প্রেসিডেন্ট মুরসির দশটি অজানা তথ্য- যেই গুলি ওসমানী খেলাফতের সাথে সামনজস্য আছে
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ২৭ জুন, ২০১৫, ০৩:১১:৪৫ দুপুর
মোহাম্মদ মুরসি একমাত্র ব্যাক্তি যে কিনা মিশরের জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতা গ্রহন করেছিলেন । সেই ব্যাক্তিকে কিডন্যাপ করে বহুদিন গোপন করে রেখেছিল কুলাংগার সেনাপ্রধান সিসি।
মোহাম্মদ মুরসির যেই সকল গুনের কারনে তাকে কিডন্যাপ করতে বাদ্ধ হয়েছে সেই গুলি নিচে দিলাম
১. মুরসি একজন হাফেজ
একথাটি অনেকেই জানেন না যে প্রেসিডেন্ট মুরসি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করেছেন।
২. তিনি বিদ্বান
মুরসির শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেকেরই অজানা। তিনি পিএইচডি ডিগ্রিধারী এবং মিশরের জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি আমেরিকাতে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করেছেন এবং সেখানে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
৩. সাধারণ অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস
মিশরের প্রেসিডেন্টের জন্য বিভিন্ন বিলাসবহুল প্রাসাদ বরাদ্দ থাকলেও প্রেসিডেন্ট মুরসি তার জন্য বরাদ্দকৃত প্রাসাদে প্রথম ঢুকেই সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি সেখানে থাকবেন না। তিনি তার অফিসিয়াল কাজকর্ম প্রাসাদ থেকে পরিচালনা করলেও তার ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতেন। বর্তমান মুসলিম অনেক নেতাদের টয়লেটও হয়তো এই প্রেসিডেন্টের অ্যাপার্টমেন্টের চেয়ে বড়।
৪. মুমূর্ষু বোনের জন্য সরকারি সুবিধা নিতে অস্বীকৃতি
প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময় মোহম্মদ মুরসির বোন অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তাররা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাশ্চাত্যে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং মেডিকেলের প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করার অনুমতি চান। কিন্তু মুরসি বলেন যে তিনি তার পরিবারের জন্য কোনো বাড়তি সুবিধা নেবেন না। তার বোন সরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
৫. বক্তব্যের মাঝে আজান
একদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা দেয়ার সময় তাকে জানানো হয় নামাজের সময় হয়েছে। তিনি বক্তৃতা বন্ধ করে জোরে আজান দিতে শুরু করেন।
৬. এক গৃহহীন মহিলার প্রতি সহৃদয়
একজন গৃহহারা বিধবা মহিলা রাস্তায় জীবন যাপন করতেন। একদিন একটি গাড়ি তার পাশে এসে থামে যার ভেতর থেকে প্রেসিডেন্ট মুরসি নেমে তাকে জিজ্ঞেস করেন কেন তিনি রাস্তায় শুয়ে আছেন। মহিলা তার দুঃখের কথা খুলে বললে, তিনি আদেশ দেন মহিলাকে যেন সরকারি খরচে একটি বাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
৭. স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দেশ-বিদেশ ভ্রমণ
মুরসি বিভিন্ন দান-অনুদান প্রকল্পে অংশগ্রহণ করতেন। দক্ষিণ এশিয়ার ভয়াবহ সুনামির পর তিনি সাহায্য মিশনে সেখানে আর্তদের সহায়তায় ছুটে গিয়েছিলেন।
মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তাকে অভিনন্দন জানালে তিনি তার জবাবেরে তিনি জানান, ‘আপনাকে আমি সিরিয়াবাসীর প্রকৃত প্রতিনিধি মনে করি না’। প্রোটোকল উপেক্ষা করেই তিনি একজন খুনির প্রতি ভদ্রতা প্রকাশ করা থেকে বিরত ছিলেন।
৮. সবচেয়ে কম বেতনপ্রাপ্ত নেতা
বর্তমান বিশ্বে খেলোয়াড় কিংবা নায়ক নায়িকাদের আয় শুনলেই আমাদের অবাক লাগে। আমরা ধরেই নেই রাজনৈতিক নেতাদের বেতন হবে আকাশচুম্বী। কিন্তু মুরসি ছিলেন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী। তিনি নির্ধারণ করেন তার বেতন সারা বছরে হবে ১০,০০০ ডলার বা প্রায় ৮ লাখ টাকার কম। তাকে অপহরণ করার সময় জানা যায়, তিনি আসলে কোনো বেতনই গ্রহণ করেননি। তিনি পুরো সময় বিনা বেতনে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।
৯. নামাজের ব্যাপারে সদাসতর্ক
তার বিরোধীরা প্রায়ই বলত, তার ধার্মিকতা একটি অভিনয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুরসি নামাজ নিয়মিত পড়ার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। জুমার খুতবায় তাকে কাঁদতেও দেখা গেছে।
১০. ছবিমুক্ত অফিস
সারাবিশ্বে আমরা দেখি নেতা নেত্রীদের ছবি দিয়ে সরকারি দেয়াল ভরা থাকে। মুরসি নির্বাচিত হওয়ার পর পর তিনি আদেশ জারি করেন তার কোন ছবি সরকারি ভবনে ঝোলানো যাবে না। বরং তিনি আল্লাহর নাম দিয়ে দেয়ালগুলো ভরার আদেশ দেন।
সত্য হলো যুদ্ধের প্রথম শিকার। এই দশটি পয়েন্টের চেয়ে সত্য আরো বেশি জটিল। মুরসিরও ভুল হয়েছে – তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাকে ভালোবাসুন আর ঘৃণা করুন এই বিষয়গুলো হয়তো সত্যিকারের মানুষটিকে চিনতে সাহায্য করবে।
সূত্র: মুসলিমম্যাটার্স ডট ওআরজি
বিষয়: বিবিধ
১৬২০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একজন ভাল মানুষই অত্যাচারিদের প্রধান শত্রু।
সারাদুনিয়াতে আজকাল চলছে এমন
মন্তব্য করতে লগইন করুন