিঙ্গের মেহমানরা এসে চুম্বন করার সুযোগ পায়।

মানে নতুন বর যদি অন্যদের মাঝ থেকে উঠে বাথরুমে যায়, তবে তার নববধূকে অন্য লোকেরা এসে চুম্বন করে যাবে।

আর নববধু যদি তার বরকে রেখে যায়,তবে অন্য নারীরা এসে তাকে আদর করে রেখে যাবে। বোঝাই যাচ্ছে যে বর বাথরুমে যাবে, এমনটাই সবাই আশা করে।

৯. স্পারটাঃ

প্রাচীন স্পারটা নগরীতে হবু বউয়েরা মাথার চুল কামিয়ে ছেলেদের মতন পোশাক-আশাক পরে তৈরি থাকতো। এর পরের কাজটুকু ছিল মূলত হবু বরের অগ্নি পরীক্ষা।

বিয়ের ইচ্ছে থাকলে সবার চক্ষু ফাকি দিয়ে এই ছেলে সেজে থাকা তার হবু স্ত্রীকে চুরি করে নিয়ে পালাতে হতো তাকে। তবেই কেবল সে নিজেকে বিয়ের উপজুক্ত বলে প্রমান করতে পারতো।

১০.আয়ারল্যান্ডঃ

আয়ারল্যান্ডের নববধূ এবং বর বধূ যখন নাচবে, তখন নববধূর খেয়াল রাখতে হয় যেন তার পা অবশ্যই মাটিতে থাকে। নইলে কিন্তু দুষ্ট পরীরা এসে ওকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে।

কেন এমন বিশ্বাস?

কারন পরীরা সুন্দর জিনিস ভালবাসে, আর নববধূ হল সব চাইতে সুন্দর আর আকর্ষণীয় । কাজেই একবার যদি সুযোগ পায়,পরীরা কিন্তু ওকে নিয়েই যাবে। তবে হ্যাঁ, পা যদি মাটির স্পর্শেই থাকে তবে আর দুষ্টগুলো ওকে নিতে পারবে না।

বিষয়: বিবিধ

২০৫৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343720
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০১
শেখের পোলা লিখেছেন : সাথে বাংলা দেশেরটা হলে ভাল হত৷ ধন্যবাদ৷৷
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২১
285148
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ঠিক বলেছেন
343733
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১৯
জুমানা লিখেছেন : বাংলাদেশেরটা দেন নাই কেন???????
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৮
285155
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ভাবছি দিব নেক্সট
343734
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২১
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : ওয়াও অসাধারণ বিষয় সম্পর্কে জানলাম। ধন্যবাদ
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৮
285156
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
343741
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:১৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এক সময় নাকি উপমহাদেশে সাত ধরনের বিয়ে ছিল। সবশেষ টা পিশাচ বিবাহ!!! বিস্তারিত দিলে পৈশাচিক মাইর খাওয়ার সম্ভাবনা!!
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:২০
285159
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
343748
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৫১
আবু জান্নাত লিখেছেন : এত কথা কই পান মুন্সি ভাই। সূত্র উল্লেখ করলে দারুন হতো।
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৫৭
285163
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : তাই !!


Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
343775
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:১২
কাহাফ লিখেছেন : উদ্ভূত বিয়ে রীতি পড়ে মজাই লাগল!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে উপস্হাপনার জন্যে!
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৩
285209
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
343808
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৪
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:২০
285212
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File