আওয়ামী বাকশালীদের রচিত ইতিহাসে রয়েছে নিছক মুজিবের বন্দনা। প্রকৃত ইতিহাস জানতে হলে পড়তে হবে সেই সময়ের বিদেশী পত্রিকা( পর্ব- ০৭)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০১:০৯:২২ দুপুর
এরপর ১৮ই ডিসেম্বর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি রাগে ফেটে পড়েন।
নিচের অংশটি আমার টেপ থেকে নেয়া।
“ম্যাসাকার? হোয়াট ম্যাসাকার?”
“ঢাকা স্টেডিয়ামে মুক্তিবাহিনীর দ্বারা সংঘটিত ঘটনাটি?”
“ঢাকা স্টেডিয়ামে কোন ম্যাসাকার হয়নি। তুমি মিথ্যে বলছ।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার, আমি মিথ্যাবাদী নই।
সেখানে আরো সাংবাদিক ও পনের হাজার লোকের সাথে আমি হত্যাকান্ড প্রত্যক্ষ করেছি। আমি চাইলে আমি আপনাকে তার ছবিও দেখাবো। আমার পত্রিকায় সে ছবি প্রকাশিত হয়েছে।”
“মিথ্যাবাদী,ওরা মুক্তিবাহিনী নয়।” “মি. প্রাইম মিনিস্টার,দয়া করে মিথ্যাবাদী শব্দটি আর উচ্চারণ করবেন না।
তারা মুক্তিবাহিনী।
তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল আব্দুল কাদের সিদ্দিকী এবং তারা ইউনিফর্ম পরা ছিল।”
“তাহলে হয়তো ওরা রাজাকার ছিল যারা প্রতিরোধের বিরোধীতা করেছিল এবং কাদের সিদ্দিকী তাদের নির্মূল করতে বাধ্য হয়েছে।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার, ..কেউই প্রতিরোধের বিরোধীতা করেনি।
তারা ভীতসন্ত্রস্ত ছিল। হাত পা বাঁধা থাকায় তারা নড়াচড়াও করতে পারছিল না।”
“মিথ্যেবাদী।” “শেষ বারের মতো বলছি, আমাকে মিথ্যেবাদী বলার অনুমতি আপনাকে দেবো না।” (ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরী, ওরিয়ানী ফালাসী অনুবাদে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু)
এই হল মুজিবের আসল চরিত্র।
ঢাকা স্টেডিয়ামে হাতপা বাঁধা রাজাকারদের কাদের সিদ্দীকী ও তার সাথীরা হত্যা করল, বিদেশী পত্রিকায় সে খবর ছাপা হল, বহু সাংবাদিকসহ বহু হাজার বাংলাদেশী সেটি দেখল, অথচ শেখ মুজিব সেটি বিশ্বাসই করতে চান না।
এতবড় যুদ্ধাপরাধের ন্যায় সত্য ঘটনাকে তিনি মিথ্যা বলেছেন।
অপর দিকে যে পাকিস্তান সরকার তার গায়ে একটি আঁচড়ও না দিয়ে জেল থেকে ছেড়ে দিল তাদের বিরুদ্ধে বলছেন, তাকে নাকি তারা হত্যা ও হত্যা শেষে দাফন করার জন্য তারই জেলের প্রকোষ্টে একটি কবর খোদাই করেছিল!
অথচ তার কোন প্রমাণই নেই।
কিন্তু সমস্যা হল, সাধারণ বাংলাদেশীদের জন্য ইতিহাসের এ সত্য বিষয়গুলো জানার কোন পথ খোলা রাখা হয়নি।
ইতিহাসের বই থেকে এসব সত্যগুলোকে পরিকল্পিতভাবে লুকানো হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে এ বিষয়ে কিছুই বলা হচ্ছে না।
যে কোন ফসলের ক্ষেতে গাছের পাশে বহু আগাছাও থাকে। জীবনটা সুখের করতে হলে কোনটি গাছআর কোনটি আগাছা এটি জানা জরুরী।
নইলে আগাছার বদলে ফসলের গাছকে আবর্জনার স্তুপে যেতে হয়। আর তখন পানিও সার গিয়ে পড়ে আগাছার গোড়ায়।
যে কোন জাতির জীবনে শুধু মহৎ মানুষই জন্ম নেয়না। চরিত্রহীন দুর্বৃত্তরাও জন্মায়।
শিক্ষক ও পাঠ্য বইয়ের কাজ হল,মহৎ মানুষের পাশাপাশী দুর্বৃত্তদের চিত্রগুলোও তুলে ধরা। এটি না হলে ফিরাউন, নমরুদ, আবু জেহলের মত দুর্বৃত্তরা বীরের মর্যাদা পায়।
কিন্তু বাংলাদেশে সেটি হয়নি। হয়নি বলেই কে সৎ আর কে দুর্বৃত্ত সেটি চিনতেই ভূল করে।
সবচেয়ে বেশী ভূল করে তারা যারা এ শিক্ষা ব্যবস্থায় জীবনের দশ-বিশটি বছর কাটায়।
এজন্যই বাংলাদেশে যখন একমাত্র দল বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হল তখন এ সব শিক্ষিতরা দল বেধে লাইন ধরেছিল।
বাকশালে যোগদানেরসে মিছিলে শামিল হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুরোন রাজনীতিবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রবীণ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী। গণতান্ত্রিক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধে যে .. তারা কত নিম্ন মানের ছিলেন সেদিন সে প্রমাণও তারা রেখেছিলেন।
বিষয়: বিবিধ
১২১৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ওরা পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে ভাবে পাহাড়ের চেয়ে তার হাতই বড়। আসলে আজ যেমন কিছু বিদেশী বন্ধু আওয়ামী লীগের পক্ষে সাফাই গায় তেমনি আরো অনেক বিদেশী বন্ধু আছে যারা প্রকৃত সত্য জানে কিন্তু সেই একই কথা তথ্যগোপন করে রেখেছে। আফসোস! তবে আশার আলো দেখতে পাই এ দেশের জাতি এক সময় সত্যিকারের সত্যটা জানতে পারবে ঠিক তখনই রায় হবে কে দোষী আর কে বিনা দোষে হাসি মুখে ফাঁসির মঞ্চে দাড়ালো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন