লালন ফকির গাঁজা সেবনকারী ও বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থের নীতিটোকাই ছিলেন। লালন পর্ব-২
লিখেছেন লিখেছেন পাতা বাহার ২১ আগস্ট, ২০১৪, ১১:৪০:৪৯ সকাল
লালন ঘরাণার লোকেদের বিশ্বাস, লালন- বেদ, বাইবেল, ত্রি-পীটক বা পূর্ব থেকে চলে আসা সম্প্রদায় সমুহের ধর্ম গন্থের আইনের বাইরে, নতুন ধর্মীয় নীতিমালা দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তাদের ধারণাটি সঠিক নয়। সঠিক বিষয় হলো- লালন মূলতঃ সকল ধর্ম গ্রন্থে কি বলেছে, সে বিষয়গুলিকে সে সকল ধর্মীয় গ্রন্থের ভাষা বাদ দিয়ে, নিজের তৈরী কিছু সাংকেতিক শব্দের সমন্বয়ে সৃষ্ট ভাষাতে প্রচার করেছেন।
তার মানে- লালন যাহা বলেছেন, তার সকল কথাই আমরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মগ্রন্থ খুঁজলেই পাবো। লালন তার নামের শেষে যে ফকির শব্দটি যোগ করেছেন, এটা কিন্তু লালনের সৃষ্ট কোন শব্দ নয়। এই ফকির শব্দটি হলো আরবী শব্দ, প্রচলিত কোরাণে ব্যবহৃত শব্দ। প্রচলিত কোরাণের মধ্যে লিখিত ছিল যে- আল ফকরু ফাকরে ওয়াল ফাকরু মিন্নি।। মূলতঃ এটা প্রচলিত কোরাণের একটি আয়াত। যাহা মহাম্মদ রচনা করে গেছেন সেই ১৪০০ বছর আগেই। কিন্তু বর্তমানে যাহারা কোরাণের আয়াত কমিয়ে চলেছেন, তারা কোরাণ থেকে এই আয়াতটিও বাদ দিয়েছেন। এই আয়াতটির বাংলা অর্থ- আমা হতেই ফকির, আর সকল কিছুই ফকিরের ফকির। আর মহাম্মদের এই সূত্র ধরেই লালন বলেছেন আমি ফকির। অর্থাৎ লালন ফকির। তবে মহাম্মদ হতেই ফকির, কিন্তু লালন হতেই ফকির নয়। লালন মহাম্মদ হতে ফকিরের অংশ মাত্র।
লালন সকল সম্প্রদায় ও সকল ধর্মের আইনের বা নীতির টোকাই ছিলেন মাত্র। মানে- লালন সকল সম্প্রদায় ও সকল মূল ধর্ম প্রবর্তকদের গবেষণা টুকিয়ে বা কুড়িয়ে উপস্থাপন করেছেন মাত্র। তার সকল কথা ই এ ধর্ম ও ধর্ম বা এ সম্প্রদায় ও সম্প্রাদায় হতে হাওলাত করা বা ঋণ করা। তার একটি কথাও নিজের গবেষণা লদ্ধ বিষয় নয়। লালন যে সকল সাম্যের বাণী প্রচার করেছে, তা তার নিজের বাণী নয়, এটা কোরাণের বাণী, মহাম্মদের গবেষণার ফসল।
মহাম্মদ যখন মক্কা থেকে মদীনায হিজরত করেন, সে সময তার সাথে যে সকল মুহাজের ছিল, মহাম্মদের আইন বাস্তবায়ন হেতু মদীনার আনসারেরা তাদের সম্পদ মুহাজেরদের মাঝে সমান ভাবে ভাগ করে দেয়। তার মানে আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বেই মহাম্মদ সকলের সম অধিকার প্রতিষ্ঠার সূচনা করেছিলেন। আর সে কথাটিই লালন ২০০ বছর পূর্বে এসে পূণঃ উপস্থাপন করেছেন মাত্র।
লালন ছিলেন তোতা পাখির মত। মানে তোতা পাখিকে আপনি যাহা শিখাবেন তাহাই বলবে। যেমন- আসসালাসু আলাইকুম, আম্মু কুটুম এসেছে, সবাই বসেন, ইত্যাদি ইত্যাদি, সকল কথাই তোতা বলতে পারে। কিন্তু যখন বিড়াল তাকে আক্রমণ করে, তখন আর তার এই শেখানো বুলি মনে থাকে না। তখন সে শুরু করে দেয় তার মাতৃ বুলি কিচির মিচির। তাই লালন যতই ধর্ম গ্রন্থ থেকে শেখা বুলি প্রচার করুক না কেন, সে তার নিজ বুলি বা কর্ম গাঁজা খাওয়া ছাড়তে পারে নাই।অথচ লালন কোথাও বলে যায় নি যে- তোমরা গাঁজা খাও।
তার অর্থ দাঁড়ালো লালন যাহা করেছে, মানে গাঁজা খেয়েছে, সেটা কাউকেই করতে বা খাইতে বলেন নাই। আবার তোতা পাখির মত বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের যে সকল কথা তিনি বলেছেন, তার একটি ও তিনি পালন করেন নাই। তার মানে লালন যাহা বলেছেন তাহা করেন নাই, এবং যাহা করেছেন তাহা বলেন নাই।
প্রচলিত কোরাণসহ সকল সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গ্রন্থে যে সকল নীতিমালা উপস্থাপিত হয়েছে, একমাত্র সে নীতিমালা বাস্তবায়নই পারে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু যারা সাম্যে বিশ্বাসী নয়, যারা সব সময় সকলের থেকে বেশি ভোগ করতে চাই। একমাত্র তারাই ধর্মীয় গ্রন্থের আইন যেন বাস্তবায়ন না হয, সে উদ্দেশ্যেই ধর্মগ্রন্থের আইন বাদ দিয়ে, লালনের লেখা নিয়ে তোলপাড় করে চলেছে, এবং সে লেখা সমুহকে উত্তম বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভুলেও তারা বলছেন না যে- লালনের আস্তানায় ও লালন পন্থিরা আনাচে কানাচে যে গাঁজা সেবন করে, এটা ঠিক নয়। এটা বন্ধ করা হউক।
না! তারা তা বলবে না। কারণ তারা নিশ্চিৎ ভাবেই জানে যে- লালনের এত ভক্ত হওয়ার মূল কারণই হলো এই গাঁজা, কোন ধর্মীয় আইন নয়। তাই গাঁজা সেবন নিষিদ্ধের কথা বললেই লালনের ভক্ত সমুহ ছুটে যাবে। তাই অসাম্যে বিশ্বাসীরা লালনের মত নষ্টাদের কথা প্রচার প্রচারণা চালাবে, কিন্তু গাঁজা সেবন বন্ধের কথা বলবে না। আর তারা কোন অবস্থাতেই বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার মূল নিয়ামক ধর্ম গ্রন্থের আইন প্রচার বা বাস্তবায়ন করবে না
এই লেখাটি আমার নয়। এই লেখাটি লিখেছেন গুরুজী। আমি তার অনুমতি সাপেক্ষে, এখানে পোষ্ট করলাম। মূল লেখাটি পড়তে, এখানে ক্লিক করুন।
বিষয়: বিবিধ
১২০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন