!!!!!!!!!!!! অতীতের ফেলে আসা স্মৃতিগুলি !!!!!! ( পর্ব-২৯) ======================================
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:৫৫:৩৭ রাত
প্রায় ১৪ মাস পর বাড়ী আসলাম ৪৫ দিনের ছুটিতে। মা বাবা ঝিনাইদাহ থাকে বিধায় সবসময় আগে ওখানেই যাওয়া লাগে।
যথারিতি ঢাকা থেকে সরাসরি ঝিনাইদাহ গিয়ে মা বাবার সাথে এক রাত কাটালাম অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে।
তখন মাত্র ছেলের ২ বছর বয়স অর্থাত ছেলে জন্মের পর আমার দেশে আসা প্রথম তাই তো এখনো দেখা করতে না পারাটার আক্ষেপ রয়েছে।
অনেক কষ্ট করেও শ্বাশুড়ীকে বুঝাতে না পারাতে বাড়ী আলী নোয়াখালীতেই রাখতে হচ্ছে।
ঝিনাইদাহ থেকে পরের দিন আসব কিন্তু ছোট ভাই বলছে আজকে থাকেন কালকে যাওয়া যাবে ।
তার কথাতে পুরা সায় না দিলেও নাও করিনাই তাই বাড়ীর সবাই মনে করেছিল আমি কালকে যাব।
যখন বেলা গড়িয়ে আসরের নামাজের কাছাকাছি হয়েছে তখন হাউমাউ করে কান্না আসতেছিল আমার।
অনেক কষ্ট করে কান্না থামিয়ে মাকে বললাম মা আমি নোয়াখালী চলে যাই আল্লাহ যদি বাচায়ে রাখে তবে এক সপ্তাহ পরে আবার আসব ।
মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে অনুমতি দিলেন পর ছোট ভাই সহ ঢাকার গাড়িতে উঠলাম।
বিপদ যদি পিছে লাগে তবে মনের ভিতর যত মহব্বতই থাকুক না কেন সেখানে বিপত্তি হবে ঠিক তেমনই হলো।
আরিচা ঘাট পার হতে হতে সন্ধারও পরে হয়ে গেল , দুই ভাইর কাছে অনেক জিনিস পত্র দেখে পুলিশ মনে করেছিল ইন্ডিয়ার মাল নিয়ে এরা পাচার করছে ।
গাড়ীতে আমার মালপত্র চেক করার পরে বলছে আপনাকে থানায় আসতে হবে , আমি কারন জিজ্ঞাসা করলে সে বলল আপনার কাছে ইন্ডিয়ার মাল আছে যেটা অবৈধ !
আমি বললাম বাহ ! সুন্দর কথা বলেছেন ইন্ডিয়ার মাল কাতারে যারা বিক্রি করছে সেখান থেকে কিনাও কি অবৈধ ?
পুলিশ বলছে আমি অতসত বুঝি না আপনাকে থানায় যেতে হবে।
কয়েকজন যাত্রি যাদের আত্মিয়স্বজন কাতারে আছে তারা পুলিশকে বলছে ভাই কাতারের পুরা মার্কেট ইন্ডিয়ার দখলে সেখান থেকে মাল কিনলে বাংলাদেশেরটা পাবে কোথায়!
পুলিশ নাছোড় বান্দা তাকে মালপানি দিতেই হবে , এক লোক আমার কানে কানে বলছে ভাই আপনি মাল কিছু ছাড়তেই হবে ১০০০ খানেক টাকা দিয়ে ওরে বিদা্য় করেন।
অবশেষে ঐভাবে তাকে বিদাই করে দুই ভাই গাবতলির দিকে যাচ্ছি।
একটা লোক আমাকে বলল ভাই আপনাকে কিন্তু ঢাকাতেও ডিস্টার্ব করবে যদি কোন লোক থাকে তবে তাদের সহযুগিতা নিন নতুবা গাড়ি আলাকে বলে গাবতলি বাস স্টান্ডের আগে পিছে দাড় করান ।
কন্ট্রেকটার আমার কথা মতো বেশ খানিক আগে গাড়ি দাড় করিয়ে একটা সিএনজি অটোরিক্সা ঠিক করে তাতে দিয়ে দিল।
আমাদের মালপত্র সিটের পিছনে রেখে আড়াল করেছি আর ব্রিফকেসটা কাত করে দুইভাইর মাঝখানে এমন ভাবে রেখেছি যে বাইরে থেকে উকি মারলেও দেখা না যায়।
আমাদের অটোরিক্সা যেই সিনেমা হলের সামনে গেছে ওমনি কয়েকজন পুলিশ লাইট মেরে ধরেছে আর একজন পুলিশ সামনে দাড়িয়ে অটোআলাকে দাড় করিয়েছে।
আমরা দুইভাই সিধা বসা আছি ওরা লাইট মেরে বলছে দেখি অটোতে কি আছে কিন্তু বাইরে থেকে অনুমান করতে পারেনি আর অনেক ভিড় ছিল ওরা বলছে শালা ভুল ইনফরমেশন দিল কোথায় সেই অটো ?
আমাদের অটো আলা দিল টান আর আমাকে বলছে আপনারা গাবতলি যাবেনতো ! আমি সায়েদাবাদ পৌছাব পুলিশ কেন পুলিশের বাপও আমাদেরকে ধরতে পারবে না।
আমি বললাম আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনি চলুন।
তারপর কয়েকজাগায় পুলিশ চেক করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু অটোআলা চালাক সে কৌশলে রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলে যাতে অনেক ভিড়ের ভিতর তাকে আটকানোর কোন রাস্তা পায়না।
রাত ১১.৩০ মিনিট আমরা সায়েদাবাদ এসে দেখলাম রাতের শেষ বাস কিছুক্ষনের মধ্যে ছেড়ে যাবে ।
অটোআলার সহসিকতার জন্য ৩০০ টাকার ভাড়া ১০০০ টাকা দিয়েছিলাম
পরের পর্বে আবার দেখা হবে
বিষয়: বিবিধ
১৪০৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন