!!!!!!!!!!!! অতীতের ফেলে আসা স্মৃতিগুলি !!!!!! ( পর্ব-২৩) ======================================
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:৩৭:৫০ বিকাল
নিজের বাড়ী ঝিনাইদাহ কিন্তু বিয়ে করেছি লক্ষীপুরের রামগন্জ উপজিলায় । প্রতি বছর ছুটি কাটাতে বাড়ীতে আসলে ৩০ দিন সময় দেখতে না দেখতেই শেষ হয়ে যায়।
মা বাবা ভাই বোন সহ সবাই ঝিনাইদাহ কিন্তু বিপত্তি হলো বাড়ী আলীকে নিয়ে তার আপনজন একমাত্র মা এবং পালিত বোন ছাড়া আর কেউ নাই , তাই ইচ্ছায় হোক আর অনিশ্চায় হোক তাকে বেশী সময় ওখানে থাকা লাগে ।
আমরা পরিবারের ৪ সদস্য ( বাড়ী আলী , ছেলে হাছান এবং মেয়ে জান্নাত ও আমি) ঝিনাইদাহ থেকে ঢাকার দিকে রওয়ানা হয়েছি । সম্ভবত বৃহসপতিবার দর্শনা ডিলাক্স এ করে যাচ্ছি ।
আমাদের জন্য দুইটা সিট এবং ছেলের জন্য একটা সিট বুকিং করেছি। আরিচা ঘাট পার করে মানিকগন্জও পার করেছি , চোখে প্রায় সব যাত্রিরই একটু তন্দ্রা তন্দ্রা ভাব ।
হটাত বিকট শব্দ হয়ে ডান পাশের কাচ সব ভেঙ্গে গেছে । আমাদের গাড়ীকে সাইট ঠিক মতো না দেওয়াতে বিপরিদ মুখী ট্রাকটির বডির সাথে ঘষা লেগে এমনটি হয়েছে।
আমার ছেলে হাছানের মাথা দিয়ে কাচের টুকরা ঢুকে এমন ভাবে রক্ত বের হচ্ছিল যে তার চেহারা দেখা যাচ্ছিল না।
আমি একটা জিনিস বিশেষ ভাবে লক্ষ করেছিলাম যখন গাড়িটিকে সজোরে ট্রাকটি ধাক্কা দিল আর গাড়ির কাচগুলি ঝনঝনিয়ে ভিতরের দিকে পড়ছিল এক ভদ্রলোক আমার ছেলেকে বুকের ভিতর আগলে ধরেছিল যাতে করে আমার ছেলের মাথায় একটা কাচ ঢুকেছিল কিন্তু ঐ ভদ্রলোকের মুখ সহ শরিরের অনেক অংশ কেটে গেছে।
গাড়িটা স্বাভাবিক ভাবে কন্ট্রোল করে দাড়ায়ে পড়েছিল।
মুহুর্তের মধ্যে পুরা এলাকা যেন শোকের মুহ্যমান হয়ে গেল। কারোর ঠোক কাটা কারোর চোয়ালের টুকরা কাটা কারোর শরিরের বিভিন্ন অংশ কাটা আর শুধু চিতকার আর চিতকার হচ্ছে। অধিকাংশ বলছে আমাকে বাচান আমাকে বাচান কিন্তু অবস্থা এমন হলো যে সবাই সবাইকে নিয়ে ব্যাস্ত।
আমার ছেলের এই অবস্থা দেখে মাথা ঠিক নাই কি করব আমরা ! অনেক দুর থেকে গ্রামের লোকজন ছুটে এসেছে আমাদেরকে সহযুগিতা করতে কিন্তু এই মুহুর্তে আমাদের দরকার চিকিতসা।
এক ভদ্রলোক আমার ছেলের এই অবস্থা দেখে বলল এককাজ করেন ওর মুখটা একটু ছাপ করে দেন দেখি ওর কোথায় কি হয়েছে তাছাড়া এখানে তো গাড়ি পাওয়াটা বেশ মশকিল আশপাশে কোন দোকান পাটও নাই।
আমার পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখটা মুছে দিতেই মনটা একটু সস্তি পেল।
শুধু কপালের একটু উপরে কাচের আঘাত লেগেছিল সেখানে গর্ত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে গাড়ির মোটা কাচ আঘাত করে বের হয়ে গেছে।
যেই ভদ্রলোকটি আমার ছেলেকে আগলে ধরেছিলেন তাকে শুধু একটু ধন্যবাদ দিয়েছিলাম যদি সেই লোকটির ঐ মুহুর্তে চিকিতসার খুব দরকার ছিল কিন্তু .....
কিছুক্ষনের ভিতর লোকজন কোন না কোন ভাবে ডাক্তারের কাছে যেতে লাগলো।
আমি ঐ লোকটির মোবাইল নাম্বারটা নিতে ভুলে গেছি সুস্থ হলে পর ফোন করে একটু ধন্যবাদ দিব । অনেক আফসুস করেছি তখন
আমার বন্ধু মানুষ যিদি কাতার থেকে পরিচিত তখন ঢাকাতে ব্যাবসা করতেন তাকে ফোন দেওয়ার সাথে সাথে উনি টেক্সিক্যাব নিয়ে টঙ্গি থেকে রওয়ানা দিয়েছেন আর আমাকে বলল আপনি কোন না ভাবে গাবতলির দিকে আসুন।
যাই হউক উনি আমাদেরকে নিয়ে প্রাথমিক চিকিতসা দিয়ে তারপর বাসায় নিয়েছিলেন ।
পরের দিন আমরা নোয়াখালী যেতে সক্ষম হই
পরের বার বলব বাকী কথা
বিষয়: বিবিধ
১২৩৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার বাড়ি ঝিনেদা অথচ আপনার ভাষায় সিলেটি ইঙ্গীত কেন জানাবেন কি?
মশকারী করে আমাদের কাদের সিলেটি কাদের ভাইর সাথে প্রায় সময় সিলেটি ভাষার রিএক্সল করতাম
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ
আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন