ফাঁসি দেওয়া হয়নি মেজর (অব.) বজলুল হুদাকে । হাসিনা বুকে পা দিয়ে চেপে রেখেছিলো, জল্লাদ গরুর মত জবাই করে

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:৫৩:৪০ রাত

ফাঁসি দেওয়া হয়নি মেজর (অব.) বজলুল হুদাকে । হাসিনা বুকে পা দিয়ে চেপে রেখেছিলো, জল্লাদ গরুর মত জবাই করে হঠাৎ এমন কথা শুনে অনেকে অবাক হচ্ছ? আজ আপনাদেরকে জানাবো সেই অপ্রকাশিত সত্য। অনেক কিছু লেখার ইচ্ছা ছিলো তবে সংক্ষেপে কিছু জানাব। আজ থেকে প্রায় এক বছর আগে আমার কানে আসে বজলুল হুদা স্যারকে ফাঁসি দেওয়া হয়নি। এটা শুনার পর থেকে আমি এর সত্যাতা যাচাইয়ে তদন্ত শুরু করি। মাঝখানে কয়েকমাস দেশের বাইরে থাকাতে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটে। আসার পর আবার অনুসন্ধান শুরু করি। যার কথা লিখছি তিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পাকিস্থান বন্দি শিবির থেকে যে কয়জন অফিসার পালিয়ে এসে বাংলাদেশে যুদ্ধ করেছিলেন তাদের অন্যতম এই মহান বীর মেজর বজলুল হুদা। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট একদল বীর সেনানী জাতিকে দিয়েছিলো এক ‘ডিভাইন জাস্টিস’। জাতিকে মুক্ত করেছিলো এক রাহুগ্রাস থেকে। এবং ৭৫ এর ২৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন খোন্দকার মোশতাক সরকার ইন্ডেমনিটি আইন (দায়মুক্তি অধ্যাদেশ) দিয়েছিলো (অবশ্য এই মোস্তাক সরকারকে শপত বাক্য পাঠ করেছিলো হাসিনার বর্তমান উপদেষ্টা এইছ টি ইমাম)। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার দায়মুক্তি অধ্যাদেশটি বাতিল করে ঐ হত্যাকান্ডের বিচার শুরু করে। দীর্ঘ ১৫ বছর এর বিচারকার্য চলে। মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ বিশ জন শেখ মুজিব হত্যার আসামি করা হয়েছিলো। এর মধ্যে সাবেক মন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কে এম ওবায়দুর রহমান, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর, তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও মেজর (অব.) খায়রুজ্জামানসহ পাঁচজনকে খালাস দেন আদালত। শেষঅব্দি ১৫ জনকে ফাঁসির আদেশ দিলেও রিভিওতে তিন জনের ফাঁসির আদেশ বাতিল করে। বাকি বার জন হচ্ছেনঃ মেজর (অব.) বজলুল হুদা, মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার), লে. কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশিদ, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান ও লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদের (আর্টিলারি), আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, মোসলেমউদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী আব্দুল মাজেদ, আব্দুল আজিজ পাশা। শেষের ছয় জন বিদেশে আছেন। তাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের পরোয়ানা রয়েছে। দণ্ডিত অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আব্দুল আজিজ পাশা। স্মরণ করে দেই, এই মামলা চলাকালে ৮ জন বিচারক বিব্রতবোধ করে বিচার কার্যক্রম থেকে সরে এসেছিলো। মূল কথায় আসি। ১৯৯৬তে মেজর (অব.) বজলুল হুদাকে গ্রেফতারের পর তার মাকে আওয়ামীলিগের লোকজন লাত্থি মারতে মারতে ঘর থেকে রাস্তায় এনে ফেলে। সেই থেকে বৃদ্ধ মহিলা অসুস্থ হয়ে যায়। ২০০০ সালের ১৫ই মার্চ বজলুল হুদার বৃদ্ধ মা ইহজগৎ ছেড়ে চলে যান। তখন মায়ের জানাজায় অংশ নিতে বজলুল হুদার প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানায় তার পরিবার। কিন্তু মায়ের জানাজায় অংশ নিতে অনুমতি পায়নি। অতপত তার মায়ের লাশ জেল গেটে দেখার আবেদন করে। জেল গেটে ৭ ঘন্টা তার মায়ের লাশ রেখে অনেক তালবাহানা ও নাটক করে বজলুল হুদাকে ১ মিনিটের জন্য তার মায়ের লাশ দেখতে দেয়। ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এই মধ্যে আরেকটা লোমহর্ষ কথা বলি। ২৭ জানুয়ারী লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদের কারাবন্দি দুই ছেলে নাজমুল হাসান সোহেল ও মাহাবুবুল হাসান ইমু কে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা জেলে আনা হয় যারা আওয়ামী সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস হত্যাচেষ্টা সাজানো মামলায় আটক ছিলো। তাদেরকে যে প্রিজন ভ্যানে আনা হচ্ছিলো সেই একই ভ্যানেই ছিলো এক হিন্দু জল্লাদ যে কিনা তাদের বাবাকে পরেরদিন ফাঁসিতে ঝুলাবে। বিলিভ ইট অর নট!!!!!!!! এই জল্লাদের কথা পরে বলছি। সে আওয়ামীলীগেরই সমর্থক যার স্বল্প মেয়াদি সাজা হয়েছিলো। বুঝলাম তাদের বাবা ফাঁসির আসামি। তাই বলে একই ভ্যানে তার বাবার জল্লাদকেও রাখতে হবে। একবার চোখ বন্ধ করে ভেবে দেখো তো ঐ দুই ছেলের কি মানসিক অবস্থা ছিলো? ২৮শে জানুয়ারী ২০১০: রাত ১১টায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান শিকদার, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম খান, ঢাকার জেলা প্রশাসক জিল্লার রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অমিতাভ সরকার, ডিএমপি কমিশনার এ কে এম শহীদুল হক, ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. মুশফিকুর রহমানসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ১১টা ২০ মিনিটে পাঁচটি কফিন বক্স কারাগারের ভেতরে ঢোকানো হয়। (এদের নাম ও পদবি উল্লেখ করে রাখলাম। বিশেষ কারনে র‍্যাবের কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করলাম না। এদেরকে কোন একদিন সাক্ষী হিসাবে ডাকা হতে পারে।) রাত ১১:৪০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আশেপাশের ও কারাগারের অভ্যন্তরের সব বিদ্যুৎ একসাথে চলে যায় (কয়েকটা পত্রিকায় এটা এসেছিলো তখন)। ঠিক তখন দুইটা কালো টিল্টেড গ্লাসের পাজেরো জীপ ঢূকে কারা অভ্যন্তরে। এর একটা পাজেরোতে ছিলো শেখ হাসিনা স্বয়ং। হাসিনা নিজে সেদিন ফাঁসির মঞ্চের সামনে উপস্থিত ছিলো ৪ জনের ফাঁসি নিজ চোখে দেখার জন্য। শুনে অবাক লাগছে? অনেক পত্রিকায় আসছিলো যে দুইটা ফাঁসির মঞ্চে দু’জন করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিলো। এবং এও এসেছিলো যে মেজর বজলুল হুদাকে প্রথম ফাঁসি দেওয়া হয়েছিলো!!!! আসলে মেজর বজলুল হুদাকে ফাঁসির মঞ্চেই নেওয়া হয়নি। মেজর হুদাকে প্রশাসনিক ভবনের একটি রুমে রাখা হয়েছিলো। দু’জন করে চার জনের ফাঁসির কাজ সমাপ্তির পর হাসিনা যায় মেজর বজলুল হুদার সেই রুমে। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলো সেই কাশিমপুর থেকে আনা হিন্দু জল্লাদ। যেভাবে কোরবানির গরু জবাই করা হয় ঠিক একই ভাবে চারজন মেজর হুদার শরীর চেপে ধরেছিলো আর হাসিনা মেজর হুদার বুকের উপর এক পা দিয়ে চেপে রেখেছিলো আর সেই হিন্দু জল্লাদ জবাই করেছিলো। প্রত্যক্ষ দর্শীর বর্ণনা থেকে জানতে পারি জবাইয়ের সময় কিছু রক্ত ফিনকি দিয়ে হাসিনার শাড়ির বেশকিছু অংশ ভিজে যায়। হুদার লাশ পরেরদিন ১০টায় আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে নেওয়ার আগে কয়েক হাজার পুলিশ, বিডিআর ও র‍্যাব অবস্থান নিয়েছিলো। লাশ নেওয়ার সাথে সাথে র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ৫ মিনিটের মধ্যে লাশ দাফনের জন্য চাপ দিতে থাকে তার পরিবারের সদস্যেদের। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা ও কয়েক লক্ষ উপস্থিত মানুষের চাপের মুখে র‍্যাব কর্তারা পিছু হটে। কফিন খোলার পর দেখা যায় লাশ অর্ধেক ডুবে আছে রক্তের মধ্যে। আবার গোসল করানোর জন্য লাশ নামানোর পর দেখা যায় মেজর হুদার গলা কাটা যা জাল বোনার মোটা সুতা দিয়ে সেলাই করা। অনুসন্ধানকালে মেজর হুদার লাশ গোসল করেছিলো এমন একজনকে আমি বারবার প্রশ্ন করেছিলা, “হুদা স্যারের হাতের রগ, পায়ের রগ বা ঘাড়ের পিছনের রগ কাটা ছিলো কিনা, চোয়ালের নিচে কালো দাগ ছিলো কিনা?” আমি তাকে বার বার এই প্রশ্ন করেছিলাম কারন ফাঁসির মঞ্চ থেকে নামানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য অনেকসময় হাত, পা বা ঘাড়ের রগ কেটে দেয় উপস্থিত সার্জন। না, উনি দেখেছেন স্রেফ জবাই করা আর হাতের উপর একটু চামড়া ছিড়া। সম্ভবত হ্যান্ডকাফ পরানো অবস্থায় জবাই করার সময় হাতের সামান্য চামড়া ছিলে যায়। মেজর হুদার পরিবারের কেঁউ আজ পর্যন্ত এই জবাই করার বিষয় নিয়ে মুখ খুলেনি তাদের জীবনের নিরাপত্তার কারনে। হাসিনা এতেও তৃপ্ত হয়নি। পাঁচ জনের লাশ কিভাবে দাফন করা হচ্ছে, কত লোকজন জানাজায় আসছে ও সেখানকার মানুষের পত্রিক্রিয়া সরাসরি লাইভ টেলিকাস্টে দেখেছে তার ড্রয়িং রুমে বসে!!!! আরেকটা কথা। সেই হিন্দু জল্লাদকে আর কাশেমপুর কারাগারে ফেরত নেওয়া হয়নি। অসমর্থিত সুত্রে জানতে পারলাম, তাকে কাগজে কলমে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার খোঁজ কেঁউ জানে না। ওয়েল, এই লেখাটা কোন বিচারকে জাস্টিফাই বা প্রশ্নবিদ্ধ করতে নয়। দুইটা বিষয় সামনে আনার জন্য। একটা হল হুদা স্যারকে আইন্সঙ্গতভাবে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া আর আমাদের দেশের সরকার প্রধান ক্ষমতা গ্রহনের পূর্বে শপথ বাক্য পাঠ করেন যেখানে একটা লাইন থাকে, “আমি…… নিজের হিংসা বিদ্যেষ বা আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন কাজ করবো না…………” বা এর কাছাকাছি ভাষায় তা লেখা থাকে। সুত্রঃ http://www.shomoyershathe.com Show less

বিষয়: রাজনীতি

১৮২১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

339664
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৮:১২
শেখের পোলা লিখেছেন : কি জঘন্য মনোবৃত্তি। আল্লাহ ৭৫ এ যে সাহসী মানুষগুলো দেশের মানুষের হা হুতাস দূর করেছিল৷ (যদিও কাউকে খুন করা তাদের উচিৎ ছিলনা) সেই লোকেরাই আবার তাদেরকে হত্যায় উল্লাস করে। তুমি এদের হেদায়েত দাও।তথ্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ৷
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩১
281038
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : কি বলবো জানি না
339702
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৫১
পাকিস্তানি চাচা লিখেছেন : অনেক দিন আগে লেখাটা ফেসবুকের মাধ্যমে পড়েছি তবে নতুন কিছু পাই নাই। কারন আমার ফাঁসি চাই বইয়ে আগেই শেখ হাসিনার আসল চরিত্র সম্পর্কে জেনে ছিলাম। যে প্রধানমন্ত্রী রক্ত ছাড়া কিছুই বুঝেনা সেই প্রধানমন্ত্রী কেমন হতে পারে একটু চিন্তা করেন। তবে এখন চিন্তা করার লেগবে না কারন বাস্তবতা দেখে নিয়েছেন গত ৭ বছরে।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:০৭
281054
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Good Luck
339924
০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৪২
মুক্ত কন্ঠ লিখেছেন : ওর বাবা বেশি বেড়ে গিয়েছিল তাই ওমন গনহত্যার শিকার হয়েছিল। এই ডাইনিটা ওর বাবাকে শতগুন পেছনে ফেলে দিয়েছে। ওর মৃত্যু যে কেমন হবে, কিভাবে হবে একমাত্র আল্লাই ভাল জানেন।
০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৩২
281316
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ওর করুন পরিনতি দেখার জন্য বাংলার ১৭ কোটি লোক অপেক্ষা করছে সাথে তার চেলাচুলাদেরও
ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File