ইসলামের বিরোধীতার অন্তরালে...,,,
লিখেছেন লিখেছেন নেনাভাই ০৮ আগস্ট, ২০১৪, ১০:৩২:৫৩ সকাল
যুগে যুগে যারাই সমসাময়ীক কালের ইসলামী আন্দোলনের বিরোধীতা করেছে তা পূর্ব কালের ফেরাউন, নমরুদ, সাদ্দাদ, কারুন, হামানেরা হোক বা রাসুল স. এর যুগের আবু জেহেল, আবুলাহাব, ওতবা, সাইবা, মুগীরারা হোক অথবা বর্তমান কালের ফেরাউন, নমরুদ, সাদ্দাদ, কারুন, হামান, আবু জেহেল, আবুলাহাব, ওতবা, সাইবা, মুগীরাদের উত্তরসূরীরাই হোক কেউই না বুঝে ইসলামের বিরোধীতা করেনি । ফেরাউন, নমরুদ, সাদ্দাদ, কারুন, হামানেরা জানত যে, ইবরাহীম, মুসা (আঃ) আল্লাহর প্রেরিত নবী, আবু জেহেল, আবুলাহাব, ওতবা, সাইবা, মুগীরা জানত মুহাম্মদ স. আল্লাহর প্রেরিত নবী, তেমনি বর্তমান কালের উত্তরসূরীরাও জানে যে, শহীদ কুতুব থেকে শুরু করে শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা পর্যন্ত সকলেই প্রকৃত ইসলামের অনুসারী । প্রত্যেক যুগেই কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী তাদের নিছক দুনিয়াবী স্বার্থের জন্য ইসলামের প্রকৃত অনুসারীদের বিরোধীতা করেছে । তাদের হত্যা পর্যন্ত করেছে ।
এ কথাই বিধৃত হয়েছে সুরা বাকারায় ৮৮নং আয়াতে فَلَمَّا جَآءَهُمۡ مَّا عَرَفُوۡا ' অর্থ-‘এবং তারা তাকে চিনতেও পেরেছে’ এবং এর ব্যাখা প্রসংগে ইবনে হিসাম লিখেন-
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পূর্বে ইহুদিরা তাদের পূর্ববর্তী নবীগণ যে নবীর আগমন বার্তা শুনিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর জন্য প্রতীক্ষারত ছিল ৷ তারা দোয়া করতো, তিনি যেন অবিলম্বে এসে কাফেরদের প্রাধান্য খতম করে ইহুদি জাতির উন্নতি ও পুনরুত্থানের সূচনা করেন৷ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত লাভের পূর্বে মদীনাবাসীদের প্রতিবেশী ইহুদি সম্প্রদায় নবীর আগমনের আশায় জীবন ধারণ করতো, মদীনাবাসীরা নিজেরাই একথার সাক্ষ্য দেবে ৷ যত্রতত্র যখন তখন তারা বলে বেড়াতোঃ"ঠিক আছে, এখন প্রাণ ভরে আমাদের ওপর যুলুম করে নাও ৷ কিন্তু যখন সেই নবী আসবেন, আমরা তখন এই যালেমদের সবাইকে দেখে নেবো ৷ " মদীনাবাসীরা এসব কথা আগে থেকেই শুনে আসছিল ৷ তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা এবং তাঁর অবস্থা শুনে তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগলোঃ দেখো , ইহুদিরা যেন তোমাদের পিছিয়ে দিয়ে এই নবীর ধর্ম গ্রহণ করে বাজী জিতে না নেয় ৷ চলো, তাদের আগে আমরাই এ নবীর ওপর ঈমান আনবো ৷ কিন্তু তারা অবাক হয়ে দেখলো,যে ইহুদিরা নবীর আগমন প্রতীক্ষায় দিন গুণছিল , নবীর আগমনের পর তারাই তাঁর সবচেয়ে বড় বিরোধী পক্ষে পরিণত হলো৷
'এবং তারা তাকে চিনতেও পেরেছে 'বলে যে কথা মূল আয়াতে বলা হয়েছে , তার স্বপক্ষে তথ্য- প্রমাণ সেই যুগেই পাওয়া গিয়েছিল ৷ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিশালী সাক্ষ্য পেশ করেছেন উম্মুল মু'মিনীন হযরত সাফিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা ৷ তিনি নিজে ছিলেন একজন বড় ইহুদি আলেমের মেয়ে এবং আর একজন বড় আলেমের ভাইঝি ৷ তিনি বলেন , নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদীনায় আগমনের পর আমার বাপ ও চাচা দু'জনই তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে গিয়েছিলেন ৷ দীর্ঘক্ষন তাঁর সাথে কথাবার্তা বলার তারা ঘরে ফিরে আসেন ৷ এ সময় নিজের কানে তাদেরকে এভাবে আলাপ করতে শুনিঃ
চাচাঃ আমাদের কিতাবে যে নবীর খবর দেয়া হয়েছে ইনি কি সত্যিই সেই নবী ?
পিতাঃ আল্লাহর কসম , ইনিই সেই নবী ৷
চাচাঃ এ ব্যাপারে তুমি কি একেবারে নিশ্চিত?
পিতাঃ হাঁ
চাচাঃ তাহলে এখন কি করতে চাও ?
পিতাঃ যতক্ষন দেহে প্রাণ আছে এর বিরোধিতা করে যাবো ৷ একে সফলকাম হতে দেবো না ৷”
(ইবনে হিশাম , ২য় খন্ড, ১৬৫ পৃঃ আধুনিক সংস্করণ )
বিষয়: বিবিধ
২০৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন