২০ বছর পর স্বামী-স্ত্রীর দেখা, পদদলিত হয়ে স্ত্রীর মৃত্যৃু

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:১৮:১৩ রাত



২০ বছর পর হজে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর দেখা। দেখার পর স্ত্রী বলেছিল আর কোনোদিন তাকে ফেলে চলে যাবেন না। বৃহস্পতিবার মিনায় পাথর নিক্ষেপের সময় পদদলিত হয়ে মারা যান স্ত্রী। সত্যিই কি নির্মম ঘটনা। চোখের পানি কি ধরে রাখা যায়? পৃথিবীতে এমন ঘটনা খুবই কম ঘটে, যা মানুষের হৃদয়কে নাড়া দিয়ে যায়। মৃত ওই হাজীর স্বামী মোহাম্মাদ বেলাল মিনার আল-জিসর হাসপাতালের বারান্দায় বসে আছেন শেষবারের মতো স্ত্রীকে দেখার জন্য আক্ষেপ করছেন। মোহাম্মাদ বেলাল বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে, তিনি তার স্ত্রীকে হারিয়েছেন, যেখানে ২০ বছর পর তাদের দেখা হয়েছিল এই হজে। দু’চোখ দিয়ে ঝরছিল পানি। কণ্ঠ যে তার জড়িয়ে আসছে। এরপরও বাংলাদেশি অন্য হাজীদের বেলাল বলছেন, কেউ তার স্ত্রীকে দেখেছেন কিনা। তিনি জানেন যে, তার স্ত্রী চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আর কোনোদিন দেখা হবে না তার সাথে। তার স্ত্রী প্রতিজ্ঞা করেছিল, আর কোনো দিন তাকে ছেড়ে যাবে না, সব সময় পাশেই থাকবে। দেশটির সংবাদমাধ্যম আল-হায়াত পত্রিকাকে কথাগুলো বলছিলেন বেলাল। প্রসঙ্গত, ২৫ বছর আগে সৌদি আরব যান বেলাল। সেখানকার ধাহারন আল-জানুব শহরের একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করেন তিনি। বেলাল বলেন, তিনি তার স্ত্রীর হজের জন্য ২০ বছর ধরে টাকা জমাচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে আমি তার কাছ থেকে দূরে রয়েছি। তার সাথে দেখা হলো, কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমি তাকে হারালাম। বেলালের বন্ধু আব্দুল আলিম তাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। কান্নার ফাঁকে অন্যদের জিজ্ঞাসা করেন, কেউ তার স্ত্রীকে দেখেছেন কিনা। এর পরপরই তিনি বুঝতে পারেন, তার স্ত্রী যে আর নেই। তিনি চলে গেছেন পরপারে। তার স্ত্রী হজে আসতে পারায় তিনি খুবই খুশি হয়েছিলেন। আমার স্ত্রী তিন সন্তানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিলেন। সে বুঝতে পারছিল হয়তো সে আর ফিরবে না। সকাল সাড়ে ৭টার (বৃহস্পতিবার) দিকে তারা (স্বামী-স্ত্রী) একইসঙ্গে জামারতে পাথর নিক্ষেপ করে ফিরছিলেন। আমার স্ত্রী ভিড়ের মাঝে নিচে পড়ে গেলে আমি চিৎকার করে কাঁদছিলাম। আমার স্ত্রীকে বাঁচান। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনেননি। প্রত্যেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ব্যস্ত। আমি আমার স্ত্রীকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছি, কিন্তু লাশের স্তূপ থেকে তাকে তুলে আনা সম্ভব হয়নি। আমি দেখেছি, তার বিস্তৃত চোখ দুটো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। বিলাল বলেন, এখন আমার একটাই সান্ত্বনা, আমার স্ত্রী সবচেয়ে পবিত্র স্থানে সমাহিত হবে। সে সৃষ্টিকর্তার কাছে একজন শহীদ হিসেবে সাক্ষাৎ করবে।

বিষয়: বিবিধ

১১৮৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343436
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১২:৫০
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজীউন! আল্লাহ মিনায় মৃত্যু বরণকারি সকলকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:২৯
284918
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : আমিন
343445
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:১৪
শেখের পোলা লিখেছেন : মর্মান্তিক৷
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:২৯
284919
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : হুম
343461
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:৪৫
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজীউন,আল্লাহ যে কখন কোন খেলা খেলেন তা তিনিই জানেন...চোখে দেখা মর্মান্তিক হলেও ভদ্র মহিলার ভাগ্য ইর্শ্বা করার মতো...আল্লাহর প্রিয় বান্দী হওয়ার দুর্লব সৌভাগ্য অর্জন করলেন.... অনেক ধন্যবাদ।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩০
284921
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
343465
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:০৩
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আল্লাহ যেন উভযকে জান্নাতুল ফিরদাউসে সাক্ষাৎ ঘটান
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩০
284922
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : আল্লাহর ওয়াদা হিসেবে তো তাই
343471
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:১৬
হতভাগা লিখেছেন : আল্লাহ উনাকে বেহেশত নসীব করুন আর উনার স্বামীকে এই শোক কাটিয়ে উঠবার তৌফিক দান করুন - আমিন ।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩১
284923
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : আমিন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File