গেদু মিয়া বিয়ের পর তার মা বাবকে শত্রু ভাবা শুরু করেছে কারন শ্বশুড় বাড়ী থেকে যৌতুক আনাটাই কাল.........
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০৮ জুলাই, ২০১৫, ১২:৫৩:৩১ রাত
অনেক অভাবের সংসার গেদু মিয়ার মা বাবার। গেদু মিয়া কোরানের হাফেজ এবং৭/৮ ক্লাশ অবধি দাখেল মাদ্রাসাতে পড়ে এখন মোটামুটি ছোটখাটো মোল্লা বনে গেছে।
এমনিতেই পারিবারের সবাই পৈতৃক ভাবে প্রাপ্ত বকধার্মীক তো বটেই কিন্তু পারস্পরিক সম্পর্কের দিক কেমন যেন গোলমেলে বলে মনে হয়।
গোলমেলে মনে হলেও আশপাশ পড়শিদের তাতে কি ? ওরা নিজেরাই একশ।
ছুতো ন্যাতা বিষয় নিয়ে যখন তখন প্রতিবেশিদের সাথে ঝগড়া ফাসাদে লিপ্ত হয়ে যায়। কোন কোন ঝগড়ার মেয়াদ কাল কয়েকদিন অবধি স্থায়ী হয়।
গেদু মিয়ার বাবা লেদু মিয়া অনেক কষ্ট করেছে সংসারের চাকাকে সচল করতে কিন্তু দৈনন্দিন ব্যায়ের হিসাবের সাথে কোন রকম ওনার মুঠ চাউলের আয়ের সামনজস্য হয় না। ( মুঠ চাউল বলা হয় সকালে ছেলেমেয়েরা আরবী পড়তে আসে তখন এক মুঠ এক মুঠ চাউল আানে-টাকার বিনিময়ে ) এতে করে সংসারের ঘানি চলে না বিধায় অপরের জমিতে কাজ করে বাকিটা খরচ কভার করতে হয়।
এবার ভদ্রলোক লেদু মিয়া সিদ্ধান্ত নিল যেই ভাবে হোক গেদুকে একটা বিয়ে করাবে। যৌতুক নিয়ে বিদেশ পাঠাবে যাতে করে নিজের অতিত কষ্টের বোঝা লাগব করা যায়।
যেমন ভাবা তেমন কাজ , ঘটক কালা মিয়াকে বলা মাত্রই বিদেশের ভিষার শর্তে বিয়ের দিন তারিখ পাকা, কিন্তু বিয়ের দিন তারিখ পাকা হলেও পাত্রি কেমন তাহা দেখা হয়নি।
টাকার বউ নাকি বাকা ।
অবশেষে সমাজের মাতবর মিলন মিয়াকে নিয়ে পাত্রি দেখতে গিয়ে তো সবাই অবাক ! লেদু মিয়া টাকার জন্য এটা কি করলো ? কালো ,অনেক উচ্চতা এবং মোটা একটা মেয়ে ! লোকজনে কওয়া বলা করছে হোক না বিদেশের ভিষা তাই বলে এটা !!
লেদু এবং গেদু বাপবেটা রাজি তো অন্য লোকের নারাজিতে কি আসে যায় ! আপনারা উস্থিত থেকে বিয়ের কাজ শেষ করে দেন বাকিটা আমরা বুঝবো।
অবশেষে বিয়ের কাজ শেষ করে যার যার পথে সবাই বাড়ী চলে গেল।
কয়েক মাস পরেই শালিশ দরকার গালাগালি এবং ঝগড়া যেন এদের সাথে পুরা বাড়ীকে ছেয়ে বসেছে। দিন রাত্র সবসময় এদের জালায় বাড়ীর লোকজনও অস্থির হয়ে গেছে।
অবশেষে অনেক খড় কুটার আগুনের তাপে গেদুর শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের মন গলতে শুরু করেছে।
একদিন ভিষা নিয়ে গেদুর শ্বশুড় হাজির।
এখন গেদু বিদেশে থাকে। মা বাবা সহ একমাত্র ভাইও খুশি। সবাই ভেবেছে অনেক চেষ্টা করে বিদেশে গেছে হয়তো ভাগ্যের দুয়ারের তালা খুলে গেছে এখন আমাদের সংসারের অভাব দুর হয়ে।
কিন্তু না অভাব দুর তো দুরের কথা মা বাবার চোখের পানি আর শুকায় না।
যৌতুক আলা বউর তিক্ত আচরনে বাড়ীর লোকজনও হার মানছে। ভয়ে বাড়ীর লোকজন মুখ বুজে সব কিছু দেখেও চুপ থাকে ,কখন গেদু বাড়ী আসবে তার কাছে বউয়ের অহেতুক বাদরামির কথা জানাবে।
না না তোমরা কে ? সরে বসো ! আমার বউ তো আমারই তাই না, আমার মা বাবাকে কি আমি চিনি না তারা কত ভাল লোক। তোমরা মোটেও বাজে মন্তব্য করবা না ।
ছেলের মুখে এহন মন্তব্য শুনে মা বাবা হাউ মাউ করে কেদেই চলেছে ।
কিন্তু গেদু মা বাবাকে কোন শান্তনা দিবার প্রয়োজন মনে করলো না।
ছুটি শেষ করে মা বাবকে না বলেই বিদেশে পাড়ি জমালো।
এবার মা বাবার উপর সরাসরি হুকুম জারি করলো। আজকের থেকে আমি আপনাদেরকে আর কোন টাকা পয়সা দিতে পারবো না ,আমার ভবিষ্যত আছে । যদি অতিতের দেওয়া টাকাও রাগ করে ফিরিয়ে দিতে চান দিতে পারেন আমার কিছুই করার নাই।
মা বাবাকে তো বহু আগেই আলাদা করে দিয়েছিল।
অবশেষে বাবা লেদু মিয়া বয়সের ভারে নু্জ তারপরেও অন্যের জমিতে কাজ করে সন্তানের দেওয়া টাকাগুলি পরিশোষ করে দিল।
কিন্তু মায়ের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হতে লাগলো।
তাতে কি ? গেদুর বউ বলছে বদদোয়া করেন , আমাদের উপর কোন বদদোয়া লাগবে না।
ব্যাংগো করে শাশুড়ীকে কুটনি বুড়ি ডাকে। বলে ও কুটনি বুড়ি তুই পোলা ফুটাইছিস কিন্তু পোলাকে রুজি দিতে পারিস নাই এখন কোন লজ্জায় পোলার রুজির দিকে তাকাইস! শরম করা উচিত তোর আমি তোর পোলাকে রুজির ব্যাবস্থা করেছি এখন সে আমার কথাতে চলবে।
গেদু দুই বার ছুটিতে এসওে মা বাবার সাথে দেখা করেনি সামনাসামনি দেখা হলেও কথা বলেনি
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ ঐ সন্তানটাকে হেদায়েত দিবে কিনা জানি না তবে অহংকারেই হয়তোবা পতন হতে পারে
আমরা সবাই সেই কামনা করা উচিত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন