স্পপ্নের মধ্যে!!!!

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৫:৫৯:২৩ বিকাল

আজ থেকে অনেকদিন আগের ঘটনা।

আমাদের গ্রামান্ছলের লোকেরা খুব বিশ্বাস করতো। তাদের সেই কালের বিশ্বাসকে এই সময়ের একটা বাচ্ছা ছেলেমেয়েও বিশ্বাস করতে চাইবে না।

আমাদের গ্রামে একটা পুরাতন বটগাছ আছে সেই গাছতলাকে কালিতলা বলে লোকজনের কাছে পরিচিত। সেই কালিতলায় বছরের নিদৃষ্ট দিনে হিন্দু সমাজের লোকজন পুজা পার্বনের জন্য মুতর্ি বানাইতো ।

কয়েকদিন ধরে সেখানে হাজার হাজার লোকের সমাগম হতো।ঢাকলোকের আওয়াে পুরা এলাকাটা একেবারে সরগরম থাকতো।

সেখানে মেলা বসত ।

দোকানিরা দোকানের পসরা সাজিয়ে কয়েকদিন পর্যন্ত বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করতো আবার অনেকে সেখান থেকে জিনিস পত্র কিনবে বলে বছর জুড়ে অপেক্ষায় থাকতো।

অনেকে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সময় মান্নত করতো আর সেই মান্নতি জিনিসপত্র নিয়ে লোকজন সেখানে হাজির হতো।

আমাদের গ্রামে একটা গল্পর মতো প্রচলন আছে।

এক মহিলা নাকি সার স্বামীর সাথে অনেক ঝগড়ার পরে অতিষ্ট হয়ে নিয়ত করেছিল যদি তার স্বামী মারা যায় তবে সে জোড়া কালির মুর্তি কালিতলায় স্থাপন করবে।

সেই মহিলার স্বামী নাকি কয়েকদিন পর সত্যি সত্যি মারা গেছে ।

মহিলাটি পুরোহিতের কাছে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে পুরোহিত নাকি তাকে বলেছিল তোমার মান্নত পুরা না করলে তোমার ছেলেমেয়ে সহ তোমার ও ক্ষতি হতে পারে।

তাই মহিলাটি নাকি সেই কালি তলায় জোড়া কালির মুর্তি বানাইয়াছিল।

সেই থেকে মুসলিম হিন্দু সকলে এই কালিগাছ তলাকে পবিত্র স্থান বলে মনে করতো।

কালিতলার পাশ দিয়ে গ্রামের একটি রাস্থা ছিল যাহা ততকালিন সময়ে মাঠের থেকে কৃষকরা গরুর গাড়িতে করে তাদের ফসলাদি আনানেওয়া করতো। যদিও আজ সেই রাস্তাটি গ্রামের লোকজনের চলাচলের সাধারন রাস্তা হিসেবে ব্যাবহার হয়ে আসছে।

কালিতলার পাশ দিয়ে সেই শুধু দিনের বেলাতে কাজের সিমাবদ্ধতা ছিল। সন্ধার পরে কেউ ভুলেও কালিতলার সেই পথ দিয়ে একাএকা যেত না।

কালিতলার যেই বটগাছ আছে তাহার বয়স কত বছর হবে তাহার কোন সঠিক হিসেব নাই অনেক পুরাতন গাছ সেইটি ।বর্তমান সময়েও সেটি আছে তবে তার সেই জৌলুস আর কৃশাংসকৃতির লেশও সেখানে নাই।

সেই বটগাছে দুর দুরান্ত থেকে পাকপাখালিরা তাদের নিরাপদ স্থান ভেবে এখানে রাত্রের বেলায় আশ্রয় নিত।

বটগাছের ডালে বড় বড় মেীমাছির চাক ঝুলে থাকতো মাসের পর মাস কোন লোকের সাহসে কুলাইতো না সেই মৗমাছির চাক থেকে মধু আহরন করতে । হয়তো বা যদি কোন লোক সহস করতো তাহা পারতো না অন্যলোক তাকে ভয় দেখাতো তুমি যদি এটা করো তবে তোমার পরিবারের ক্ষতি হবে তোমার ক্ষতি হবে ইত্যাদি ।

সন্ধার পরে কালিঘরে ধুপমোমবাতি আগর বাতি জালিয়ে রাখতো তবে মজার ব্যাপার ছিল সেই কালিতলায় নাকি রাত্রে বেলায় কোন পুরোহিত থাকতো না । তবে পুরোহিতরা কি ভয়ের কারনে থাকতো না বা কি কারনে তাহা লোকজন জানতো না বা জানার চেষ্টা করতো না।

কালিতলার পাশের বাড়িটির নাম মালিতা বাড়ি।

সেই বাড়ির এক লোক যার নাম ছিল মতিয়ার রহমান সেই লোকটি রাত্রে বেলায় পেশাব করার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে একটু দুরে যেই মাত্র বসেছে এমন সময় হটাত দেখতে পেল হাজার হাজার হাতি আকাশ দিয়ে উড়তেছে।

এই তাজ্জব কান্ড দেখে মতিয়ার রহমান পেশাব বন্ধ করে ভাবেলো ব্যাপর কি হাতি ! তাও আবার আকাশ দিয়ে উড়তেছে !! বড় ইন্টারেস্টিং ব্যাপার যে ,পুরা দেখার দরকারতো । এখন আর ঘুমাবো না বলে মতিয়ার রহমান দেখতেছে ।

মতিয়ার রহমান ভাবছে হাতি কি কখনো উড়া সম্ভব ? শরিরে চিমটি কাটলো আমি কি সত্যি সত্যি দেখছি হাতি আকাশে উড়ছে? কাল যদি কাউকে বলি আমি রাত্রে কালিতলায় এমন কিছু দেখেছি তখন লোকজনে আমাকে পাগল বলবে না? মতিয়ার নিজেকে নিজের প্রশ্ন!

আচ্ছা যাহাই দেখছি ধরে নিলাম হাতি আকাশে উড়ছে দেখি হাতিগুলি উড়ে কোথায় যাচ্ছে ।

এবার মতিয়ার রহমান দেখছে হাতিগুলি উড়ছে তো সেটা এক আশ্চার্য ঘটনা তার থেকে আশ্চার্য হলো এই কালিতলার পুরোহিত একটা হাতির পিঠে সওয়ার হয়ে আছে।

এবার হাতিগুলি পুরোহিতকে নিয়ে সিধা বটগাছের মগডালের উপর স্থির হয়ে দাড়িয়ে পড়লেন।

কিছুক্ষনের মধ্যে কালিতলায় হাজার হাজার লোক এসে হাজির । হাতিগুলি পুজারিকে কি যেন দেখাইলেন পর পুজারি সেটা উঠাইয়া যেই মাটিতে নিক্ষেপ করেছে ওমনি পুরা এলাকা আলোকিত হয়ে গেছে।

এবার মতিয়ার রহমান দেখলো একদল মহিশ দৌড়াতে দৌড়াতে এদিকে আসেতেছে মনে হচ্ছে যে মহিশগুলির পা মাটিতে পড়তেচছ না । একসময় মহিশগুলিও কালিকলায় এসে হাজির হলো।

সামান্য কিছুক্ষনের মধ্যে সেখানে হাজার হাজার প্রজাতির প্রানী এসে জড়ো হতে থাকলো । এই সব দেখে মতিয়ার রহমানের আরো বেশি আগ্রহ বেড়ে গেছে । মতিয়ার রহমান ভাবছে সন্ধার পর যেই রাস্থা দিয়ে কোন লোকজনের চলাচল হয় না সেইখানে এতরাত্রে এত লোক ! নিশ্চয় এই জায়গার কোন কেরামতি আছে আমাকে দেখতে হবে মুল ঘটনা কি ?

মতিয়ার রহমান সেখানে যাওয়ার মনোস্থির করে ভাবছে যদি আমার সাথে কোন লোক থাকতো তবে ভাল হতো সাহস পেতাম।

আবার ভাবছে লোক নাই তো কি হয়েছে ওখানে গেলে ওরাকি আমাকে মেরে ফেলবে !!

আবার ভাবছে এত হাজার হাজার লোকের মাঝে আমি একজন লোক গেলে কি ওরা আমাকে চিনতে পারবে ?

অবশেষে সিদ্ধান্ত নিল আমি সেখানে যাবই আজকে ওদের কেরামতি না দেখে কোন মতেই আসা যাবে না।

এরই মধ্যে সেখানে পুজা শুরু হয়ে গেছে মেয়েরা উলুধ্বনি দিচ্ছে পুরুষরা ঢোলের তালে তালে নাচানাচি করতেছে বিশাল এক আয়োজন শুরু হয়েছে।

মতিয়ার রহমান ওদের দলে ভিড়ার সাথে সাথে সমস্থ প্রানীগুলি হিন্দু লোকগুলি পুজা আয়োজন কমিটিকে বলছে আমাদেরকে এখানে কেন এনেছেন ? আমরা আর এখানে থাকতে পারছিনা চারদিকে শুধু গো মাংশের গন্ধ ।

পুজারির অনুমতিএক্রমে বিশাল বড় তলোয়ার নিয়ে এক ব্যাক্তি উপস্থিত লোকজনের চারদিকে ঘুরতেছে আর দেখতেছে কোন মুসলমান আছে কিনা ? তাদের ধারনা গো মাংশ তো থাকার কথা না তবে মুসলমান আছে তাই শরির থেকে গো মাংশের গন্ধ বের হচ্ছে।

লোকটা তলোয়ার নিয়ে খুজতে খুজতে একসময় মতিয়ার রহমানকে পেয়ে ঘপাট করে মতিয়ার রহমানের হাত ধরে পুজারির সামনে হাজির করে বলছে গো মাংশের আমদানিকারককে পাইছি মহাশয় । আপনি বলুন আমি এক্ষুনি এই নরাধমকে বলি দিয়ে ফেলব । দিনের বেলায় ওদের অত্যাচারে কোন কিছু করতে পারিনা তাই রাত্রকে নিরাপদ মনে করেলেন সেই রাত্রেও ওরা আমাদের পিছু ছাড়ছে না । এই কথা বলেই মতিয়ার রহমানের ঘাড়ে জড়োরে তলোয়ারের আঘাত করলো । তলোয়ারের আঘাতের চোটে মতিয়ার রহমান এতজোরে চিতকার করেছে এবং ভয়ের চোটে পায়খানা পেশাব করে বিছানা একাকার করে দিয়েছে।

মতিয়ারের চিতকার শুনে ওর স্ত্রী বলছে এটা তুমি কি করলা ?

মতিয়ার একেবারে চুপ হয়ে গেছে ভাবছে সত্যিতো আমি এতজোরে চিতকার দিলাম কেন ?

এবার স্ত্রী বলছে উহহ" তুমি কি চিতকারের সাথে সাথে হেগে দিলে নাকি গো ? গুর গন্ধ কোথা থেকে আসতেছে ?

স্ত্রীর কথাতে মতিয়ার রহমান লজ্ঝা পেয়ে বলছে আমাকে মাফ করো জীবনে আর কখনো এমন কাম হবে না সকালে যদি ভাবিদেরকে বলো তবে সবসময় ওরা আমাকে খেপিয়ে বেড়াবে।

বর্তমানের আওয়ামিলীগ সরকার যতই ধর্মনিরপেক্ষতার সাক্ষর দিতে চেষ্টা করে বাতিল মতবাদকে জড়ো করতে চেষ্টা করুক না ওরা ভুলে গেছে যে ওদের শরিরে গো মাংশের গন্ধ আছে একসময় এই গো মাংশের গন্ধের কারনে বর্তমানের বিজেপি সরকার তাদেরকে প্রত্যাক্ষান করবে আর আমরাতো মজলুম বসেই আছি সেই সময়ের অপেক্ষায়। পুজারির লোকের তলোয়ারের আঘাতে ঘরে হাগা-মুতা করেছে মতিয়ার রহমান। কিন্তু সেটা ছিল স্বপ্ন , স্বপ্নেই হেগে দিয়েছিল ।

সামনে তাদের দাদাবাবুরা গোমাংশের গন্ধে যথন তাড়া করবে আমরা সেই দিন বদলা নিব ইনশাআল্লাহ । তবে সেই সময়টা মনে হচ্ছে বেশ দুরে।

অনেক বড় লিখার থেকে সমান্য কিছু পংতি মাত্র লিখতে পারলাম সময়ের অভাবে -কপি পেষ্ট না থাক থাকাতে পুর্বের কোন লেখাতে হুবহু দিতে পারছিনা।

রিয়াদ সৌদিআরব থেকে

বিষয়: রাজনীতি

১২৩০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

263383
০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : Love Struck Tongue Tongue Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File