বিতর্কে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা-মন্ত্রীরা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:৩৮:০৫ সকাল

চাকরির জন্য ঘুষের টাকার বস্তা, পিলার নাড়াচাড়া তত্ত্ব, মঞ্চে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান ও সাংবাদিকদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ‘ক্রেস্ট না, ক্যাশ চাই’, মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা বইয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, প্রকাশ্যে একে অপরকে সরাসরি আক্রমণ, ইসলাম ধর্ম অবমাননা করে মন্ত্রীর ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্যসহ একের পর এক বেফাঁস, লাগামহীন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও মন্ত্রীরা। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে বারবার চাপে পড়ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। জনগণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে দলের মাঠপর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মীদের। এসব অভিযোগে কারো মন্ত্রিত্ব চলে গেছে। বাতিল হয়েছে দলের প্রাথমিক সদস্যপদও। তবুও থামছেন না তারা। সর্বশেষ বিসিএস পরীক্ষা ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং ঘুষের বৈধতা দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বক্তব্য নিয়ে এখন দেশজুড়ে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, ‘বিসিএস পরীক্ষায় তোমরা শুধু কোনোরকম লিখিত পরীক্ষায় ভালো করো, বাকিটা আমরা দেখব।’ এ সময় গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে পুলিশে থাকা সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। আমি তো প্রত্যেকটি উপজেলায় কথা বলেছি, সব জায়গায় আমাদের যারা রিক্রুটেড, তাদের সাথে কথা বলে, তাদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট করিয়ে আমরা নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, বুক পেতে দিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। সমালোচনা করছেন খোদ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও। দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গতকাল এক অনুষ্ঠানে এইচ টি ইমামকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘আমাদের একজন উপদেষ্টা পাবলিক সার্ভিস কমিশন সম্পর্কে কথা বলেছেন। কিন্তু পাবলিক সার্ভিস কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এতে সবারই পরীা দেয়ার সমান সুযোগ আছে। এ নিয়ে একটু সতর্ক হয়ে কথা বলতে হবে।’ গত নির্বাচন নিয়ে এইচ টি ইমামের বক্তব্যের সূত্র ধরে সুরঞ্জিত বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিজয় কোনো বাহিনীর ক্রেডিট নয়, এটা মানুষের ক্রেডিট। জনসমর্থনের ওপর ভিত্তি করে সরকার মতায় আছে। আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি বলে আমাদের এ অবস্থা। পুলিশ বাহিনী দিয়ে একে বিভাজন করা যাবে না। পুলিশ রাষ্ট্রের, সবার।’ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে এইচ টি ইমাম খন্দকার মোশতাককে শপথ পড়িয়ে বিতর্ক ও বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বেঈমানি করেছেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ঘুষ অবৈধ নয় : গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ঘুষকে বৈধতা দিয়ে বলেন, ‘যেটা কাজের গতি আনে, আমি মনে করি সেটা অবৈধ নয়। উন্নত দেশগুলোতে এটাকে বৈধ করে দেয়া হয়েছে। তবে ভিন্ন নামে।’ ইসলামি দলগুলো অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে ‘ধর্ম অবমাননা’ বলে অভিযুক্ত করেছে। বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, সম্মিলিত ইসলামি দলগুলো, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন, আইম্মাহ পরিষদ, মুফতি পরিষদ ও হেফাজতে ইসলাম বিবৃতি দিয়েছে। এর আগে শেয়ারবাজার লুটপাট, ব্যাংক জালিয়াতি ও পদ্মা নেতু ইস্যুতে ‘রাবিশ’ ‘বোগাস’সহ নানা মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য। গত ৩১ মার্চ প্রকাশ্যে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের (লোটাস কামাল) সাথে। পরিকল্পনা কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তার কক্ষে সংশোধিত এডিপি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর দেয়া চিঠির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাংবাদিকদের লোটাস কামাল বলেন, ‘উনি (অর্থমন্ত্রী) আমাকে অনুধাবন করতে বলেছেন। আমিতো ওনার সহকর্মী, অধীন নই। উনি প্রতি বছর বিশাল বাজেট দেন। হাজার হাজার কথা বলেন। কিন্তু অনেক কিছুই বাস্তবায়ন করতে পারেন না। বাজেট বক্তব্য দিতে দিতে উনি শুয়ে পড়েন। আমি হলে ১৫ পাতায় বাজেট শেষ করে দিতাম। তবে এটা ঠিক যে ওনার বয়স হয়েছে। অনেক কিছু ভুলভাল বলেন। আমরা মাফ করে দেই।’ পরিকল্পনামন্ত্রীর এমন তীর্যক মন্তব্যের পরদিনই সচিবালয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ‘শিষ্টাচার’ মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রীদের শিষ্টাচারের একটা লেভেল মেনে চলা উচিত।’ আমি হজ, জামায়াত ও তাবলিগের বিরোধী : গত ২৮ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও তৎকালীন মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে যতটা জামায়াতের বিরোধী তার চেয়ে বেশি তাবলিগের বিরোধী।’ হজের বিরোধিতা করে সরকারের প্রভাবশালী এ মন্ত্রী আরো বলেন, এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। এই হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গেছেন। এদের কোনো কাজ নাই। কোনো প্রোডাকশন নাই, শুধু ডিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা বিদেশে দিয়ে আসছে। রাসূল সা: বর্বর আরবের লোকদের আয় ইনকামের ব্যবস্থা করার জন্যই হজের কৌশল দিয়ে গেছেন বলেও চরম ধৃষ্ঠতা দেখান তিনি। শুধু তা-ই নয়, অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন। ‘জয় ভাই’ কে? জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নন। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ারও কেউ নন। তার এই বক্তব্য তাৎণিকভাবে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে আলোচনার ঝড় তোলে। দেশ-বিদেশে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মুসলিমরা। বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামি ও রাজনৈতিক দলগুলো লতিফ সিদ্দিকীর বহিষ্কার ও গ্রেফতার দাবিতে সরব হয়ে ওঠে। সরকারের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও লতিফ সিদ্দিকীর গ্রেফতার দাবি করেন। এমন প্রেক্ষাপটে লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা ও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এর আগে প্রকৌশলীকে চড়-থাপ্পড় মারা, ময়লা পানিতে নামানোসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ান তিনি। বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা : গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত মহাজোট সরকারের সদ্য সাবেক মন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অবHappy এ কে খন্দকার বীরউত্তমের লেখা ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ বইটি নিয়ে বেশ বিপাকে পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠায় এ কে খন্দকার লিখেছেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শেষ শব্দ ছিল ‘জয় পাকিস্তান’। এ ছাড়া এ কে খন্দকার তার বন্ধু মঈদুল হাসানের বরাত দিয়ে বলেছেন, তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার একটি ঘোষণাপত্র লিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তা পাঠ করতে বললেও তিনি রাজি হননি। উল্টো তিনি বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে একটা দলিল হয়ে থাকবে। এর জন্য পাকিস্তানিরা আমাকে দেশদ্রোহের বিচার করতে পারবে।’ এ কথা শুনে তাজউদ্দীন আহমদ প্তি হয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এ ছাড়া ‘মুজিব বাহিনী ভারতীয়দের কাছ থেকে সম্মানী পেত’, ‘মুজিব বাহিনী অস্থায়ী সরকার ও মুক্তিবাহিনীকে অবজ্ঞা করত’ মুক্তিযুদ্ধকালীন এমন আরো কিছু তথ্য তিনি তার বইয়ে বর্ণনা করেন। তার এ বই প্রকাশের পর জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে রাজনীতির টেবিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ প্রায় সবখানেই আলোচনা-সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। ইতিহাস বিকৃতি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে খন্দকারকে গ্রেফতারেরও দাবি জানান আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতাকে বয়স প্রতিবন্ধী আখ্যা দিয়ে সামাল দেয়ার চেষ্টা করে সরকার। হাছান মাহমুদ বেয়াদব : আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জš§দিনে পাশাপাশি আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখায় দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে স্মরণকালের সেরা বেয়াদব বলে আখ্যা দিয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, ‘উনি কে? কী ছিলেন? মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন? উনি কিভাবে নেতা হয়েছেন, তাও আমি জানি। এ ধরনের আস্ফালন, আমি আমার রাজনৈতিক জীবনে দেখিনি। এটা স্মরণকালের বৃহত্তম বেয়াদবি।’ তবে এর একদিন পরই অবশ্য ড. হাছানের প্রশংসা করেন সাজেদা চৌধুরী। সাংবাদিকেরা খবিশ : গত ৯ আগস্ট সাংবাদিকদের ‘খবিশ’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বলেন, ‘তোমাদের কোমর কিভাবে ভাঙতে হয় আমি তা জানি। তোমরা চরিত্রহীন, লম্পট, বদমাইশ। তোমরা টাকা খাও অন্যের, আর মহসিন আলীর বিরুদ্ধে লিখো। এটা আর হবে না, খুব সতর্ক থাকবে। ধরলে কিন্তু ছাড়া হবে না।’ এর আগে সিলেটে বিজিবি স্কুলে শিার্থীদের এক অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন। বিভিন্ন মিডিয়ায় তার সেই ছবি প্রকাশ করা হলে বিপাকে পড়ে সরকার। একপর্যায়ে সেই আচরণের জন্য মা প্রার্থনা করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী। কিছুদিন পরই পাসপোর্ট বিহীন সফরসঙ্গীদের নিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। মন্ত্রিত্বের জোরে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন তাদের ছেড়ে দিলেও ভারতীয় ইমিগ্রেশন তাদের আটকে দেয়। মন্ত্রীকে ছাড়া মন্ত্রীর তিন সঙ্গীকে ফেরত পাঠায় আসাম। এ নিয়ে আসামের একটি দৈনিক পত্রিকা ফলাও করে রিপোর্ট প্রকাশ করলে আবারো আলোচনায় আসেন তিনি। ক্যাশ চাই, ক্যাশ : এবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই গত ৯ ফেব্র“য়ারি জাতীয় সংসদের হুইপ প্রকাশ্যে ক্রেস্ট না ক্যাশ চাইÑ এমন বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার ঝড় তোলেন। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদরের সরকারি পাবলিক মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দেয়া গণসংবর্ধনায় ক্রেস্ট প্রদানের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (১০ ফেব্র“য়ারি) দলীয় কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বসব। যদি কারও উপঢৌকন দেয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে আর এই ক্রেস্ট না, ক্যাশ (নগদ টাকা) চাই, ক্যাশ।’ ‘বোঝেন নাই? নির্বাচন করতে গেলে অনেক টাকা লাগে। কাজেই ক্যাশ দিয়েন, খুব ভালো হইবে। কাল (শনিবার) দেখা হবে সবার সাথে। আজ আর কোনো ক্রেস্ট নেব না।’ আওয়ামী লীগের সিনিয়র এ নেতা ও পাঁচ বারের এমপির মুখের এমন কথায় ব্যাপক হোঁচট খেতে হয় সরকারকে। পরে অবশ্য চিফ হুইপ তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। পিলার নাড়াচাড়া তত্ত্ব: ২০১২ সালে সাভারে বহুল আলোচিত রানা প্লাজা ধসের পেছনে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের হাত ছিল দাবি করে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মহিউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, আমার কাছে খবর এসেছে যে, ‘হরতাল আহ্বানকারী বিএনপি-জামায়াত-শিবির কর্মীরা পিলার ধরে নাড়াচাড়া দিয়ে, ধাক্কা দিয়ে ভবনটিকে ফেলে দিয়েছে।’ তার এ মন্তব্যে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। এবার অবশ্য তাকে আর মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হয়নি। বস্তাভর্তি ঘুষের টাকা : আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য ও তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের ঘুষ কেলেঙ্কারি নিয়ে বিপাকে পড়ে তৎকালীন মহাজোট সরকার। বস্তাভর্তি ঘুষের টাকা নিয়ে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাসায় যাওয়ার সময় তার এপিএস ওমর ফারুককে আটক করে আইনশৃঙ্খরা বাহিনী। এ অভিযোগে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি নেন দলের সিনিয়র নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এবার সরকার গঠনের পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই কোনো ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে না জড়াতে মন্ত্রী-এমপিদের সতর্ক করে দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা উপো করে সরকারের মন্ত্রী, সংসদের হুইপ ও দলীয় এমপিরা একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে চলেছেন। এতে সিনিয়রেরাও কম যাচ্ছেন না। তাদের সেসব অপকর্মে ইতোমধ্যেই দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকার সম্পর্কে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে।

বিষয়: রাজনীতি

১১১২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

284449
১৫ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৪২
ফেরারী মন লিখেছেন : আ'লীগ নিজেদের দোষেই নিজেরা মরবে। সেই সময় হয়তো আসছে।
১৫ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৭
227667
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ইনশাআল্লাহ আমরা সেই সময়ের অপেক্ষায় থাকলাম

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File