জীবনের গল্প বাকী আছে অল্প
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:১৯:৪৩ দুপুর
অভাব অনটনের সংসার নুন আনতে পান্তা ফুরায় সবসময় । তারউপর গতকয়েক মাস যাবত আব্দুল রহিমের বাবার শরিরটা খারাপ যাচ্ছে। এমন জ্বর হয়েছে যে বেচারা বিছানা থেকে উঠতে পারছে না ডাক্তারের কাছে যাওয়াতো অনেক দুরের ব্যাপার।
একমাত্র ছেলে আব্দুল রহিমকে ফোন করে মা বলল বাবা তোর আব্বার শরিরটা গত কয়েকদিন খুব খারাপ যাচ্ছে তুই চিন্তা করবি বলে তোকে একই খবরটা দেই নাই । যদি একটু সময় করে বাড়ি আসতিস তবে তোর আব্বার জন্য কিছু ঊষধ আনতে পারতিস।
আব্দুল রহিম ওর মাবাবার একমাত্র সন্তান । আগে সংসার থেকে সামান্য টাকা নিলেও গত একবছর আর কোন টাকা নেয় না বরং টিউশনি করে নিজের খরচের টাকা থেকে কিছু কিছু মাবাবাকে দেয় । মা বাবা কখনো আব্দুল রহিমকে বলেনি তুই আমাদের অভাবি সংসারে টাকা দে বরং মা মানা করে বাবা তোকে আমরা খরচের টাকা দেওয়ার দরকার কারন তুই এখন ছাত্র কিন্তু আমাদের নসীব খারাপ আল্লাহ আমাদেরকে সেই তওফিক দেয়নি ।
আব্দুল রহিম মা বাবাকে প্রায় বললেন আপনারা দোয়া করেন একদিন আমি অনেক বড় হব সেই দিন আমাদের সংসারে টাকা পয়সার আর কোন অভাব থাকবে না ।
মা বাবা দু হাত তুলে আল্লার কাছে দোয়া করতেন আর সন্তানের মংগলের জন্য কথা বলতেন।
সমস্যা হলো একটা ! আব্দুল রহিম ইসলামী ছাত্র শিবির এর সদস্য । শহরের থাকা অবস্থায় কয়েকবার সরকারের পেটুয়াবাহিনী এবং সরকারের পোষা হায়েনারা আব্দুল রহিমের বাসায় গিয়ে খুজেছে । বর্তমানে আব্দুল রহিম নিজ বাবায় থাকে না একএক দিন একএক জায়গায় থকতে হয় তারপর নিজের খরচ খরচার টাকার জন্য টিউশনি করতে হয় । আব্দুল রহিম অনেক সমস্যায় থাকা সত্বেও মা বাবাকে কখনো এইসকল কথা বলেনি , মা বাবা কাদবে সবসময় চিন্তা করবে। আব্দুল রহিম মা বাবাকে অনেক ভালবাসেন সেই জন্য ওনাদের মনে কষ্ট আসে এমন কোন কিছু করতে চায় না , তারপর দ্বিনের কাজ সেই ব্যাপারে আব্দুল রহিম কাউকে ছাড় দিতে রাজি না।
আজকে মায়ের ফোন পাওয়ার সাথে সাথে মাকে বললেন ইনশাআল্লাহ আমি বিকাল নাগাত বাড়ি এসে তারপর আব্বার জন্য ঊষধ আনবো।
আব্দুল রহিম মনে মনে ভাবছে সরকাছের পেটুয়াবাহীনি যেই ভাবে গাড়ি ঘোড়াতে চেক করে বিরোধীদলের নেতাকর্মিদেরকে গ্রেফতার করতেছে তাতে নিরাপদে বাড়ি যাওয়াও অনেক কঠিন হয়ে পড়বে তাই নদী পথকে বেচে নিলেন একটু নিরাপত মনে করে।
একটা ছৈআলা নৌকা ভাড়া করলেন ৪ কিলোমিটার পথ যেতে । আব্দুল রমিহের উদ্দেশ্য সামনের চার কিলোমিটার পর আর তেমন সম্যা হওয়ার কথা না তাই এমন সিদ্ধান্ত নিলেন ।
কিন্তু হায়েনারা যে ওনার জীবনের কোন গল্পই শেষ করতে দিবে না তাই ওনার ব্যার্থ চেষ্টায় কোন লাভ হলো না। যেই মাত্র নৌকা থেকে নেমেছে ওমনি হায়েনাদের নিশানা ওনার বুকে তাক হয়ে গেছে।
আব্দুল রহিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লো ।
মা বাবা আব্দুল রহিমের অপেক্ষায় বিকাল শেষ করেছে সন্ধা শেষ করেছে কিন্তু আব্দুল রহিমের বাড়ি আসার কোন নাম নাই।
এই ভাবে হাজার হাজার আব্দুল রহিমরে মা বাবারা অপেক্ষা করতে থাকবে কবে তাদের সন্তানরা ফিরে আসবে ।
হ্যা যারা চলে গেছে ওপারে হয়তো তারা ফিরে আসবে না কিন্তু তাদের রেখে যাওয়া জীবনের গল্পর বাকী অংশ তার সাথী ভাইরা পুরন করতে চেষ্টা করবে হয়তো এ্ই জালিম সরকারের পতনের পরেই সেটার ধারাবাহিকতা শুরু হবে।
আমরা এই জুলুমশাহীর পতনের অপেক্ষায় থাকলাম ইনশাআল্লাহ কাল সকালে ঘুম থেকে জেগে যেন শুনতে পাই এই জুলুমবাজদের ১৫ই আগস্ট পুনরাবৃতি হয়েছে।
আমিন
আব্দুল মতিন মুন্সি
সৌদিআরব রিয়াদ থেকে
বিষয়: রাজনীতি
১২৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন