!!!!!!!!!!!! অতীতের ফেলে আসা স্মৃতিগুলি !!!!!! ( পর্ব-২৬) ======================================

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:৫৭:৩৪ বিকাল



চাচা ফৈজদ্দি মুন্সি ছিলেন সমাজের অন্যান্ন লোকজন থেকে সম্পুর্ন আলাদা মনমস্তিক্য সম্পন্ন ব্যাক্তি।

ঐ ভদ্রলোকের বাড়ী কুষ্টিয়া জিলার স্বস্তিপুর গ্রামে। লেখাপড়ায় সম্ভবত তেমন না হলেও শিক্ষিত লোকদেরকে ভাল বাসতেন নিজে সবসময় নামাজ কালাম নিয়ে ব্যাবস্ত থাকতেন।

নিজের বড় ছেলেকে বিএ পাশ করিয়েছিলেন সেই ১৯৮২ সালে কিন্তু আমার জানা অবধি তার কোন চাকুরী হয়নি। পরে হয়তো হয়েছিল কিন্তু ,,

ওনার একেবারে বাড়ীর সাথেই প্রাগঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদ অবস্থিত। ইতিহাসে যাকে স্বস্তিপুর শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিত।

প্রতি শুক্রবারে সেখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় , নিয়ত মানতের ছাগল মুরগি বিভিন্ন জিনিসপত্র খাদ্য খাবার নিয়ে আসে।

নগদ টাকা পয়সা আনলে মসজিদের দানবাক্সে ফেলে।

সেখানে ততকালিন সময়ে তেমন দালাল ছিল না বললেই চলে তারপরেও লোকজন মানতের টাকা পয়সা সবসময় দান বাক্সে ফেলতো।

ইট সিমেন্টের তৈরী বিশাল বড় হাউজ ছিল তাতে লোকজন ভাত অন্যটায় তরকারী ঢালতো। কয়েক মন চিনির বাতাসা বা জিলাপি আসতো সেখানে।

এই সকল খাদ্যখাবারের জন্য সেখানে দুরদুরান্ত থেকে গরিব মিসকিনরা ভিড় করতো।

ফৈজদ্দি মুন্সি সবসময় নামাজ কালাম পড়ে দোয়া দুরুদ পড়ে তারপরে আস্তে আস্তে বাড়ীর দিকে আসতো।

দুরদুরান্ত থেকে অনেক গরিব মিসকিনরা ফৈজদ্দি মুন্সির সাথে দেখা করতো বলতো আমি আপনার কাচারীতে থাকবো যদি আপনি অনুমতি দেন আর আশপাশের লোকজন থেকে বা শুক্রবারে লোকজন আসে তাদের থেকে কিছু সাহায্য উঠাবো। আমি অনেক গরিব মানুষ তখন চাচা তাদেরকে অনুমতি দিতেন ।

ফৈজদ্দি মুন্সির কাচারীতে সবসময় দুতিনজন মেহমান থাকতো যাদেরকে খানা থাকা দিতেন চাচা ফৈজদ্দি মুন্সি।

চাচা বলতেন মেহমান যদি আমার ঘরে খানা খায় তবে আমার ঘরে বরকত আসবে অভাব আসবে না ।

চাচীর একপা লেংড়া ছিল অনেক কষ্ট হতো খানা বানাতো তারপরেও এমন কোন সময় ছিল না যখন কোন গরিব মিসকিন (চাচার জবানিতে মেহমান)রা এসে খানার কথা জিজ্ঞাসা করেছে আর প্রতিউত্তরে বলেছে এখন খানা নাই এমন হয়নি।

জানি না বর্তমানে সেই চাচা ফৈজদ্দি জিবিত আছে কি না ,যদি জিবিত থাকেন তবে দোয়া করি হায়াত দারাজ করুক আর পরপারে গেলেও দোয়া করি জান্নাত বাসী করুক।

ঐ ভদ্রলোকের বাড়ীতে দুই বছর লজিং ছিলাম

পরের পর্বে দেখা হবে

বিষয়: বিবিধ

৮৮৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

341647
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৯
শেখের পোলা লিখেছেন : অতীতে ছৈজদ্দী চাচার মত অনেক চাচারা ছিলেন, এখন অমন চাচা খুঁজে পাওয়া মুশকিল৷আবার আসব৷
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫১
283021
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : Applause Applause Applause Applause Applause সহমত
341675
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:১৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আল্লাহতায়লা উনার উপর রহম করুন। সমাজে এমন পরোপকারি মানুষ এখন অনেক কমে গেছে। চট্টগ্রামের প্রাচিন কলেজিয়েট স্কুল এর কাছেই আমাদের নিজস্ব বাসা। আমার আব্বার কাছে শুনেছি তিনি যখন চাকরি করছেন অর্থাত ১৯৭১ সালের আগেও এই এলাকার সকল বাড়িতে একটা বাইরের ঘর ছিল যেখানে থেকে এক বা একাধিক দরিদ্র ছাত্র পড়ালেখা করত। আমাদের বাসায় ও নাকি ছিল। এমনও ছিল যে যাদের বাসায় থাকার সুযোগ ছিলনা অন্য বাসায় থাকা কোন ছাত্রকে তারা তিনবেলা খাওয়াতেন। সেই খাওয়া আলাদা কিছু ছিলনা। নিজেরা যা খেতেন তাই খাওয়াতেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৪৪
283053
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : জি ভাই আপনার সাথে সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File