জেনে নিন রহস্যে ঘেরা আদম পাহাড়ের কথা।
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০২ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:৩৭:৪৯ রাত
শ্রীলংকার রহস্যময় এক পাহাড় । নাম তার আদম পাহাড় । নানা কারনে এ পাহাড়টি রহস্যে ঘেরা। এর শীর্ষে রয়েছে বিরাট আকারের এক পায়ের ছাড়। রহস্য তা নিয়েই।
এপায়ের ছাপকে সব ধর্মের মানুষই পবিত্র হিসেবে মনে করে। শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে বিশ্বের নানা রকম পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তা নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। এসব পায়ের ছাপ একের রকম। আকৃতি নানা রকম কিন্তু এসব পায়ের ছাপ সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ দীর্ঘদিন ধরে। এমনই এক পায়ের ছাপ আদম পাহাড়ে। শ্রীলংকার মুসলমানরা বিশ্বাস করেন পৃথিবীর আদি মানব হযরত আদম আঃ প্রথম এই শ্রীলংকায় পদার্পন করেছিলেন।
ওই পাহাড়ে রয়েছে তারই পায়ের ছাড়। তার জর্্য এ পাহাড় ও পাহাড়ের ওই পায়ের ছাপ মুসলমানদের কাছে পবিত্র হিসেবে পরিনতি হয়ে আসছে। শুধু শ্রীলংকার মুসলমানরাই নয় এর বাইরের অনেক দেশের মুসলমান বিশ্বাস করেন হযরত আদম আঃ কে যখন পৃথিবীতে পাঠানো হয় তখন তিনি প্রথম পা রাখেন শীলংকায় ।
আর আদম পাহাড়ের ওপর ওই পায়ের ছাপ দেখে তারা মনে করেন তা হযরত আদম আঃ এর। এজন্য মুসলমানরা এ পাহাড়কে অসীম শ্রদ্ধার চোখে দেখেন আর এজন্য এর নাম দেয়া হয়েছে আদমস পিক বা আদমের পাহাড়। এ পাহাড়ের প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে রহস্য। এ পাহাড়ের চুড়ায় যে পদচিন্হ রয়েছে সেকানে পৌছা খুই ঝুকিপুর্ন এডভেন্ঝার। তবে অনেকে ঝুকি নিয়ে সেখানে গিয়েছেন তারা নিজের চোখে ওই পায়ের ছাপ দেখে বিষ্মত হয়েছেন। এ পায়ের ছাপ শুধু মুসলমানদের কাচেই নয় একই সঙ্গে বৌদ্ধ, খৃষ্টান ও হিন্দুদের কাছেও পবিত্র। তারা ও মনে করেন তাদের ধর্মের সঙ্গে এর রয়েছে ওতপ্রোত সম্পর্ক। এতে পরিস্কার হয়ে যায় যে আদমের পাহাড় সব শ্রেনীর মানুষের কাছেই পবিত্র। তারা শ্রদ্ধার চোখে দেখেন এ পাহাড়কে। তারা সবাই স্বীকার করেন এ পাহাড়ের চুড়ায় আছে ওই পত্রি পদচিন্হ। তার আকৃতি বিশাল শুধু এজন্যই নয় এ পাহাড় নিজেই একটি রহস্য।
এ্যাডামস পিক পাহাড় আরোহন করা খুবই ঝুকিপুর্ন। চুড়ান্ত পৌছতে হলে যে পথ তা চলে গেছে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে সেখানে জঙ্গল নানারকম ঝুকিপুর্ন। সেখানে আছে বিষধর কীটপতঙ্গ। তবে চুড়ার কাছাকছি একটি ধাতব সিড়ি আছে তাতে রয়েছে ৪০০ ধাপ। এর প্রতিটি ধাপ নিরাপদ নয়।তার ওপর দিকে ঝুকি নিয়ে শীর্ষে যেতে হলে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৬ ঘন্টা সময় লাগে ।
জটিল এক আবহাওয়ার এক অন্চলের মধ্যে এর অবস্থান। বছরে মাত্র তিন থেকে চার মাস এ পাহাড়ে আরোহন করা যায়। বছরের অন্য সময়টাতে এতে আরোহন অসম্ভব হয়ে উঠে। কারন ক্যাব্যিক অর্থে বলা যায় এ পাহাড় তখন মেঘের ভিতর লুকিয়ে যায়। চারদিক থেকে মেঘে জেকে ধরে এ পাহাড় ও পাহাড়ের পদচিহ্ন নিয়ে একটি বই লিখেছেন মারকুস অকসল্যান্ড । বইটির নাম দ্য স্যাক্রেট ফ্রুটপ্রিন্ট এ কালচারাল হিস্ট্রি অব আদমস পিক। এতে বলা হয়েছে এপাহাড়টি ২২৪০ মিটার উচু।
আকৃতি কোনের মতো । ভারত মহাসাগর থেকে এ পাহাড় পরিস্কারভাবে দেখা যায় ।
আগের দিকে আরবের সৌখিন ব্যাক্তিরা সমুদ্র যাত্রায় এসে পিরামিডের আকৃতির এ পাহাড় দেখে পুলকিত হতেন। তাদের কেউ কেউ এটাকে বিশ্বের সর্বোচ্চ পাহাড় বলেও অভিহিত করেছেন।
প্রাচনিকালে সিংহলিরাও এ পাহাড়কে বিশাল উচ্চতার বলে মনে করতেন। কেউ কেউ মনে করতেন এটিই বিশ্বের সর্বোচ্চ পাহাড়।
৮৫১ সালে এ পাহাড়ে পদচিহ্ন প্রথম দেখতে পান আরবের সোলাইমান। রত্মপুরা হয়ে পবিত্র এ পাহাড়ে আরোহন করেছিলেন বিখ্যাত আরব দার্শনিক ইবনে বতুতা। তিনি এখানে উঠার জন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন রারবেরিন থেকে । তার আগে ব্যাপক পরিচিত বনিক ও ভ্রমন পিপাসু মার্কো পোলো আদমের পদচিহ্ন তার সম্মান জানানোর জন্য আরহন করেন এ পাহাড়ে।
তিনি ১২৯২ সালে চীন থেকে ভেনিস যাওয়ার পথে এ সফর করেন।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন