বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বিকৃতি ও ইসলামের ইতিহাস বিকৃতিএকই সূত্রে গাঁথা
লিখেছেন লিখেছেন পাতা বাহার ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:১৮:২৬ সন্ধ্যা
আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে মহাম্মদের হাত ধরে আরব ইসলামের ছায়াতলে স্থান পায়। সে সময় আরবের সকলেই মহাম্মদের নির্দেশে ইসলাম গ্রহন করে। কেন না, সে সময় আরব ছিল এক অন্ধকার রাজ্য। চুরি, ডাকাতি, ছিনতায়, খুন ও ধর্ষণ ছিল তখনকার নিত্ত নৈমিত্তিক ব্যপার। তখন আরবের মাত্র ১০ শতাংশ হিংস্র মানুষের থাবায়, সমগ্র আরব বিশ্ব ছিল এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে। আর ঠিক সেই সময় মহাম্মদ আরবের হিংস্র জানোয়ার গুলিকে পরাস্ত করে, আরবকে এক শান্তির রাজ্যে পরিণত করেন। সে সময় আরবের ৯০ ভাগ মানুষ মহাম্মদের প্রতি আস্থা রেখে, মহাম্মদকে নেতা হিসাবে মেনে নেয়। আর মহাম্মদের হাত ধরেই আরবের সকলেই ইসলাম বা শান্তির ধর্মের দীক্ষা নেয়।
পরাজিত হওয়ার পরেও সেই হায়েনা হিংস্র ১০% মানুষ তাদের দূরভিসন্ধি বন্ধ করে নাই। সেই ১৪০০ বছর পূর্বেই, ইসলামের চির শত্রু উমাইয়া বংশ কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে, ও উমাইয়া বংশের অর্থের বিনিময়ে, এক শ্রেণীর লোভী সাহাবা কর্তৃক বিষাক্রান্ত হয়ে শেষ নবি মহাম্মদ মৃত্যু বরণ করেন। আর সেই, ১৪০০ বছর পূর্বে মহাম্মদ মৃত্যুর পর হতে, আজ পর্যন্ত আরব ইসলামে শত্রু সেই উমাইয়া বংশের কর্তৃত্বেই চলে আসছে। অার মহাম্মদের সাহাবা নামধারী সেই নির্বোধ লোভী ক্ষমতা লোভীরা, ইসলামের শত্রু কর্তৃক প্ররোচিত হযে, ইসলাম বিরোধীদের বুদ্ধিতে, মহাম্মদের চরিত্রে কালিমা লেপন করতে বহু গ্রন্থ রচনা করে। সে সকল গ্রন্থে মহাম্মদকে চরিত্রহীন, খুনি ও লুটেরা ডাকাত রুপে উপস্থাপন করা হয়। আর এর সবই করে এক শ্রেণীর সাহাবা। তবে সে সকল সাহাবারা ছিল নামধারী, তারা শুধুই ক্ষমতার লোভেই মহাম্মদের সাহাবা হয়েছিল।
এখন সেই লোভী সাহাবা গোষ্ঠি চাই, পৃথিবী থেকে মহাম্মদের নাম নিশানা মূছে দিতে। তারা চাই ইসলামের জন্য নিবেদিতপ্রাণ সাহাবাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে। তাই তারা আলি সহ বহু সাহাবার মাজার ধংস করে দিয়েছে। এখন তারা বারো ইমামের নাম মুছে দিতে চাই, চাই মহাম্মদের মাজার নিশ্চিহ্ন করে দিতে। অথচ এরা নাকি নবির উম্মত রাসুলের সাহাবা।
আসলে আমার আজকের এই লেখাটি মহাম্মদের মাজার ভাঙ্গা বিষয়ের নয়, আমার আজকের লেখাটি ইতিহাস বিকৃতির মূল কোথায়, তা উপস্থাপন করা। কারণ- বর্তমানে যারা ইসলামের ধারক বাহক রুপে অবস্থান করছে, তারা ইসলামের শত্রু, এবং তারা মুসলিম সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার লক্ষ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আর তারাই রাসুল মারা যাওয়ার পরে, কোরাণের মতবাদের বাইরে তাদের নিজস্ব মতবাদ হাদিস রচনা করে, মহাম্মদের বাণী বলে প্রচার করেছে, ও নিজেদের বাণী সমুহকে মহাম্মদের বাণী হিসাবে মানতে বাধ্য করেছে। সেই সাথে তারা মহাম্মদের চরিত্র হননকারী বহু গ্রন্থ রচনা করে।
আজ যাদেরকে আমরা ইসলামের ধারক বাহক বলছি, তারা ইসলামের ইতিহাসের সত্যতা প্রমাণের জন্য, ইহুদিদের চর ইবনে কাথির, ও খৃষ্টান পন্থি হিট্টির স্মরণাপন্ন হয়। ইসলামের ইতিহাসবীদদের কত অবনতি হলে, তারা ইসলামের ইতিহাসের সত্যতা প্রমাণের সাক্ষী হিসাবে, খৃষ্টান হিট্টিকে প্রাধান্য দিতে পারে, তা কি অনুধাবন করতে পারেন? আর সেই হিট্টি ও ইবনে কাথিরের লেখা তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রমাণিত হয় যে- মহাম্মদ একজন খুনি, ধর্ষক, প্রতারক, লুটেরা ও ডাকাত ছিলেন।
যেখানে মাত্র দশ বছর বয়সে মহাম্মদকে তার সততার কারণে সারা আরব বিশ্ব আলামিন নামে ভূষীত করেন। সেখানে মহাম্মদ মারা যাওয়ার পরে, কোন এক হিট্টি ও কাথিরের লেখা ইতিহাসের আলোকে, মহাম্মদের চরিত্রহীনতার সার্টিফিকেট নিতে হয়। আর তার পরেও তারা নিজেকে মুসলিম বলে দাবি করে। মূলতঃ যারা ছয় হাদিস মান্য করে, ইবনে কাথির ও হিট্টির ইতিহাসের আলোকে মহাম্মদ ও ইসলামকে পরিমাপ করে, তারা কোন অবস্থাতেই মুসলিম নয়। তারা সকলেই ইসলামের শত্রু। সাধারণ মুসলিমদের উচিৎ ইবনে কাথির ও হিট্টির গ্রন্থসহ, কোরাণের বাইরে সকল হাদিস পরিহার করা।
তবে, আমার আজকের লেখাটি ইসলাম বা ইসলাম বিরোধীদের নিয়ে নয়। এটা শুধু আমার আজকের আলোচিত মূল বিষয়ের প্রমাণের সহায়ক হবে, তাই উপরিউক্ত বিষয় আলোচনা করা। আমার আজকের মূল আলোচ্য বিষয় হলো, বর্তমান সময়ের ইতিহাস বিকৃতকারীদের নিয়ে।
সম্মানিত পাঠক-
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে মাত্র ৪৩ বছর পূর্বে। স্বাধীনতার সময়ের সকল বিষয় দেখা লোক বর্তামানে অনেক রয়েছেন। তাই স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জীবিত ছিলাম, তারা তখন অনেক কিছুই দেখেছি। আমরা দেখেছি ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা, আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধুর নামে বাঙ্গালী কেমন পাগল ছিলেন। অামরা দেখেছি বাংলার ৯৭% জনতা বঙ্গবন্ধুর পক্ষ অবলম্বনকারী ছিল। আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধুর আহবান ছাড়া এই দেশ কোন মতেই স্বাধীন হওয়া সম্ভব ছিল না। এটা আমাদের নিজের চোখে দেখা।
এই স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে, আমাদের সেই চোখে দেখা বিষয়গুলিকে, বাংলার স্বাধীনতার শত্রুদের প্ররোচনায়, বাংলাদেশের স্বধীনতার বিপক্ষ শক্তির অর্থায়নে, এই বাংলাদেশেরই কিছু লোভী মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের লোক নতুন করে ইতিহাস রচনা করেছেন। যেমন টি করা হয়েছিল আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে, ইসলাম বিরোধীদের অর্থায়নে, ও ইসলাম বিরোধীদের পরামর্শে, কিছু লোভী সাহাবা মহাম্মদের চরিত্রে কালিমা লেপন কল্পে ইতিহাস রচনা করেছিল। ঠিক তেমনি ভাবেই, বর্তমানে এ কে খন্দকার ও তাজ উদ্দিনের মেয়ে, স্বাধীনতা বিরোধীদের প্ররোচনায়, ও তাদের অর্থায়নে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে কালিমা লেপন কল্পে মিথ্যা ইতিহাস রচনা করেছে। স্বাধীনতার মাত্র ৪৩ বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বিষয়ে তারা যে ইতিহাস রচনা করেছে, অবশ্যয়ই সে ইতিহাস দেশ স্বাধীনের পরে যারা জন্ম গ্রহন করেছে, যারা স্বাদীনতার যুদ্ধ দেখে নাই, তাদের অনেককেই বিভ্রান্ত করবে। যেমন বিভ্রান্ত করে চলেছে সেই ১৪০০ বছর পূর্বে রচিত মহাম্মদের চরিত্রে কালিমা লেপনকারী ইতিহাস গুলি সাধারণ মুসলমানদেরকে।
আমরা নিজের কানে শুনেছি যে, ৭ই মার্চ রেসকোর্স মায়দানে বঙ্গবন্ধু এক প্রকার স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েই দিয়েছিলেন, এবং বলেছিলেন জয় বাংলা। আর আজ কোন এক এ কে খন্দকার এসে বললো যে, বঙ্গবন্ধু জয় বাংলা নয়, জয় পাকিস্তান বলেছিল। আবার আমরা শুনেছি, রেডিওতে জিয়া বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষনা, বঙ্গবন্ধুর হয়ে প্রচার করেছেন। এখন কোন এক মেয়ে, যার বাবা তাজ উদ্দিন তাঁর জীবদ্দশায় কোন দিনই যে কথা বলতে পারে নাই। আজ তারই মেয়ে তার বাবা মায়ের অবর্তমানে, বললেন যে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চান নি, বা স্বাধীনতার ঘোষনা করেন নি।
উভয় ঘটনাকে মিলাতে গিয়ে একটা কথাই বার বার মনে পড়ে যায়, যে- মহাম্মদ মারা যাওয়ার পরে তখন যেমন কিছু লোভী সাহাবা, ইসলাম বিরোধীদের প্ররোচনায় ও ইসলাম বিরোধীদের অর্থায়নে, মহাম্মদের চরিত্র হননের ইতিহাস লিখেছিল, ঠিক তেমনি, আজ যারা স্বাধীনতার সত্য ইতিহাস বিকৃত করে, বিকৃত ইতিহাস রচনা করছে, তারাও কিন্তু লোভী সাহাবাদের মতই, লোভী মুক্তিযোদ্ধা। আর লোভী সাহাবারা যেমন ইসলাম বিরোধীদের প্ররোচনায় ও ইসলাম বিরোধীদের অর্থায়নে ইতিহাস বিকৃতি করেছিল, এখন ঠিক সে ভাবেই কিছু লোভী মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতা বিরোধীদের অর্থায়নে, ও স্বাধীনতা বিরোধীদের প্ররচনায়, মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা করছে। বাঙ্গালী জাতির উচিৎ হবে, এখনই এই সকল ইতিহাস বিকৃতকারীদের বিচারের সম্মূখীন করে সাজা দিয়ে দেওয়া, ও তাদের রচিত বই বাজেয়াফত করা।
পরিশেষে- যারা বুদ্ধিমান তারা একটু মাথা খাটিয়ে, মিলিযে নিন যে, স্বাধীনতার ৪৩ বছরের মাথায়, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার সময়ে জীবিত থাকা লোকের উপস্থিতিতেই, এবং যেখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায়, সেখানেই স্বাধীনতা বিরোধীরা মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করছে। আর আমরা তা বসে বসে দেখছি। আর মহাম্মদ মারা যাওয়ার পর থেকে এই ১৪০০ বছরে ইসলামের পক্ষের শক্তি, বা মহাম্মদের পক্ষের শক্তি, কোন দিনই আরবের ক্ষমতায় যেতে পারে নাই। তাহলে বুঝুন, ইসলাম বিরোধীরা ক্ষমতায় থেকে কিভাবে ইসলামের ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। আর আমরা সেই বিকৃত ইতিহাসকেই সত্য ভেবে পালন করে আসছি।
এই লেখাটি লিখেছেন গুরুজী। গুরুজীর মূল পোষ্টটি পড়তেএখানে ক্লিক করুন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৮ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর যারা ইসলামের নামে মানুষ হত্যা করে, তারাও কোন অবস্থাতেই মুসলমান নয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন