রহস্য উপন্যাস " ফাইল নম্বর টু" পর্ব- ছয়।

লিখেছেন লিখেছেন কালো পাগড়ী ২১ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:১১:৫২ সন্ধ্যা



ছয়।

অমাবস্যার রাত। ঘড়িতে সবে পৌনে ন’টা । এতেই মনে হচ্ছে যেন গভীর রাত হয়ে গেছে। চার দিক যেন অন্ধকারের কাল চাদর দিয়ে ঢাকা। শিপন আগেই পুকুর ঘাটে এসে বসে আছে। সাথে রাজু। যদিও রাজুকে প্রথম থেকে ব্যাপারটা জানানো হয় নি। তার পর ও শিপন ওকে সাথে দিয়েছে। শিপন ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে বারবার। ন’টা বেজে দু’ মিনিট। একটা ছায়ামূর্তি এগিয়ে আসছে ওদের দিকে। চেনার কোন উপায় নেই। অন্য সময় হলে শিপন ও হয়তো ভয় পেয়ে যেতো। ছায়ামূর্তিটি সামনে আসার পর চেনা গেলো। ও হিরা। এর দু’ মিনিট পর লেবু এসেছে। সবাই উপস্থিত। এখন কাজ শুরু করা যায়। সবার মাঝেই একটা গোয়েন্দা গোয়েন্দা ভাব। সিদ্ধান্ত হলো ওরা অফিসের সামনে মাঠের পাশের চায়ের দোকানে বসবে। শিপন যেয়ে পরিস্থিতি দেখে আসবে। চা দোকানদার ওদের খুব পরিচিত। রমজান চাচা। ওরা প্রায় দিন বিকেলে এখানে চা পুড়ী বা সিংগাড়া খেতে আসে।

লেবু হিরা রাজু চায়ের দোকানে সুবিধা মতো একটা বেঞ্চিতে বসলো। যাতে অফিসের সব কিছু এখান থেকেই ফলো করা যায়। শিপন আগেই চলে গেছে। জায়গাটা খুব অন্ধকার। অফিসের সামনে একটি মাত্র বাতি জ্বলছে। লাটমিয়া টুলে বসা। এতো রাতে অফিসে আলো দেখে অবাক হলো শিপন। মনে হয় কোন মিটিং হচ্ছে। শিপন আস্তে আস্তে অগ্রসর হচ্ছে মাঠের মাঝখান দিয়ে। কি যেন একটু চিন্তা করে দিক পরিবর্তন করলো ও। সোজা না গিয়ে মাঠের পশ্চিম পাশ দিয়ে গাছের আড়ালে আস্তে আস্তে এগিয়ে চলছে। আর দশগজ পরেই অফিস। লাট মিয়াঁর চোখ দুটো তিন ব্যাটারি লাইটের মতো এদিক-ওদিক ঘুরছে। তার চোখ ফাঁকি দিয়েই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে শিপন। এর মধ্যে একটি ইটের সাথে ওর পা হোঁচট খেল। আর একটু হলে বুড়ো আঙুলের নখটাই উঠে যেতো। পা ধরে বসে পরে শিপন। প্রচণ্ড ব্যাথে পেয়েছে ও । কিন্তু শব্দ করতে পারছে না। একটু বসে থেকে আবার হাঁটতে শুরু করল শিপন। অফিসের উত্তর দিকের জানালার পাঁশে দাঁড়ালো ও। ভেতরে কথা শোনা যাচ্ছে। মনে হয় তিনজন হবে। জানালার দু’ পাঁশের ফাঁকা দিয়ে সামান্য আলো দেখা যায়। শিপন ঐ ফাঁকা দিয়ে এক চোখ বন্ধ করে ভিতরে তাকায়। লোক তিনজনই। একজন আবার মহিলা। মহিলাকে দেখে অবাক হলো শিপন। উনি এখনে এতো রাতে কি করছেন ? উনি তো শিপনদের পরিচিত। ইনি গ্রামে গ্রামে নারী অধিকার, নারী স্বাধীনতা সম্পর্কে মহিলাদের বোঝান। গত সপ্তাহে শিপনদের বাড়িতেও গিয়েছিলেন। কয়েক দিন আগে মহিলাদের একটি মিছিল হয়েছিল। ব্যানারে লিখাছিল “ স্বনির্ভর পরিবার- মোদের সবার অধিকার” শিপন দেখেছে এ মহিলা মিছিলের অগ্রভাগে। গদি আটা চেয়ারে বসা যে লোকটি, সে মনে হয় এদের প্রধান। কিন্তু ইনিতো ঐ দিন গফুর সাহেবের ঘের দেখতে গিয়েছিলেন। এবং দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। যোগ-বিয়োগ করে কিছুই মিলাতে পারছেনা শিপন। এদিকে কয়েক ডজন মশা তার পায়ে শুল ঢুকিয়েছে। মশাগুলোকে মারাও যাচ্ছেনা। মারতে গেলে শব্দ হবে।ফলে ওরা টের পেয়ে যেতে পারে।

আপনি তাহলে আসুন জাফর সাহেব। অফিস প্রধান লোকটি তার পাশে বসা লোকটিকে বলল। জাফর সাহেব হ্যান্ডসেক করে চলে গেলেন। মহিলাটি এখন বসে আছে। অফিসার গোছের লোকটি বলল। মিস্‌ অরুণা, তাহলে আমাদের মিশন সফল। প্রথম ডোজেই পাখি ঠিক মতো কাজ করেছে, কি বলেন।

জি স্যার, অরুণা জবাব দিল।

অফিসার আবার বলল, মিস্‌ অরুণা । আপনার কর্ম দক্ষতায় আমি খুশি। শীঘ্রিই আপনার প্রোমোশনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে আজ সামান্য উপহার আপনার জন্যে। এ ইনভেলাপটা নিন। এতে সামান্য কিছু টাকা আছে। আর হ্যাঁ, পরশুদিনতো আমার ছেলের বিয়ে। তাতো জানেন। এজন্যে আমি বসের সাথে আলাপ করেছি। তাই আগামী দু’দিন অফিস বন্ধ থাকবে। বিয়ের দিন আপনার সাথে আবার দেখা হচ্ছে। এবার যেতে পারেন।

লাট মিয়াঁ এদিকে এসো।

দারোয়ান এসে বলল জি স্যার।

হ্যাঁ শোন, অফিসের ডিউটিতে তুমি আর একটু সতর্ক হবে। আগামী দুই দিন অফিস বন্ধ থাকবে। আর শোন পরশুদিন তো আমার ছেলের বিয়ে। ঐ দিন সকাল দশটায় তুমি আমাদের বাড়ি চলে এসো। যাওয়ার সময় তালা ভালোভাবে লাগিয়ে দিও। আমি চললাম।

অফিস থেকে বের হয়ে তিনি সোজা চলে যাচ্ছেন। চা দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হিরাও তাকে চিনতে পারলো। এর নাম আব্দুর রাজ্জাক। ঐ দিন হিরা তাকে কাঁঠালিয়ায় দেখেছে। ওরা চা দোকান থেকে বেরিয়ে এলো। ইতো মধ্যে শিপনও এসে পৌঁছল। শিপন ওদের বলল চল, রুমে চল। জরুরী আলাপ আছে।

পর্ব- এক http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51164#.U_I7cZR_seg

পর্ব- দুই

http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51284#.U_I8x5R_seg

পর্ব- তিন

http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51334#.U_I9H5R_seg

পর্ব- চার

http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51601#.U_XD6JR_seg

পর্ব- পাঁচ

http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9722/alam14/51783#.U_XcoJR_seg

বিষয়: বিবিধ

১৬৬২ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

256811
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৭
আহ জীবন লিখেছেন : বাহ ভালইত লিখতে পারেন। আগ্রহ জাগছে ক্রমশ।
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫১
200457
কালো পাগড়ী লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের আগ্রহ আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
256821
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৪
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : গোয়েন্দাগিরি করতে গেলে খুব সন্দেহপ্রবন হতে হয়।
এখানে একদিকে সন্দেহের তীর.....
আশাকরি সনেদহের তীর এর দিক পড়ে বাড়বে।
তবে আগাচ্ছে সহজ ভাবে।
তবে আশা করি জটিল সমাধান বের করবেন।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
200458
কালো পাগড়ী লিখেছেন : ভাল থাকুন, সাথে থাকুন।
256828
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৪
মাহফুজ আহমেদ লিখেছেন : কি হতে যাচ্ছে জানতে খুবই আগ্রহ জাগছে
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৪
200459
কালো পাগড়ী লিখেছেন : একটু অপেক্ষা করুন জনাব। ভাল থাকবেন।
256855
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:০৯
একপশলা বৃষ্টি লিখেছেন : গল্পটা ছোট নাকি? এত তাড়াতাড়ি গ্যাং চিহ্নিত হয়ে গেল!
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:০২
200544
কালো পাগড়ী লিখেছেন : @একপশলা বৃষ্টি। ধন্যবাদ। সাথে থাকুন।
256879
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১৭
মামুন লিখেছেন : কৌতূহল জাগাতে পারাটাই লেখকের সার্থকতা। ধন্যবাদ আপনাকে, আপনি এটি ভালোই পেরেছেন। সামনের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:০৪
200545
কালো পাগড়ী লিখেছেন : আপনার আশা জাগানিয়া মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
256904
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৩২
মামুন লিখেছেন : ওয়েলকাম... ধন্যবাদ এবং ভালো থাকবেন।
২৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:০৩
201107
কালো পাগড়ী লিখেছেন : আবারো আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
257278
২৩ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:০০
কাঠ পেন্সিল লিখেছেন : তিন গোয়েন্দা এবং মাসুদ রানা সিরিজের এক সময় অন্ধ ভক্ত ছিলাম।যার দরুন আপনার এই ধারাবাহিক উপন্যাসটা আমার কাছে খুব সহজ সাবলীল লাগতেছে।

তবে এটা বলতে দ্বীধা নেই যে ধীরে ধীরে আপনার এই উপন্যাস টা পড়তে অধীর আগ্রহ হচ্ছে।আশা করি খুব দ্রুত এটা সম্পন্ন করবেন।

আপনি এখন পর্যন্ত থ্রিলারটাকে যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন তাতে আমার মনে হচ্ছে রকিব হাসান ও কাজী আনোয়ার হোসেন কাতারে আপনাকে ও পাব!

আপনার লেখা চালিয়ে যান,
পাঠক হিসেবে আমরা আপনার সাথে আছি।

খুব ভালো লেগেছে…

ধন্যবাদ আপনাকে…
২৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১৭
201112
কালো পাগড়ী লিখেছেন : @কাঠ পেন্সিল। আপনার মতো এ রকম মন্তব্য শুনতে কার না ভালো লাগে। একটা সময় আমিও আপনার মতো অন্ধ ভক্ত ছিলাম গোয়েন্দা সাহিত্যে। কিন্তু জীবন যুদ্ধের বাস্তবতার কাছে অনেকের মতো আমাকেও যে হার মানতে হচ্ছে। তার পরেও দোয়া করেন যেন চালিয়ে যেতে পারি। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
257577
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:৪২
কালো পাগড়ী লিখেছেন : গত তিন দিন ধরে প্রচণ্ড জ্বরে শয্যাশায়ী। কিছু করতে পারছিনা। ফাইল নম্বর টু উপন্যাস টির পরবর্তী পর্ব গুলো টাইপ করতে ও পাচ্ছিনা। সবাই দোয়া করবেন।
260281
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
আবু নাইম লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ সাথে আছি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File