অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে শিশুরা শিখছে : দুইজনের সম্মতিতে যৌন অনুভূতি প্রকাশ দোষের নয় !

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ২৯ আগস্ট, ২০১৫, ১০:৫৮:০৯ রাত



অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণকৃত ‘নিজেকে জানো’ বইয়ে লেখা হয়েছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব দোষের কিছু নয়। একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে ভালো লাগার পরের পর্যায়ে যৌন অনুভূতি এমনকি যৌন আকর্ষণও সৃষ্টি হতে পারে।

নিজেকে জানো বইটিতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ, প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠা, পরস্পরকে ভালো লাগা বা প্রেমের অনুভূতি প্রকাশের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে প্রথমে। এরপর ভালো লাগা পরের পর্যায় থেকে পরস্পরের প্রতি যে যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বইটির শুরুর দিকে একটি অধ্যায়ের নাম ‘বাইরের পরিবেশ’। এ অধ্যায়ের একটি শিরোনাম ‘একটি ছেলে আমার সাথে প্রায়ই গল্প করতে চায়। আমার যেন কেমন ভয় লাগে। কেন এমন হয়?’ এখানে লেখা হয়েছে এ বয়সে ছেলেরা মেয়েদের সাথে গল্প করতে চাইতেই পারে। একই ভাবে মেয়েরাও ছেলেদের সাথে কথা বলতে চাইতে পারে। কথা বলা বা গল্প করার মধ্যে কোনো দোষ নেই। এতে কারো ভালো লাগে বা আবার কারো ভয়ও লাগতে পারে। তবে সাধারণত এতে ভয়ের কিছু নেই। যখন ছেলেমেয়েদের এমন সম্পর্ক বেশি দূর গড়ায়, আর অবাধ মেলামেশার দিকে এগোতে থাকে তখন সময়মতো নিজেকে সরিয়ে নেয়াটাই ভালো।

বইটির আরেকটি অধ্যায়ের নাম ‘আকর্ষণ’। এ অধ্যায়ের একটি শিরোনাম ‘একটা ছেলেকে নিয়ে আমি অনেক ভাবি। মাঝে মধ্যে স্বপ্নেও দেখি। আগে তো এমন হতো না। এখন কেন হয়?’ এখানে লেখা হয়েছে কাউকে নিয়ে এ রকম ভাবনা হওয়া ভালো লাগার লক্ষণ। এটি আবেগের বহিঃপ্রকাশ, যা সাধারণত এ বয়সে হতে পারে। পরের পর্যায়ে এটি ভালোবাসায়ও রূপ নিতে পারে। কোনো ছেলেকে গভীরভাবে ভালোবাসার আগে তার সম্পর্কে আগেই সব কিছু জেনে নেয়া উচিত।

আকর্ষণের পরের অধ্যায়ের নাম ‘বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা’। এ অধ্যায়ে একটি শিরোনাম হলো ‘ছেলেদের সাথে ছেলেদের বন্ধুত্ব হয়। ছেলের সাথে একটি মেয়ের বন্ধুত্ব হলে এটা কি খারাপ?’ এখানে লেখা হয়েছে ছেলেমেয়ে বন্ধুত্বে কোনো ক্ষতি নেই। কিশোর-কিশোরী বয়সে ছেলেমেয়েদের মধ্যে জানা পরিচয় ও বন্ধুত্ব গড়ে উঠতেই পারে । তবে আমাদের সামজে ছেলে ছেলে অথবা মেয়ে মেয়ের বন্ধুত্ব যতটা সহজে গ্রহণ করে ঠিক একইভাবে ছেলের সাথে মেয়ের বন্ধুত্বের ব্যাপারটা অনেকে সহজে মেনে নেয় না। একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব দোষের কিছু নয়। তবে ছেলে ও মেয়ের বন্ধুত্ব শুধু বন্ধুত্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা ভালো।

বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার পরের অধ্যায়ের নাম ‘অনুভূতি প্রকাশ’। এ অধ্যায়ের একটি শিরোনাম ‘ভালো লাগার পরের পর্যায়’। এখানে লেখা হয়েছে ভালো লাগার পরের পর্যায়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে যৌন অনুভূতি এমনকি যৌন আকর্ষণও সৃষ্টি হতে পারে। এ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ বিভিন্নভাবে ঘটতে পারে, যেমন-চিঠি লিখে, দেখা করে, হাত ধরে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরেকটু কাছাকাছি এসে। যৌন অনুভূতি প্রকাশ করা দোষের কিছু নয়, তবে সেটি হতে হবে দুইজনের সম্মতিতে, মার্জিত ও শালীনভাবে। সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌন অনুভূতিকে যতটুকু সম্ভব সংযত করে রাখার চেষ্টা করাটাই ভালো। আরেকটা ব্যাপার মনে রাখা প্রয়োজন যে, প্রেমিক ও প্রেমিকার কথাবার্তা ও সম্পর্ক যেন নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, সেটি যেন সবার আলোচনার বিষয় না হয়।

এ অধ্যায়ে আরেকটি শিরোনাম হলো ‘আমি কি করে বুঝবো যখন একটি মেয়েকে আমার ভালো লাগে’? এখানে লেখা হয়েছে তোমার সাথে অনেক মেয়েরই পরিচয় হতে পারে

আলাপও হতে পারে। তবে সবাইকে যে ভালো লাগবে তেমন কোনো কথা নেই। যে মেয়ের কথা তোমার প্রায়ই মনে পড়বে, যার হাসি- যার কথা তোমার শুনতে ইচ্ছা করবে, যার সাথে একটু কথা বলার জন্য বা দেখা পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠবে মনে করবে সেই মেয়েটিকেই তোমার ভালো লাগে।

এই ভালো লাগাটা তাকে তুমি কোনো কিছু উপহার দিয়ে মুখে বলে বা চিঠি লিখেও জানাতে পারো। তবে মেয়েটিও তোমাকে পছন্দ করছে কি-না তা জানাটা খুব জরুরি। কারণ তুমি পছন্দ করছ বলেই মেয়েটিও তোমাকে পছন্দ করছে এমনটি নাও ঘটতে পারে। এ অবস্থায় তোমার পছন্দ জোর করে মেয়েটির ওপর চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়। মনে রাখার ব্যাপার হচ্ছে, সবারই নিজস্ব মতামত আছে এবং দুইজনের দুইজনকে যদি ভালো না লাগে তবে সম্পর্ক গভীর বা স্থায়ী হয় না।

বইয়ের এই সব অধ্যায়ের কথা উল্লেখ করে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বলেছেন কিশোর-কিশোরীদের প্রেম শিখানো ছাড়া এর উদ্দেশ্য আর কিছু নয়। এমনিতেই সিনেমা টেলিভিশন ও ইন্টারনেট যৌন বিষয়ে অবাধ প্রচার-প্রচারণা চলছে। কিন্তু তা ‘নিষিদ্ধ’ বিষয় বলেই বিবেচিত হয় কিশোর তরুণদের কাছে। কিন্তু স্কুলের পাঠ্য বইয়ে যদি তা স্থান পায় তবে কিশোরদের তরুণদের কাছে বিষয়টি আর নিষিদ্ধ থাকে না। আলোচ্য বইটির ক্ষতিকর প্রভাব ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়েছে বলে অনেক শিক্ষক-অভিভাবক উল্লেখ করেছেন। তারা বইটিকে প্রেম যৌনতার ‘হাতে কলমে’ শিক্ষা বলে বর্ণনা করে অবিলম্বে বইটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে

বিষয়: বিবিধ

২১৬২ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

338529
২৯ আগস্ট ২০১৫ রাত ১১:১৪
কাওছার জামাল লিখেছেন : ডেজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা
২৯ আগস্ট ২০১৫ রাত ১১:২৭
279987
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : বেহায়া শিক্ষা নট ডিজিটাল
আপনাকে অনেক ধন্যবাদGood Luck Good Luck Good Luck
338534
২৯ আগস্ট ২০১৫ রাত ১১:৩৬
কথার_খই লিখেছেন :
আপনার উল্লেখৃত বিষয়ে বছর খানেক আগের আমার একটি বিষদ বিতর্ক দেখে আসুন....!

http://www.somewhereinblog.net/blog/habib123best/29967407" target="_blank" target="_blank" rel="nofollow">শিশু কিশোরের পাঠ্যবইয়ে যৌনতায় ভরা চটির গল্প!!! আমারা সমাজটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি???
২৯ আগস্ট ২০১৫ রাত ১১:৪০
279989
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
২৯ আগস্ট ২০১৫ রাত ১১:৪৩
279990
কথার_খই লিখেছেন : http://www.somewhereinblog.net/blog/habib123best/29967407 দেখলাম লিংকটি কাজ করছে না! আবার দিলাম।
৩০ আগস্ট ২০১৫ রাত ১২:৩৯
279999
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

@কথার_খই
পড়ে এলাম, ওখানে এ মন্তব্যটি ভালো লাগলো

৩১. ২৩ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯
মুদ্‌দাকির বলেছেন:

যৌন শিক্ষার দরকার আছে, এবং তা পিউবার্টির সাথে সাথেই। পিউবার্টির আগেও না আবার বেশী পরেও না। কথা হচ্ছে শিক্ষাটা দিবেন কে বা কারা? ইসলামের হিসাবে শিক্ষাটা পাওয়ার কথা মা-বাবার কাছ থেকে। মেয়ের উচিৎ মেয়ে কে ধিরে ধিরে তার নিজের শরীরের পরিবর্তন আর এগুলোর সিগনিফিকেন্স বুঝিয়ে দেয়া। বাবার উচিৎ ছেলেকে সেইভাবে বুঝানো, আবার ছেলে মেয়ে উভয়কেই মাই বুঝাতে পারেন। এই সময়ে শরীরের পরিবর্তন বুঝা আর এগুলোর সিগনিফিকেন্স বুঝা খুব জরুরী।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আজকালকার মুসলিম সমাজ কনজারভেটিভ হতে হতে এমনি অবস্থা যে এখন এগুলো পলাপাইনের বই পড়ে জানতে হবে। এই সব বইতে যে কন্ডম আর পিলের বর্ননা আছে সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয়। এবং অনেক ক্ষেত্রে উলাটা এই ব্যাপার গুলোতে আগ্রহের সৃষ্টি করে দিতে পারে। আর একটা ব্যাপার হল, ক্লাসের প্রায় সকলে সমবয়স্ক হলেও সকলের পিউবার্টী কিন্তু এক সাথে আসবে না, কারো হয়ত ৯ এ আসবে কারো ১৪-১৫ বছরে। সেই সব ক্ষেত্রে এই শিক্ষা গুলো আমাদের মত দেশে অনেক কিশোর কিশোরী কে ডিপ্রেশনে নিয়ে যেতে পারে। এই ব্যাপার গুলো উচ্চ পর্যায়ে ভাবা হয়েছে কিনা, আল্লাহই জানে।।

তবে যৌন শিক্ষা আর সচেতনতার অবশ্যই দরকার আছে। প্রথমে জন সচেতনতার ক্যাম্প্যেইন করে বাবা-মা দের সচেতন করা যেতে পারে , যেন তারা তাদের সন্তান্দের এই ব্যাপারে কাউন্সিলিং করেন। যদি আর কোন উপায় না থাকে শ্রেণী কক্ষেই দিতে হবে। কিছু করার নাই


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকুমুল্লাহ
৩০ আগস্ট ২০১৫ রাত ০২:৫০
280004
কথার_খই লিখেছেন : ধন্যবাদ, আবু সাইফ ভাই। ওখানে ৬২টি মন্তব্য এসেছিলো পক্ষে বিপক্ষে।
338535
২৯ আগস্ট ২০১৫ রাত ১১:৪৮
338547
৩০ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৭:০৭
শেখের পোলা লিখেছেন : বেহায়া পনা শিক্ষা দিতে এবইই যথেষ্ট৷ নাইন টেনে নিশ্চয়ই আরও এ্যডভান্স নলেজের ব্যবস্থা আছে৷ এখন কলিযুগ,এর পরে আর যুগ নেই৷ বিগত যুগ গুলিতে এ সব নাশিখেই জন সংখ্যা এত কি ভাবে হল ভাববার বিষয়।
৩০ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:২২
280012
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : বেহায়াপনায় জনসংখ্যা বাড়বে না
যাই হউক
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
338560
৩০ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:৩৯
হতভাগা লিখেছেন : সেক্স হয় দুইজনের সন্মতিতেই । কিন্তু পরে এটাকে রেপ কেসে পরিনত করে একজন আরেকজনকে সাইজ করে ।

এসব শিক্ষার আসলেই দরকার আছে । তাহলে মানুষ এটা বুঝতে শিখবে যে : এক হাতে কখনই তালি বাজে না ।
৩০ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:৪৮
280034
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter
338570
৩০ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ১২:০০
দ্য স্লেভ লিখেছেন : বড় হাতুড়ি চেনেন ? এদের মাথা পাথরের উপর রেখে বাড়ি দিতে হবে,তাহলে মাথা থেকে আবারও ভালো কিছু বের হবে
৩০ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ১২:০৪
280046
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : এই গুলির নামই তো ডক্টর কুদরাতইখুদা শিক্ষা ব্যাবস্থা
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
338583
৩০ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০২:২৮
ইয়াফি লিখেছেন : এটা হচ্ছে Slow Poisoing! ধমনিরপেক্ষবাদীরা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মন-মগজ থেকে ইসলামকে দূরীভূত করার নানা কলা-কৌশল প্রয়োগ করে যাচ্ছে। ইসলামবিরুদ্ধ পরিবেশের ক্ষেত্র তৈরী করছে। তারা জানে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মন-মগজে ইসলামী চেতনা উজ্জীবিত থাকলে এদেশে তাদের ক্ষমতায় থাকার কোন সুযোগ নেই। কারণ এদেশের মানুষ নাস্তিক, ধর্মহীনদের ঘৃণা করে।
338584
৩০ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০২:৩৯
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ১০০ % সত্য
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
338647
৩০ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমরা তো ভাই এখন সে যুগেই চলে গেছি!
৩০ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২০
280115
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : জি

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File