!!!!!!!!!!!! অতীতের ফেলে আসা স্মৃতিগুলি !!!!!! ( পর্ব -১) ======================================
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০৭ আগস্ট, ২০১৫, ০১:২৪:৪০ দুপুর
সালটা ১৯৭১ই হবে মেজোভাই আড়ুয়াকান্দি স্কুলে পড়তেন। ছোট ছিলাম তো উনি কোন ক্লাশে পড়তেন সেটা মনে নাই।
সেই সময় সপ্তাহে একদিন বিস্কুট , ছাতু , পাউডার দুধ ইত্যাদি স্কুলে বিতরন হতো।
দেশের সব স্কলে দিত কিনা জানি না তবে মেজোভাই পড়তো সেখানে এইটার প্রচলন ছিল।
অন্যান্ন দিন সব ছাত্রছাত্রি উপস্থিত না থাকলেও বিস্কুট ছাতুর এবং দুধের দিন ঠিকই উপস্থিত থাকতো এবং বাড়ীতে ছোট ভাইবোন থাকলে তাদেরকেও আনতো।
আমিও আমার মেঝো ভাইর সাথে স্কুলে গিয়েছিলাম।
রুপভান টিনের তৈরী চারকোনা আলা বক্সের ভিতর বিস্কুল ছিল তো স্যার মেঝোভাইকে বললেন কিডারে হান্নান এই ছেমড়া ?
মেজোভাই বললেন সার আমার ছোটভাই ।
স্যার বললেন নে ওর ভাগ্য ভাল ,টিনের ভিতর অনেক বিস্কুট আছে তোরা দুই ভাই এইগুলি নিয়ে যা ।
পরে অন্য সারের কাছ থেকে দুধ এবং ছাতু নিয়ে অন্যান্ন ছাত্রদের সাথে দুই ভাই বাড়ীর দিকে রওয়ানা দিলাম।
স্কুলে যেতে এক রাস্তা দিয়ে গেলাম কিন্তু এখন আসছি অন্য রাস্তা দিয়ে।
মিয়াপাড়ার আম বাগানের মধ্যখানে আসার সাথে সাথে বামে নজর করে দেখি বিশাল বড় বড় খন্দক ( মোটামুটি ছোট খাট একটা পুকুর) কাছে এগিয়ে গিয়ে দেখি বন্দুক আলা লোকজন।
ওনারা আমাদেরকে দেখে বলছে এই বাচ্ছারা তোমরা এখানে কেন এসেছো ? সিধা বাড়ী চলে যাও এখানে আর কখনো আসবা না এবং যাহা দেখেছো কারোর কাছে বলবা না।
বন্দুক আলা লোকদের মুখে এমন কথা শুনে দে ছুট ! দৌড়ে অনেক দুর এসে একে অপরের মুখ দেখছি আর বলছি এরা কারা !
বাড়ীতে আসার পর প্রতিবেশী শফি ভাই বললেন এরা মুক্তিবাহীনি। পান্জাবীদেরকে আক্রমন করার জন্য মইচ্চা বানাইয়াছে খবরদার তোরা ছেলেপেলেরা আর ঐ পথ দিয়ে স্কুলে যাবি না।
যুদ্ধচলাকালিন মা আমাকে আর স্কুলে যেতে দেয়নি বিস্কুট আনতেও পারি নাই।
উত্তর পাড়ার আলী চাচাদের সাথে আমার আব্বার বেশ ভাল সম্পর্ক ছিল।
উনি রাজাকারদের কোন এজেন্ট ছিলেন কিনা জানি না . তবে পরে জেনেছি এজেন্ট না।
একদিন উনি আমার আব্বাকে বললেন , মুন্সি ভাই যুদ্ধর ভিতর সংসার চালাতে এত কষ্টর থেকে এককাজ করেন ।
আব্বা বললেন কি কাজ সেটা ?
আলী চাচা বললেন রাজাকারে নাম লেখান ১০০০ টাকা ভর্তির সময় দিবে মাসে মাসে ৫০০ টাকা দিবে চাল ডাল তেল লবন চিনি সবই দিবে।
আলী চাচার ঐ কথার উত্তরে আমার আব্বার জবাবটা কানের ভিতর এখনও বাজতেছে "
উনি বললেন আলী ভাই যদি মুক্তিবাহীনিতে যোগ দিই তবে রাজাকাররা আমাকে মেরে ফেলবে আর রাজাকারে যোগ দিলে মুক্তি বাহীনিরা মেরে ফেলবে ।
যেই হোক একদলতো পরাজিত হবে তখন বিজয়ী দল পরাজিতদের উপর প্রতিশোধ নিবে এটা স্বাভাবিক কথা !
আমি গরিব মানুষ কোন রকম ছেলেপেলে পড়াইয়া নিজের সংসার চালাই , আমি চাইলেই কোন কিছু হবে না জানি , তারপরেও আমার চাওয়া হলো দেশটা সুন্দরভাবে চলুক।
আপনি যাহা বলেছেন আর কখনো এমন কথা আমাকে বলবেন না নইলে কিন্তু বন্ধুস্থালী থাকবে না
(পরের পর্বে দেখা হবে )
বিষয়: বিবিধ
১১৮৫ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জনসংখ্যা পূর্ব-পাকিস্তানের বেশী হওয়া সত্ত্বেও দেশের সব গুরুত্বপূর্ন পদ দখল করে রেখেছিল পশ্চিম পাকিস্তানীরা ।
আজও যারা পাকিস্তান পাকিস্তান বলে হায় হায় করে তাদের কাছে জানতে চাই যে , পোস্ট যদি ৪ জনের হত তাহলে ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন পাকিস্তানী ও ৬ জন বাংলাদেশী হলে বাংলাদেশীদের কতজন চান্স পেত ?
আর একটা কথা বললেন যে দেশের ভিতর কেকে পাকিস্তান পাকিস্তান বলে ? আমার মনে হয় কেহ এমন কথা বলে না এই ধুয়াটা নিজেদের মতের বিপক্ষের দলের লোকদেরকে ঘায়েল করতে ব্যাবহার করা হয়
আমি সৌদিআরব রিয়াদে থাকি
-চলছে অলরেডি..
আপনার জিবন অভিজ্ঞতা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন