রহস্য উপন্যাস " ফাইল নম্বর টু" পর্ব- নয়।
লিখেছেন লিখেছেন কালো পাগড়ী ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৪০:৫১ সন্ধ্যা
নয়।
চালনা বাজার থানা। ওসি শাহজাহান সাহেব তার অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে পর্যালোচনা সভায় বসেছেন। প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলো, এর ভিতর তারা কোন সূত্রই খুজে পায় নি। ঢাকা থেকে প্রায় ডজন খানেক সাংবাদিক এসে সরেজমিনে রিপোর্ট করেছে। অভিযোগ উঠেছে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে না । না হয় এখনো কোন অপরাধীদের ধরতে পারছে না কেন? দেশের প্রধান প্রধান দৈনিক গুলো এ ব্যাপারে ডিল নিউজ করছে। যার কারনে পুলিশ প্রশাসনের মাথা গরম। তারাও কোন কুল কিনারা পাচ্ছেনা এ ব্যাপারে। তাই সার্বিক অবস্থা নিয়ে আজকের বৈঠক।
হঠাৎ দরোজায় করা নাড়ার শব্দ।
ভেতরে আসতে পারি? বলল আগুন্তক।
আসুন আসুন, রাজ্জাক সাহেব যে। কেমন আছেন। শরীরটা ভালতো ।
ভাল আর থাকবে কি করে বলুন। যা আরম্ভ হয়েছে। এরকম কাজ মানুষে করে। আ-হা বেচারারে একে বারে পঙ্গু করে ফেলেছে। জানেন এ চিংড়ি ঘেরের জন্যে আমাদের সংস্থা গফুর সাহেব কে পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছে। সময় মতো টাকা না দিতে পারলে চুক্তি অনুসারে দশ বিঘা জমি সংস্থার নামে লিখে দিতে হবে।
আপনি তো ভাবছেন আপনার সংস্থার কথা। আমি ভাবছি আমার চাকুরি নিয়ে। আর মাত্র দু’দিন। এর ভিতর কোন সমাধান না করতে পারলে আমার অবস্থা কি হবে বলতে পারছিনা। বললেন ওসি সাহেব।
আরে এযে আবার আরেক অবিচার। বলি দুনিয়াটা এখনো টিকে আছে কি করে। আপনি চেস্টাতো কম করছেন না।
যাকগে, আমি এসেছি অন্য একটা ব্যাপার নিয়ে। আগামিকাল আমার ছেলের বিয়ে। আপনি আপনার স্টাফসহ সবাই আসবেন। না আসলে কিন্তু মাইন্ড করবো। তাহলে এবার উঠি।এখন অনেক কাজ বাকি।
আরে বসুন বসুন একটু চা খেয়ে যান। বললেন ওসি সাহেব।
না না আরেক দিন। বুঝেন তো অনুষ্ঠানের অনেক ঝামেলা। সময় তেমন নেই। আজকের মতো আসি।
এর কিছুক্ষণ পরই শিপন রা ওসি সাহেবের সাথে দেখা করার জন্য থানায় এলো। কিন্তু গেট সিকিউরিটি ওদের ঢুকতে দিচ্ছে না। ওরা বলছে ওসি সাহেবের সাথে অনেক জরুরী আলাপ আছে।এর পরেও ওরা ঢুকতে পারছে না। লেবু চিৎকার দিয়ে বলছে, কোন যোগ্যতা তো নেই। পারেন শুধু মানুষের রাস্তা আটকাতে। একজন পুলিশ বলে উঠল এই ছেলে মুখ সামলিয়ে কথা বলো। না হয় . . . . . . .
না হয় কি করবেন ? লালা সিকে ঢুকাবেন এইতো। আপনাদের দৌড় ঐ পর্যন্তই। ওসি সাহেব বাহিরের চিল্লাচিল্লি শূনতে পাড়ছিলেন। তাই ওদের ভিতরে নিয়ে আসতে বললেন।
ভিতরে আসার পর ওসি সাহেব বললেন, বাহিরে এত চেঁচামেচি করছিলে কেন?
স্যার আমাদের তো ঢুকতে দিচ্ছে না, বলল হিরা।
তোমরা জানো না অনুমতি ছাড়া ভিতরে ঢুকা নিষেধ।
জানি স্যার। কিন্তু ব্যাপারটা খুব জরুরী।
আচ্ছা জরুরী কথাটা জরুরী ভিত্তিতে বলে তাড়াতাড়ি বিদেয় হও।
বলবো স্যার, তবে এদের যেতে বলুন। শুধু আপনার সাথেই আলোচনা করতে চাই।
কোন সমস্যা নেই। ওদের সামনেই বলতে পারো।
না স্যার। শুধু আপনার সাথে।
ঠিক আছে, আপনারা একটু বাহীরে যান। ওসি সাহেব তার স্টাফদের রুম থেকে বের করে দিলেন। অপমানে একজন পুলিশ শিপনের দিকে চেয়ে চোখ রাঙ্গালো।
শিপন এবার বলা শুরু করল, স্যার চিংড়ি ঘেরে মাছ মারা যাওয়ার কারন কি, এ ব্যাপারে আমরা আপনাকে সাহায্য করতে চাই।
কথাটা যেন ওসি সাহেবের আত্মসম্মানে লাগলো। তারা এক সপ্তাহ চেষ্টা করে কোন কিছু করতে পারলো না। আর এই ছোকরার দল বলছে সাহায্য করবে। ওসি সাহেব এই অপমান সামলাতে পারলননা। তিনি বলে উঠলেন, আমরা কি ঘোড়ার ঘাস কাটার জন্য এখানে বসে আছি।
শিপন বলল, দেখুন স্যার আপনাকে অপমান করার জন্য আমরা কথা গুলো বলছি না। তাই আপনি উত্তেজিত হবেন না। আসলেই আমাদের কাছে এমন কিছু প্রমাণ আছে, যার সাহায্যে ইচ্ছে করলে দু’ঘণ্টার ভিতর অপরাধীদের ধরতে পারবেন। আর এ ব্যাপারে সাকসেস হলে আপনার প্রমোশন ঠেকায় কে?
প্রমোশনের কথা শুনে ওসি সাহেব একটু নড়েচড়ে বসলেন। বললেন, আচ্ছা তোমাদের কাছে কি প্রমাণ আছে। বের করো। এসেছি যখন, তখন বেরতো অবশ্যই করবো। তবে একটা ওয়াদা দিতে হবে আপনাকে। সেটা হলো, আসামি ধরার আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারটা শুধু আপনিই জানবেন। কেননা এখানে ওদের লোক থাকতে পারে, বলল শিপন।
ওসি সাহেব বললেন, আচ্ছা তোমাদের সব কথাই মানলাম। এবার প্রমাণ বের করো।
শিপন ভিডিও ক্যাসেট আর চিঠিটা ওসি সাহেবের হাতে দিলো।
ওসি সাহেব চিঠিটা খুলে পড়ছে। শিপনরা দেখছে তার চোখ কপালে উঠে গেছে। ওসি সাহেব বললেন, তোমরা বসো। আমি পাশের রুম থেকে ক্যাসেটটা একটু দেখে আসি। একটু পর মলিন মুখে ফিরে এসে বললেন, রাজ্জাক সাহেবের মতো লোক এতো বিরাট ষড়যন্ত্র করতে পারে। আচ্ছা তোমরা এটা বুঝলে কিভাবে?
শিপন প্রথম থেকে এ পর্যন্ত সব ঘটনা খুলে বলল। ওসি সাহেব তন্ময় হয়ে শুনলেন একদল ক্ষুদে গোয়েন্দাদের কথা।
শিপন বলল, স্যার ওদের গ্রেফতারের সময় খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমরা দূর থেকে ওদের সবাইকে দেখিয়ে দিব। তাই আগামী কাল দুপুর পৌনে একটার সময় আসছি। কারন ঐ সময় ওদের বরযাত্রী যাত্রা কারবে। আমরা এখন উঠি স্যার, বলল শিপন।
বসো বসো, তোমাদের জন্যে মিষ্টির ব্যাবস্তা করছি।
না স্যার অন্য সময়। এখন বাড়ি যাওয়া একান্ত প্রয়োজন। আম্মা চিন্তা করবে। (আগামী সংখ্যায় সমাপ্ত)
পর্ব- এক http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51164#.U_I7cZR_seg
পর্ব- দুই
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51284#.U_I8x5R_seg
পর্ব- তিন
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51334#.U_I9H5R_seg
পর্ব- চার
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51601#.U_XD6JR_seg
পর্ব- পাঁচ
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51783#.U_XcoJR_seg
পর্ব- ছয়
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51789#.U_8rbJR_seg
পর্ব - সাত
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/52260#.VAN-Utd_uuk
পর্ব- আট
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/52458#.VAW5X5R_seg
বিষয়: সাহিত্য
১৪৪১ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মা-বাবাকে ফাকি দিয়ে এ রকম বেশী সময় গোয়েন্দগিরি করা ঠিক নয়...
অপেক্ষায় রইলাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন